"মাতারবাড়িতে ভিড়ল শততম জাহাজ | সময় সংবাদ"
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রায় দুই বছর আগে ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো শুরু হয়। পরে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই সেখানে নতুন আরেকটি জেটি চালু হলে বাড়তে থাকে জাহাজ ভেড়ানোর সংখ্যা। দুই জেটিতে একে একে ভিড়ে ৯৯টি জাহাজ।
বুধবার ‘এমভি হোসি ফরচুন’ নামে একটি জাহাজ
ভেড়ানোর মধ্য দিয়ে শততম জাহাজ ভিড়েছে ‘দ্য নেক্সট পাওয়ার অ্যান্ড পোর্ট হাব’ খ্যাত মাতারবাড়িতে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।
সূত্র জানায়, এমভি হোসি ফরচুন জাহাজটি বহির্নোঙর থেকে চালিয়ে মাতারবাড়ি অয়েল জেটিতে নিয়ে আসেন বন্দরের অভিজ্ঞ পাইলট মো. নূর আলম সিদ্দিকী। বিকেল পৌনে ৫টা থেকে ৫টার মধ্যে জাহাজটির বার্থিং সম্পন্ন হয়। এ কাজে সহায়তা করে বন্দরের শক্তিশালী টাগ ‘কান্ডারি ১০’।
মাতারবাড়িতে শততম জাহাজ ভেড়ার আগ পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের রাজস্ব আয় দুই কোটি টাকার বেশি। বর্তমানে মাতারবাড়িতে দুটি স্থায়ী জেটি রয়েছে। এসব মূলত কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে। আগামী বছর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে দুই জেটিতে কয়লাবোঝাই জাহাজ ভিড়তে শুরু করবে। এতে রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে বলে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নির্দেশনায় দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের এ অনন্য কাজটি শুরু হয়েছে। ২০২৫ সালে নির্মাণকাজ শেষ হলে এ জেটিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজটি পণ্য নিয়ে ভিড়তে পারবে। মাতারবাড়ি হয়ে উঠবে আশপাশের দেশগুলোর পণ্য পরিবহন হাব।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন অনেক বেশি ত্বরান্বিত হবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, আশপাশের দেশগুলো এটিকে ট্রান্সশিপমেন্ট হাব হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
মাতারবাড়িতে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ করছে জাপানি উন্নয়ন সংস্থা জাইকা। মূলত বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লার জাহাজ ভেড়ানোর পরিকল্পনা করতে গিয়ে বাণিজ্যিক বন্দর নির্মাণের বিষয়টি উঠে আসে। পরে জাইকা সম্ভাব্যতা যাচাই করে।
জাইকার প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে ১৬ মিটার গভীর ও আড়াইশ মিটার দীর্ঘ জাহাজ মোট আট হাজার একক কনটেইনার পণ্য নিয়ে ভিড়তে পারবে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ আড়াই হাজার একক কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারে। ফলে মাতারবাড়িতে চট্টগ্রাম বন্দরের আড়াই থেকে তিনগুণ বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে।