রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর ১৭০ফুট নিচে, ৪০টি ইউনিয়ন ঝুঁকিতে - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, এপ্রিল ০২, ২০২১

রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর ১৭০ফুট নিচে, ৪০টি ইউনিয়ন ঝুঁকিতে



ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী থেকে


রাজশাহী বিভাগের বরেন্দ্র অঞ্চলে খাবার এবং সেচের জন্য বৃষ্টির প্রার্থনা করছে স্থানীয়রা। চৌত্র মাসের শুরুতেই পানির জন্য হাহাকার করছে রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জয়পুরহাট ও নাটোরের বরেন্দ্রভূমি এলাকার কৃষক ও স্থায়ীবাসিন্দা। এই অঞ্চলে খাবার পানি ও সেচ সংকট নিয়ে হতাশ সবায়।


অনুসন্ধানে দেখাযায়, বিভিন্ন জেলার গ্রামীণ জনপদে সাধারন নলকূপ, টিউবওয়েল গুলোতে পানি উঠছে না। বরেন্দ্রভূমি এলাকার খাল বিল, পুকুর ও জলধার শুকিয়ে গেছে চৌত্রের তিব্র সূর্য্যের তাপে। ওই সকল স্থানীয় মানুষের খাবার পানির একমাত্র উৎস্য সেচকাজে ব্যবহারিত গভীর নলকূপ। বর্তমান ওই নলকূপগুলোতেও চাহিদা অনুযাীয় পানি পাচ্ছে না কৃষকরা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষা ও গবেষণা সূত্রমতে, বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর ক্রমশয় নিচে নামছে। চলমান ভূগর্ভস্থ থেকে পানি উত্তোলনের কারণেই পানিস্তর নিচে নামছে বলে জানিয়েছে ডাসকো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রচন্ড খরা মৌসুমে সেচের জন্য গভীর নলকূপের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণ পানি উত্তোলনের কারণে ওয়াটার রিচার্জ সিস্টেম কাজ করছে না। 


ডাসকোর প্রকল্পের কর্মকর্তা প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলে নলকূপ খনন করেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সরকারকে বিকল্প উৎসের সন্ধান করতে হবে। এবিষয়ে ডাসকো জনস্বাস্থ্য বিভাগে বিকল্প উপায়ে পানি সরবরাহের পরামর্শ দিয়েছেন। যা ২০১৪ সালে গত এক বছরব্যাপী গবেষণার পর সংস্থাটি তাদের সমীক্ষা প্রতিবেদনটি দিয়েছে।


রাজশাহী জনস্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমীক্ষা সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৫ সালে বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্প চালু হওয়ার পর অনেক সংখ্যক গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। পানির স্তর সংকটে রাজশাহী বিভাগের প্রায় ৪০টি ইউনিয়ন সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। রাজশাহীর তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার ৭ করে মোট ১৪টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার ২টি ও নাচোল উপজেলার ৪টি, ভোলাহাটের ১টি, গোমস্তপুর উপজেলার ৫টি, নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর, পোরশা, সাপাহার, মহাদেবপুর উপজেলার ১০টি, নাটোরের ৩টি, জয়পুরহাটের ৪টি ইউনিয়ন রয়েছে। এ ছাড়া অল্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ২৭টি ইউনিয়ন। ওই সকল ইউনিয়ন সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬৫ সেন্টিমিটার উঁচুতে থাকায় পানির স্তর নিচে রয়েছে।


দুই-তিন দশক পূর্বে রাজশাহীসহ শুষ্ক বরেন্দ্রভূমিতে ভূগর্ভের ৬০-৭০ ফিট নিচে পানির স্তর অবস্থান নিশ্চিত করা যেত। এসব নলকূপের সাহায্যে ভূগর্ভস্থ পানি তুলে জমিতে সেচ দেওয়া হয়। তবে গত তিন দশকে সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগেও নীতিমালা অমান্য করে বহু গুনে গভীর ও অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে প্রয়োজনের তুলনায় গভীর নলকূপের ঘনত্ব বৃদ্ধির কারনে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। বর্তমানে বরেন্দ্রভূমির পানি স্তরের ১০০ ফুটের বেশি নিচে নেমেছে। পরিক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে রাজশাহী অঞ্চলে ১৭০ ফুট নিচে পানিস্তরের অবস্থান করছে।  


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত¡ ও গবেষণা বিভাগের অধ্যাপক ড. চৌধুরী সারওয়ার জাহান গনমাধ্যমকে বলেন, একাধিক গবেষণা ও সমীক্ষায় দেখাগেছে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণেই মূলত বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর স্বাভিক অবস্থায় নেই। সরকারের কাছে ভূউপরিস্থ পানির জোগান বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এই পর্যন্ত  বিকল্প কেনা সমাধান দৃশ্যমান হয়নি।





Post Top Ad

Responsive Ads Here