লাশ মাটিচাপা দিয়ে সেখানে মুরগির খামার করল খুনি - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, আগস্ট ১৬, ২০২০

লাশ মাটিচাপা দিয়ে সেখানে মুরগির খামার করল খুনি

সময় সংবাদ ডেস্ক//
এর চেয়ে নারকীয় হত্যাকাণ্ড আর কি হতে পারে! খুনি শুধু খুন করেই ক্ষান্ত হয়নি। লাশ টুকরো টুকরো করে মাটিচাপা দিয়েছে। আবার সেই মাটিচাপা স্থানে করেছে মুরগির খামার।

পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পথের কাঁটা সরাতে প্রথমে গৃহবধূর স্বামীকে খুন। পরে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত ও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হতে খুনের শিকার ব্যক্তির কবরের ওপর করা হয় মুরগির খামার। 

রোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুরে। শনিবার এলাকাবাসী হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে দিলে সে ঘটনার কথা স্বীকার করে। রাতেই মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউপির ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত উত্তর সলিমপুর গ্রামের লাল মিয়া কলোনিতে দীর্ঘদিন পাশাপাশি বসবাস করতেন হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাট থানার পাইকপাড়ার মো. রমজান আলীর ছেলে রুমেন মিয়া ও সীতাকুণ্ডের কেশবপুরের নুরুল হকের ছেলে মো. নুর উদ্দিন।

গত ১৩ আগস্ট হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান নুর উদ্দিন। এরপর থেকে তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ প্রতিবেশীরা সম্ভাব্য সব স্থানে তাকে খুঁজেও সন্ধান পাননি। এরই মধ্যে বাড়ির পাশে একটি জমিতে মাটি ফেলে মুরগির খামার তৈরি করে রুমেন মিয়া। নুর উদ্দিন নিখোঁজের পর থেকে রুমেনের আচরণে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করেন অন্যান্য বাসিন্দারা। 

একপর্যায়ে ১৫ আগস্ট সন্ধ্যার পর তারা রুমেন মিয়াকে চ্যালেঞ্জ করলে সে নুর উদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এতে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা পুলিশকে খবর দিয়ে রুমেনকে থানায় সোপর্দ করেন। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে হত্যাকারী রুমেনকে নিয়ে সীতাকুণ্ড সার্কেলের অ্যাডিশনাল এসপি শম্পা রানী সাহা, থানার ওসি মো. ফিরোজ হোসেন মোল্লা, ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক ও সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

পরে রুমেনের দেখিয়ে দেয়া স্থানে মাটি খুঁড়ে নুর উদ্দিনের টুকরো টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়। 

সলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন আজিজ জানান, ১৩ আগস্ট রুমেন মিয়া তার প্রতিবেশি নুর উদ্দিনকে কেটে কয়েক টুকরো করে লাশ মাটি চাপা দিয়ে দেয়। এরপর লাশের ‌ওপর মুরগির খামার তৈরি করে সে মুরগি পালন শুরু করে।

এর মধ্যে নুর উদ্দিন নিখোঁজ হওয়ায় তাকে খোঁজাখুঁজি করার একপর্যায়ে শনিবার রুমেনের আচরণ সন্দেহজনক মনে করে এলাকাবাসী রুমেনকে আটক করে গণধোলাই দিলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আমরা পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করেছি। রাতে অ্যাডিশনাল এসপিসহ থানার পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু করেন।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নুর উদ্দিনকে হত্যার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী রুমেনকে আমাদের কাছে সোপর্দ করে। আমরা তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার করা স্বীকার করে জানায়, নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করত। এসব মারধর দেখে তার ভালো লাগত না তাই সে নুর উদ্দিনকে হত্যা করেছে!

ওসি তদন্ত সুমন বণিক আরো বলেন, নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করলেও প্রতিবেশী রুমেনের কেন ভালো লাগত না তা বোধগম্য নয়। এতে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তবে রুমেন আটকের পর শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হত্যাকারী রুমেনকে সঙ্গে নিয়ে উত্তর সলিমপুর গ্রামে আসেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে রুমেনের দেখিয়ে দেয়া মুরগির খামারের ভেতর থেকে মাটি খুঁড়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।


Post Top Ad

Responsive Ads Here