সোমেন মন্ডল, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
জাতি ধর্ম,বর্ন নির্বিশেষ এ সকল বাংঙ্গালীরা আজ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ
করছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ৪৩
বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর বিপথগামী একদল ঘাতকের হাতে তার নৃশংস হত্যাকাণ্ড
ছিল জাতির ইতিহাসে এক বড় কলংক। শোকাবহ দিবসটিকে শ্রদ্ধাভারে পালন করছে পুরো জাতি।
সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীতেও পালিত হচ্ছে জাতীয় শোক দিবস। মোড়ে
মোড়ে ধ্বনিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ। বঙ্গবন্ধুর সে ভাষণ
বাঙ্গালি জাতিকে পুন:জ্জীবীত করতে মাইকে প্রতিধ্বনিত করা হচ্ছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে
সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনসমূহে
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতভাবে উত্তোলন করা হয়।
সকাল সাড়ে আটটায় রাজশাহী জেলা জজশীপ, এ্যাডভোকেট বার এসোসিয়েশন
ও সরকারী কৌশুলীবৃন্দের আয়োজনে একটি শোক র্যালী
বের করা হয়।র্যালীটি রাজশাহী জেলা জজ কোর্ট প্রাঙ্গন
প্রদক্ষিণ করে। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে নয়টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিউ ডিগ্রি কলেজ
প্র্রাঙ্গন হতে শোক র্যালি বের করা
হয়। র্যালীটি শিল্পকলা একাডেমীতে প্রাঙ্গনে
গিয়ে শেষ হয়। সকালে শিল্পকলা একাডেমি, শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন
ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে
পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে হিফজ প্রতিযোগিতা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন,
দরগা এস্টেট ও হেতেমখাঁ বড় মসজিদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জীবন
ও কর্মের উপর আলোচনা সভা, হামদ-নাত পরিবেশন, মিলাদ মাহফিল, তবারক বিতরণ ও বিশেষ মোনাজাত
ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০টায় রাজশাহী সিটি করপোরেশন চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
পুস্পস্তবক অর্পন, ওয়ানস্টপ বুথ বঙ্গবন্ধুর ৪৩তম শাহাদত বার্ষিকীতে জাতীয় শোক দিবস-২০১৮
উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একই সময়ে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে একটি শোক র্যালী
বের করা হয়।র্যালীটি নগরীর কুমারপাড়া সংলগ্ন
মহানগর আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ
করে আবার সেখানে এসে শেষ হয়। পরে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল ১০ টায় ছাত্র শিক্ষক সমন্বয়ে বিশাল শোক র্যালী বের করে রাজশাহী কলেজ প্রশাসন। র্যালীটি কলেজ প্রাঙ্গন থেকে বের
হয়ে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ অডিটোরিয়ামে গিয়ে শেষ হয় ।
পরে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিকে সুর্যোদয়ের সাথে সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন,
আবাসিক হল, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, সাধারণ কর্মচারী সমিতি,
মুক্তিযোদ্ধ সংসদ, রাবি স্কুল এন্ড কলেজ, শেখ রাসেল মডেল স্কুল ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ
ভবনে অর্ধনমিত জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। প্রশাসনের উদ্যোগে কালোব্যাজ
ধারণ, শোক র্যালী ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে
পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল সাড়ে ৮ টায় বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল চত্বরে শিক্ষা ও গবেষণা
ইন্সটিটিউটরে আয়োজনে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতা
অনুষ্ঠিত হয়।
এদিন বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের
আয়োজনে রক্তদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এছাড়া রাজশাহীর বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, গীর্জা
ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, শিশু সদন, সেফহোম এবং শিশু বিকাশ কেন্দ্রসমূহে বিশেষ দোয়া মাহফিলের
আয়োজন ও উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় ও শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে বঙ্গবন্ধুর
জীবনীর উপর প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হবে। রাজশাহী বেতার বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার
এবং স্থানীয় সংবাদপত্রসমূহে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে।