আজ হেরেছে বাংলাদেশ, জিতেছেও বাংলাদেশ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, জুলাই ০২, ২০২৩

আজ হেরেছে বাংলাদেশ, জিতেছেও বাংলাদেশ

 

আজ হেরেছে বাংলাদেশ, জিতেছেও বাংলাদেশ
আজ হেরেছে বাংলাদেশ, জিতেছেও বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক:

ব্যাঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজালেন রেফারি। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে বসে পড়লেন বিশ্বনাথ ঘোষ। গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোর চোখেও দেখা গেলো অশ্রু। বাংলাদেশ দলের সব ফুটবলারদেরই মুখ মলিন। ম্যাচ হারলে কে-ই বা হাসবে? কিন্তু হারলেও যে এদিন অন্যভাবে ঠিকই জিতেছে লাল সবুজরা।


ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে কুয়েত। একবার বিশ্বকাপ খেলা দলটির বর্তমান অবস্থা অতীতের মতো মসৃণ না হলেও ফেলে দেওয়ার মতো নয়। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই জামালদের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিল তারা। ম্যাচে পরিষ্কার ফেভারিট ছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।


খেলা শুরুর আগে ঠিক কতজন সমর্থক নিশ্চিত ছিলেন বাংলাদেশ ম্যাচটি জিতবে? বাস্তবতা বিচারে সংখ্যাটি শতকরা এক ভাগের কম হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বরং কয় গোল হজম করে হারবে সেই হিসাবই কষছিলেন সবাই। শক্তিমত্তার বিচারে এটাই ছিল স্বাভাবিক।


অথচ খেলা শুরু হতেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। দুই মিনিটের মাথায় শেখ মোরসালিন ওয়ান অন ওয়ানের সহজতম সুযোগটি মিস না করলে হয়তো এই গল্পটাই লেখা হতো অন্যভাবে। কিন্তু সেবার বল জালে জড়াতে পারেননি ১৭ বছরের মিডফিল্ডার। এই মিসের আক্ষেপটা সহজে ভুলতে পারবেন কি তিনি?


এরপর ম্যাচে একেরপর এক আক্রমণ করেছে দুই দল। বাংলাদেশের আক্রমণের পরিসমাপ্তি ঘটেছে ইশ, আরেকটু, যদি, কিন্তু দিয়ে। কখনো রাকিবের শট গোলপোস্টে লেগে ফিরেছে। কখনো দুর্বল শটে লাল সবুজদের হতাশা বাড়িয়েছেন দলের অন্যরা। আফসোস করতে হয়েছে একটু পরপরই।


তবে মুদ্রার অন্যপিঠে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার সুযোগও করে দিয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে মধ্যমাঠ মোটামুটি ভালো করলেও রক্ষণভাগ ছিল দারুণ। বিশেষ করে বিশ্বজিৎ আর ইসা ফয়সাল যেভাবে দুই উইং থেকে কুয়েতের একেরপর এক আক্রমণ সামলেছেন, তাদের প্রশংসা না করলেই পাপ হবে।


একদিকে গোল মিসের আক্ষেপ, অন্যদিকে রক্ষণ দুর্গে বারবার সফলতা। এমন এক ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা পারফর্মারের নামটা নিজের করে নিয়েছেন আনিসুর রহমান জিকো। কেন তাকে দেশসেরা গোলরক্ষক বলা হয়, প্রমাণটি আজকের ম্যাচে খুব ভালোভাবেই দিয়েছেন তিনি।


জটলার মধ্য থেকে আচমকা শট, লং শট, কর্নার, ওয়ান ভার্সেস ওয়ান কোনভাবে কুয়েতের আক্রমণ প্রতিহত করেননি জিকো? তার বুদ্ধিদীপ্ত ও দুর্দান্ত গোলকিপিংয়ের ফলশ্রুতিতেই তো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচে টিকে ছিল বাংলাদেশ!


কুয়েতের মতো দলকে ৯০ মিনিট আটকে রাখা নিঃসন্দেহে বড় অর্জন। ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়ালে ভয় ছিল একটাই, ফিটনেস ধরে রেখে সবাই ঠিকমতো দৌড়াতে পারবেন তো? অবশ্য বাংলাদেশের ফুটবলাররা যে ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন সেটি বোঝা যাচ্ছিল মাঠেই।


তবুও লড়েছে বাংলাদেশ। যেখানে লাল সবুজদের ফাইনালের স্বপ্ন চূর্ণ করে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধেরও অতিরিক্ত সময়ে গোলের দেখা পায় কুয়েত। চার্জ না করে তপুর দূরে থাকা এই গোলের কারণ কি না সে আলোচনা করা যেতেই পারে। তবে এই গোলটাই দলকে ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে।


বাকিটা সময় ম্যাচে ফিরতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। বেশ কিছু আক্রমণে গোলের সুযোগও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মূল যে প্রয়োজন, সেই গোলটাই শুধু হয়নি। তাই সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে রাকিব-বিশ্বনাথ-জামালদের।


ম্যাচ হারলেও দারুণ খেলা ও হার না মানার মানসিকতায় ঠিকই দর্শক ও সমর্থকদের হৃদয় জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। শক্তিমত্তায় বেশ এগিয়ে থাকা কুয়েতের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে ফুটবলাররা যেভাবে লড়াই করেছেন, তা যেন আগামীর সুন্দর ভবিষ্যতের বার্তাই দিয়েছে।


আর এ জন্যই সাফ থেকে বিদায়ের আক্ষেপ থাকলেও নিজেদের খেলা দিয়ে সবার মন জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। ঠিকমতো সাপোর্ট ও সুবিধা পেলে এ দল যে আরো বহুদূর যেতে পারবে সে বিষয়ে কারো শঙ্কা থাকার কথা নয়। তাই সুন্দর এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতেই পারেন দেশের ফুটবলভক্তরা।


আর ফুটবলারদের বলা যেতেই পারে, হারলেও ঠিকই হৃদয় জিতে নিয়েছো তোমরা। ভালোবাসি তোমাদের, ভালোবাসি বাংলাদেশকে। 



সময় সংবাদ/খেলা

Post Top Ad

Responsive Ads Here