ফরিদপুর শহরের জনবহুল এলাকায় করোনা কর্নার কতটুকু যৌক্তিক? শহরজুরে ক্ষোভ ও আতংক - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৪, ২০২০

ফরিদপুর শহরের জনবহুল এলাকায় করোনা কর্নার কতটুকু যৌক্তিক? শহরজুরে ক্ষোভ ও আতংক

ফরিদপুর প্রতিনিধি : 
ফরিদপুর শহরের প্রধান কেন্দ্রবৃন্দ এলাকায় অবস্থিত ফরিদপুর জেনারলে হাসপাতালে করোনা কর্নার কতটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী ও অনেকে। একই সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের চাপিয়ে দেয়া এমন হটকারী সিদ্ধান্ত দ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগ প্রত্যাহার করবে এমন আশা সকলের। এদিকে এই করোনা কর্নার জেনারেল হাসপাতালে করা হলে আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন স্থানীয়রা।  


সোমবার এই ঘোষনা আশার সাথে সাথে শহরবাসীর মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ ও আতংক বিরাজ করছে। অনেকে মঙ্গলবার বিষয়টি জানার সাথে সাথে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসব বিক্ষোভ থেকে স্বাস্থ্য বিভাগের এমন হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুত সড়ে আশার আহবান জানান। 


জানাগেছে শহরের এমন জনবহুল এলাকায় করোনার রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ায় আশপাশের ঘনবসতিপূর্ন এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। পাশাপাশি এ হাসপাতালটিতে নেই কোন যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। ফলে করোনায় আক্রান্ত রোগীরা এখান থেকে তেমন কোন চিকিৎসা সেবা পাবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শহরবাসীর মনে প্রশ্ন উঠেছে, আধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে গড়া উঠা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিকে কেন বেছে নেওয়া হলোনা। সেখানে যন্ত্রপাতিসহ লোকবল সবই রয়েছে।


আরো জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ক্লিনিক ও হাসপাতাল ) আমিনুল হাসান ও ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক শেখ হাসান ইমামের মৌখিক নির্দেশে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। যেখানে শুধুমাত্র বেড ছাড়া অন্য কোন সুবিধা নেই। সোজা কথায় বলতে গেলে এখানে গোটা কয়েক পুরাতন বিল্ডিং ছাড়া কিছু নেই।
 

নাজিম নামে একজন জানান, রোগীদের পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের জন আইসিইউ প্রস্তুত করা হয়েছে। এই হাসপাতালে সব প্রযুক্তি রয়েছে একই সাদের নিচে। তাহলে করোনা রোগীদের জন্য এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়কে কেন তিনটি পৃথক স্থানে পরীক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে রোগীদের চিকিৎসা ও চিকিৎসা সেবায় ভোগান্তি বাড়বে বলে আমার মনে হয়। 
 

জাকির নামে একজন বলেন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটি সাড়ে ৭শ বেডে রুপান্তরিত। সেখানে আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা এবং লোকবল রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসকদের থাকার জন্য পর্যাপ্ত রুম রয়েছে। কিন্তু জেনারেল হাসপাতালে এর কোনটিই নেই। শহরের গুরুত্বপূর্ন ও জনবহুল এলাকায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেবার ফলে রোগটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে তিনি জানান। 


এদিকে শহরের অনেকেই বলছেন, এ জেনারলে হাসপাতালটি সংলগ্ন জেলখানা, পৌরসভা, সরকারী বালিকা বিদ্যালয়, প্রেসক্লাব, মার্কেট, বিভিন্নজন গুরুত্বপূর্ন অফিস রয়েছে। তাছাড়া হাসপাতালটির পাশে বড় একটি বস্তি রয়েছে। যেখানে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করে। এছাড়া হাসপাতালটির আশপাশে আবাসিক এলাকা। এ হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা এবং তাদের যাতায়াতের ফলে রোগটি শহরবাসীর মাঝে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়তে পারে। জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেবার ঘোষনায় আমরা আতংকের মধ্যে রয়েছি। 


ফরিদপুরের সচেতন মহল মনে করে, আধুনিক সুবিধা ও পর্যাপ্ত জায়গা থাকার পরও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালটিকে বাদ দিয়ে কেন জনবহুল এলাকায় অবস্থিত জেনারেল হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হলো। তারা এই বিষয়টিকে একটি ষড়যন্ত্র হিসাবে দেখছেন।


নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, জেনারেল হাসপাতালে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা নেই। নেই প্রয়োজনীয় লোকবল। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রায় ৬০ জনের একটি টিম প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছে। যারা হাসপাতালে থেকেই রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবেন। এই হাসপাতালে এত জনবল নেই। তাছাড়া চিকিৎসক ও তাদের সহযোগীদের থাকার জন্য রুম নেই। নেই আধুনিক কোন যন্ত্রপাতি। ফলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে আমরা চিন্তিত রয়েছি।


ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সিদ্দিকুর রহমান জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মৌখিক নির্দেশে আমরা করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালটিকে প্রস্তুত করেছি। তবে এ হাসপাতালে জনবল ও আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় চিকিৎসা সেবা কতটা দিতে পারবো তা বলতে পারছিনা। 

শহরের বিশিষ্টজনেরা অতিদ্রুত স্বাস্থ্য বিভাগের এমন হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আশার আহবান জানিয়েছেন। একই সাথে পৃথকভাবে পৃথকস্থানে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা না রেখে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগিদের একই এলাকার একই স্থানে চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা রাখার কথা বলেছেন।  

 

Post Top Ad

Responsive Ads Here