সময় সংবাদ ডেস্কঃ
ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ মোকাবিলায় গোটা বরিশাল বিভাগের সব সাইক্লোন শেল্টারের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সবমিলিয়ে বিভাগে প্রস্তুত রাখা প্রায় ৫ হাজার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিতে পারবেন ২০ লাখের মতো মানুষ এবং কয়েক লাখ গবাদি পশু।
বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সূত্রানুসারে, ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবেলায় সাইক্লোন শেল্টার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ চার হাজার ৯১৫ আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় হাজারের ওপরে এবং ভোলা জেলায় হাজারের ওপরে আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া পটুয়াখালীতে ৯২৫টি, ভোলায় ১১০৯টি, পিরোজপুরে ৭১২টি, বরগুনায় ৬২৯টি, ঝালকাঠীতে ৪৭৪টি এবং বরিশালে ১০৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে জেলা প্রশাসন কার্যালয়গুলো থেকে সব ইউএনওদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রস্তুতি ও নির্দেশনামূলক বেশকিছু সভা অনুষ্ঠিত হয়েছেন। যার মধ্যে সোমবার জুম অ্যাপের মাধ্যমে বিভাগীয় প্রশাসনের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে দুর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন করণীয় বিষয়ক আলোচনা করা হয়েছে।
বরগুনার ডিসি হাবিবুর রহমান বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সম্ভাব্য ঝড়ে আহতদের দ্রুত চিকিৎসা দিতে জেলায় ৬টি মেডিকেল টিম গঠন করার জন্য জেলা সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক জানান, ঘূর্ণিঝড়ে উপদ্রুত মানুষদের সহায়তার জন্য ১ কোটি ৩১ লাখ টাকা এবং ৩৫৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
ভোলার ডিসি মো. তৌফিক ই লাহি চৌধুরী জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তিন লাখ ২৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়ার যাবতীয় প্রস্তুত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ভোলায় গঠন করা হয়েছে ৭৬টি মেডিকেল টিম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ২০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক।
পটুয়াখালীর ডিসি মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী সোমবার বিকেলে জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে ৭ উপজেলা প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সভায় তিনি জানান, জেলায় ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমের জন্য ২ কোটি ৫৪ হাজার টাকা ও প্রয়োজনীয় খাদ্যশষ্য বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। গঠন করা হযেছে ৯৩টি মেডিকেল টিম।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল জানান, ঘূর্ণিঝড় যশ মোকাবিলায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সব ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্রের বরিশালের উপ-পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, তার দফতরের আওতাধীন বিভাগের ৬ জেলায় ৩৩ হাজার ৪০০ স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছেন। ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত ৪ নম্বরে উঠলে স্বেচ্ছাসেবকরা উপকূলের জনপদে মাইকিং করে ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতামূলক প্রচার চালানো শুরু করবেন।
বরিশাল আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. মাসুদ রানা রুবেল জানান, ঘূর্ণিঝড় যশের প্রভাবে বরিশালে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে বজ্রসহ ভারী এবং অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।