বন্যা পরিস্থিতি- ঘারিন্দা ইউনিয়ের রানা গাছার এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে
ডেস্ক নিউজ
টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়ের ৮ নং ওয়ার্ডের রানা গাছার এলাকায় ঝিনাই নদীতে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে শহর রক্ষা বাধ, কবরস্থান, রাস্তাঘাট ও বসতি ভিটা। যেকোন সময় রক্ষা বাধা ভেঙ্গে শহরে পানি প্রবেশ করতে পারে। এলাকাবাসীর অভিযোগ শুকনো মৌসুমে বাংলা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় বন্যার সময় ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়। বাংলা ড্রেজারের বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ জেলা প্রশাসনকেও একাদিকবার অভিযোগ করলে তারা বিষয়টি কোন আমলে নেননি। যার ফলে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে রামাগাছা এলাকায় বসবাসকারীদের। ইতিমধ্যে রামা গাছা এলাকার পুরাতন কবরস্থানটি ভেঙ্গে বিলিন হলেও কয়েকদিনের মধ্যে নতুন কবরস্থান ভাঙ্গতে পারে এমনটা মনে করছেন এলাকাবাসী। কয়েকটি বসতি ভিটাও হুমকির মধ্যে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন রামাগাছা এলাকাবাসী।
১০ জুলাই মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের রামাগাছা এলাকার রাস্তাটি (শহর রক্ষা বাধ) আংশিক ভেঙ্গে গিয়ে হুমকির মুখে রয়েছে। তুলা মিয়া ও শাহাদৎ হোসেনের ভিটা বাড়ীর আংশিক ভেঙ্গে নদীতে বিলীন হয়েছে। বাঁশঝারগুলো ভেঙে নদীতে পড়ে আছে। পুরাতন কবরস্থানটি ভেঙ্গে গিয়েছে। যেকোন সময় নতুন কবরস্থানটিও ভাঙ্গতে পারে।
রামা গাছা এলাকার মো. মোলায়েম তালুকদার বলেন, আমাদের এলাকার রাস্তাটি টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। রাস্তাটির আংশিক ভেঙ্গে পড়েছে। বাকি অংশতেও ফাঁটল ধরেছে। যে কোন সময় রাস্তাটি ভাঙ্গতে পারে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার পুরাতন কবরস্থানটিও ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যে কোন সময় নতুন কবরস্থানটিও ভাঙ্গতে পাড়ে।
মো. বাদল মিয়া বলেন, আমার বাবা দুই বছর আগে মারা গিয়েছেন। নদী ভাঙ্গনের ফলে কবরস্থানও ভাঙ্গতে থাকে। বাবাকে দাফন করার সাত মাস পড়ে কবর থেকে তাকে উঠিয়ে রাস্তার পাশে এনে তার লাশ পুনরায় দাফন করা হয়েছে। এই নদী ভাঙ্গন রোধে আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
মো. রানা মিয়া বলেন, শুকনো মৌসুমে নদী থেকে বাংলা ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের ফলে প্রতিবছরই আমাদের ফসলি জমিসহ ভিটেবাড়ী বিলীন হয়ে যায় নদীতে। বাংলা ড্রেজারের বিষয়টি প্রশাসণকে একাধিকবার জানালেও তারা কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মো. তুলা মিয়া বলেন, আমার ১৮০ শতাংশ পৈত্রিক সম্পত্তি ছিলো। নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে আমার এখন এই ২০ শতাংশ বাড়ি ছাড়া সব সম্পত্তি নদীতে বিলীন হয়েছে। আমার বাড়ির আংশিক ভিটা নদীতে ভেঙে পড়েছে। আমি পরিবারের সকল সদস্য নিয়ে হুমকির মুখে জীবন যাপন করছি। যেকোন সময় আমার বাড়ীটাও নদীতে বিলীন হতে পারে।
মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, আমাদের সমাজের পুরাতন ১৮ শতাংশের কবরস্থানটি ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে। যেকোন সময় নতুন কবরস্থানটিও পারে। এই শহর রক্ষা বাধটি ভেঙ্গে গেলে কয়েক ঘন্টার মধ্যে শহরে পানি প্রবেশ করবে। ফসলি জমিসহ বসতি ভিটাও প্লাবিত হবে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিনাত জাহান বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষটি আরও ভালভাবে অবগত হয়ে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবো।