খাবারের মানে সিরিয়ার চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯

খাবারের মানে সিরিয়ার চেয়েও পিছিয়ে বাংলাদেশ

সময় সংবাদ ডেস্ক//
খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণগত মানের দিকে থেকে বাংলাদেশের অবস্থান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ারও পিছনে। এমন কি প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে দুর্বল। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি ইনডেক্স এমন তথ্য প্রকাশ করে।

গত ১৮ ডিসেম্বর, বুধবার সংস্থাটি বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সূচকটি প্রকাশ করে। এমন খবর প্রকাশ করেছে বাংলা ট্রিবিউন।

সূচকে দেয়া তথ্য মতে, ১১৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৩। প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা (৬৬), ভারত (৭২), মিয়ানমার (৭৭), পাকিস্তান (৭৮) ও নেপালের (৭৯) চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশে। সুদান, নাইজার ও জাম্বিয়ার অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো।

মানুষের ক্রয়ক্ষমতা, পর্যাপ্ততা, গুণগত মানসহ নিরাপদ খাদ্য এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ও সক্ষমতা— এ চারটি বিষয়  বিবেচনায় নিয়ে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র গুণগত মানসহ নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশ সিরিয়ার চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। সূচকে সিরিয়ার অবস্থান ১০৭ হলেও গুণগত মানসহ নিরাপদ খাদ্যে তাদের স্কোর ৪৬.৪, সেখানে বাংলাদেশের ৩০.৬।

এ বিষয়ে খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান যে আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও সরকারের নীতি, সেগুলো বিবেচনা করলে আমাদের অবস্থান এতো খারাপ হওয়ার কথা নয়। যারা রিপোর্ট করেছে তারা আমাদের সঙ্গে কথা বলে করেনি। ক্রয়ক্ষমতা ও পর্যাপ্ততার বিষয়ে আমরা অনেকের থেকে ভালো।’

দেশে পর্যাপ্ত খাদ্যের মজুদ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে এবং যাদের ক্রয়ক্ষমতা কম তাদের সরকার সহায়তা দিয়ে থাকে।’ ওপেন মার্কেট সেলস’র মাধ্যমে কম দামে ও ভারনারেবল গ্রুপ ফিডিং’র মাধ্যমে বিনা পয়সায় স্বল্প আয়ের মানুষদের সরকার খাদ্যপণ্য দেয় বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দুস্থ মানুষের সংখ্যা ১১.৩ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১০.৫ শতাংশে। মোট জনসংখ্যা হিসাব করলে এর আনুমানিক পরিমাণ দাঁড়ায় ১.৭ কোটি মানুষ। এর বিপরীতে সরকার ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা মূল্যের চাল দিয়ে থাকে।’ প্রতিটি পরিবারের সদস্যসংখ্যা যদি ৪ জন করে হয় তাহলে সরকারের সহায়তায় প্রায় ২ কোটি মানুষ উপকৃত হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

খাদ্যের গুণগত মানের বিষয়ে খাদ্য সচিব বলেন, ‘আমাদের মূল খাদ্য অর্থাৎ চাল ও গমের গুণগত মান নিয়ে কোনো সমস্যা নেই।’ তবে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সময়ে এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে স্বীকার করেন তিনি।

শাহাবুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, ‘মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মূল খাদ্যে কোনো ঘাটতি নেই। তবে প্রক্রিয়াজাতকরণে আমাদের কিছু সমস্যা আছে।’

ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা করতে চায়, রাতারাতি বড়লোক হতে চায় এবং নীতি অনেক সময়ে মানতে চায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়সহ নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর থেকে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও দবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ড. নাজমা শাহীন বলেন, ‘খাদ্যের গুণগত মান এখন আমাদের জন্য অনেক বড় সমস্যা। আমরা খাদ্যের মানের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে আছি।’

খাদ্যের পর্যাপ্ততার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েকটি খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা পেয়েছি। কিন্তু প্রচুর খাদ্য আমরা আমদানি করে থাকি।’



পেঁয়াজ সংকটের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘খাদ্যের পর্যাপ্ততার অনেক ক্ষেত্রেই আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছি।’

পর্যাপ্ততা ও ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে উল্লেখ করে নাজমা শাহীন বলেন, ‘তারপরও মোট জনগোষ্ঠীর কত অংশ সঠিক খাবার পাচ্ছে, সেটি জানা দরকার।’

তিনি আরো বলেন, ‘কৃষি উৎপাদন করার সময়ে অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ও অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করার কারণে অনেক সময়ে খাদ্যের মান কমে যায়। এছাড়া পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কারণেও খাদ্যের মান নিম্নগামী। আর খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয় না।’ এ বিষয়ে আইন থাকলেও তার যথেষ্ট প্রয়োগ হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Post Top Ad

Responsive Ads Here