স্ত্রী-সন্তান খুনের ঘটনায় সন্দেহের তীর হিফজুরের দিকেই - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Thursday, June 17, 2021

স্ত্রী-সন্তান খুনের ঘটনায় সন্দেহের তীর হিফজুরের দিকেই


 

সময় সংবাদ ডেস্কঃ


সিলেটে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার ঘটনায় ফেঁসে যাচ্ছেন স্বামী হিফজুর রহমান। স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করে নিজের শরীরে আঘাত করে আহত হওয়ার নাটক সাজাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় হিফজুরই রয়েছেন। 

হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হিফজুরের শ্যালিকা, মামা-মামিসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তাই পুলিশের সন্দেহ হিফজুরই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। 


পুলিশ বলছে, সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পুলিশি পাহাড়ায় চিকিৎসাধীন হিফজুরকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করার মত অবস্থা হয়নি। কিছুটা সুস্থ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তখন পুরো ঘটনা জানা যাবে। 


এদিকে ট্রিপল হত্যাকাণ্ডে নিহত আলিমা বেগমের বাবা আইয়ুব আলী বাদি হয়ে বুধবার রাতে অজ্ঞাতনামা আসামী করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। 




গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ জানান, হিফজুরের পরিবারে প্রায় ঝগড়াঝাটি হতো। গত দুই মাসে দুবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। তার শ্যালিকার বিয়েতে যাওয়া না যাওয়া নিয়েও স্ত্রী আলিমা বেগমের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। 


ঘটনার দিন বুধবার ভোরে আত্মীয় ফয়েজ মিয়াকে মোবাইলে কল দিয়ে হিফজুর বলেন, আমি অসুস্থ হাসপাতালে নিতে হবে, টাকা-পয়সা নিয়ে দ্রুত চলে আসেন। এ খবর পেয়ে তিনি (ফয়েজ) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ওই বাড়িতে পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে ডাকাডাকির পরও দরজা না খোলায় প্রতিবেশীদের ডেকে আনেন ফয়েজ। পরে কাঁচাঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে একই বিছানায় চারজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় চারজনকেই মৃত মনে হয়।


ওসি আরো জানায়, স্থানীয়রা ছবি তুলতে গেলে ক্যামেরার ফ্লাশে চোখ খুলে আবারো চোখ বন্ধ করে ফেলেন হিফজুর। তখন তার কাছে গিয়ে দেখেন শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক। তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পুলিশি পাহারায় তার চিকিৎসা চলছে। তবে হিফজুর শরীরে গুরুতর কোনো আঘাত নেই। 


এর আগে বুধবার সকালে গোয়াইনঘাটের ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণপাড়া গ্রামে হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলিমা বেগম, শিশু সন্তান মিজান আহমদ ও মেয়ে তানিসাকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এসময় আহতাবস্থায় হিফজুর রহমানকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। 


এসপি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পরিদর্শন শেষে জানান, প্রাথমিকভাবে পুলিশ দুটি বিষয় নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয় দুটি হলো জমি ও পারিবারিক কলহ। তবে ঘটনাস্থলের আলামত, হিফজুরের শরীরের আঘাত এবং ফোনকলের বিষয়গুলো দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে পারিবারিক কলহের কারণেই হিফজুর স্ত্রী-সন্তানদের বঁটি দিয়ে কুপিয়ে ও গলাকেটে খুন করেন। এর পর নিজের শরীরে কিছু আঘাত করে মৃতের মতো পড়ে থাকার ভান ধরেন।

No comments: