শক্তিশালী বাঁধ চায় তিস্তা পাড়ের মানুষ | সময় সংবাদ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, জুন ২১, ২০২২

শক্তিশালী বাঁধ চায় তিস্তা পাড়ের মানুষ | সময় সংবাদ

 

"শক্তিশালী বাঁধ চায় তিস্তা পাড়ের মানুষ | সময় সংবাদ"

আব্দুর রশিদ শাহ্, নীলফামারী


তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তলিয়ে গেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন। ভেঙে গেছে স্বপন বাঁধের একটি অংশ। পানি বন্দি কয়েক’শ পরিবার আশ্রয় নিয়েছে যৌথ বাঁধে। নষ্ট হয়েছে কৃষকদের কষ্টে বোনা বাদাম, ভূট্টা, বীজতলাসহ নানান জাতের কৃষি ফসল। এমতাবস্তায় তিস্তার পানি রোধে ত্রাণ নয় শক্তিশালী বাঁধ চায় চরাঞ্চলের মানুষ। 


কখনো বিপদসীমার ওপরে আবার কখনো বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই। এভাবেই প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি। টানা বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নসহ চরাঞ্চলের হাজার হাজার পরিবার। 

 

তলিয়ে গেছে বাদাম, ভূট্টা,বীজতলাসহ নানান জাতের ফসলি জমি। অনেকেই বাড়ি ঘর ফেলে মাথা গোঁজার ঠাই নিয়েছে যৌথ বাঁধে। হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল গুলোকেও ভেলায় করে সরিয়ে আনা হচ্ছে বাঁধে। এমতাবস্তায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটে পড়েছে বন্যার্তরা। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বাঁধের পশ্চিম পার্শ্বের আরো প্রায় ১০ হাজার মানুষ। শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণের দাবি তাদের।


জিরো পয়েন্ট এলাকার চাঁন মিয়া বলেন, যখন পানি দরকার হয়, তখন ভারত পানি দেয় না। আর যখন পানি দরকার হয় না, তখন পানি দেয়। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতে বাঁধ গুলো ভেঙে যায়। ফলে চরাঞ্চলে বন্যা সৃষ্টি হয়। এ বছরও ব্যতিক্রম ঘটেনি। হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এ অঞ্চলের প্রায় ৫’শ পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু কিছু মানুষ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে খাবার সংকটে পড়েছে। তবে এ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জিরো পয়েন্ট থেকে গ্রোয়িং পর্যন্ত একটা বেরিবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। কিন্তু বন্যা ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাউকে দেখা যায় না।

 

বাঁধে আশ্রয় নেয়া শেফালী আক্তার বলেন, আমাদের যা কিছু ছিল সব তলিয়ে গেছে। এখন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের পক্ষ থেকে বাঁধে থাকার জন্য তাবু দেয়া হয়েছে। সেখানে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। কিন্তু খাবারের অনেক সংকট। বাচ্চাদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে আছি।  


গ্রোয়িং বাঁধ এলাকার লিটন হোসেন বলেন, গত বছর বন্যায় স্পার বাঁধ ভেঙে গিয়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এবারো স্বপন বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গেছে। অনেক ফসলি জমিসহ হাজার হাজার মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেকে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে যদি সরকার জিরো পয়েন্ট থেকে গ্রোয়িং পর্যন্ত শক্তিশালী বেরিবাঁধ নির্মাণ করতো, তাহলে এই অঞ্চলের মানুষ বন্যার হাত থেকে স্থায়ী সমাধান পেত।


পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ খান বলেন, প্রতি বছর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় অতিষ্ঠ জনজীবন। নষ্ট হয়ে যায় হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। এ অঞ্চলের মানুষের জানমাল রক্ষার্থে যদি জিরো পয়েন্ট থেকে স্পার বাঁধ পর্যন্ত  ১ কিলোমিটার বেরিবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এ অঞ্চলের মানুষ বন্যা মোকাবিলায় স্থায়ী সমাধান পাবে। 


ইউএনও বেলায়েত হোসেন বলেন, গত ১৬ জুন উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে স্বপন বাঁধের একটি অংশ ভেঙে গিয়ে সেখানে দেড়’শ পরিবার পানিবন্দি হয়। আমরা সেখানে খাবার চালসহ শুকনা খাবার পৌঁছে দিয়েছি। সবাই বাঁধের ওপর আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সবার জন্য তাবুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উঠার নামার মধ্যে আছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক। এরই মধ্যে আমাদের ১ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও ২ মেট্রিকটন চাল রয়েছে। আরো বাজেটের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি খাদ্যে ঘাটতি হবে না। তবে কিছু কিছু বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা সংস্কারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। যদি এরমধ্যে পানি বৃদ্ধি না হয়। তাহলে কয়েকদিনের মধ্যে বাঁধ গুলো সংস্কার করতে সক্ষম হবে।





Post Top Ad

Responsive Ads Here