যৌন নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১

যৌন নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

 
যৌন নির্যাতনে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা


কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীর বনগ্রাম এলাকায় যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।


গত ২৫ ডিসেম্বর ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ করেন তার মা। এ ঘটনায় ২৭ ডিসেম্বর কটিয়াদী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন তিনি।


মামলার আসামিদের কেউই এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়নি। পরিবারের অভিযোগ, আসামিদের এলাকায় দেখা গেলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে স্কুলছাত্রীর সহপাঠীসহ স্থানীয়রা।

মারা যাওয়া ছাত্রীর মা সময় সংবাদ কে জানান, অষ্টম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় তার মেয়ে। এবার নবম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তার। গত শনিবার দুপুরে ভর্তির ফরম আনতে স্কুলে যায় সে। এ সময় স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে তাকে ধরে সীমানাপ্রাচীরের আড়ালে নিয়ে যায় তিন যুবক।

তার ভাষ্য, সেখানে তার মেয়েকে যৌন নির্যাতন করে বনগ্রাম এলাকার আকাশ, আরমান ও নন্দীপুর গ্রামের ইমন। একপর্যায়ে আকাশ ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ দৃশ্য নিজেদের মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করতে থাকে আরমান ও ইমন।

ওই সময় স্কুলছাত্রীর চিৎকারে ধর্ষণে ব্যর্থ হয় তারা। পরে এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় তিনজন।

ছাত্রীর মা আরও জানান, তার মেয়ে ফোনে বিষয়টি তাকে জানালে স্কুলে গিয়ে তিনি দেখেন, সে কাঁদছে। বিষয়টি স্কুলের শিক্ষকসহ স্থানীয়দের জানিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসেন তিনি।


ওই নারী জানান, বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কিছু বর্ণনা দিয়ে বাকিটুকু আর বলতে পারবে না বলে কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে যায় তার মেয়ে। পরে তিনি রান্নার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে তার মা (ছাত্রীর নানি) কক্ষের দরজা বন্ধ পেয়ে ওপর দিয়ে ছিটকিনি খোলেন। তিনি দেখেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে নাতনির মরদেহ।


নানির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে তাদের সহযোগিতায় স্কুলছাত্রীকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়।


এ ঘটনায় আকাশকে প্রধান আসামি করে তিনজনের নামে মামলা করেন ছাত্রীর মা। মামলার অপর দুই আসামি আরমান ও ইমন।


মামলার বিষয়ে ছাত্রীর মা জানান, আকাশ আরও আগে থেকেই স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় তার মেয়েকে আপত্তিকর প্রস্তাব দিত। ঘটনার দিন তাদের এই আচরণ সহ্য করতে না পেরে এবং এ বিষয়ে কারও বিচার না পেয়ে লজ্জায় মেয়েটি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।


তিনি আরও জানান, ঘটনার পরের দিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ছিল। সবাই নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় কারও কাছে গিয়ে বিচারও পাননি। তিনি বলেন, ‘আসামিদের অনেক টাকা। তারা অনেক প্রভাবশালী। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। ওই ছাত্রীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ বি এম নুরুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটি খুবই মেধাবী ছিল। তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে দ্বিতীয় সংসার নিয়ে থাকেন। আর এই মেয়েটি মায়ের সঙ্গে তার নানার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করত। সে তার মায়ের একমাত্র সন্তান। মেয়েটির এই অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়েছে বখাটেরা। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’


কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনায় মেয়েটির মা তিনজনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’







Post Top Ad

Responsive Ads Here