লক্ষ্মীপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত | সময় সংবাদ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

সোমবার, ডিসেম্বর ০৫, ২০২২

লক্ষ্মীপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত | সময় সংবাদ

 

লক্ষ্মীপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত | সময় সংবাদ
লক্ষ্মীপুরে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত | সময় সংবাদ

সোহেল হোসেন,লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

লক্ষ্মীপুর জেলাতে হানাদার মুক্ত দিবস আজ ৪ ডিসেম্বর (রোববার)। এর মধ্যে পূর্ণ হয়েছে হানাদার মুক্তের ৫১ বছর। 


১৯৭১ইং সালের এই দিনে জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা সর্বাত্মক আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন। এর মাধ্যমে পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আল বদরদের হত্যা, লুট, আর নির্যাতনের হাত থেকে লক্ষ্মীপুরবাসী মুক্তি পায়।


এর আগে স্বাধীনতা যুদ্ধের পুরো সময়জুড়ে লক্ষ্মীপুর জেলা ছিল পাকবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষত-বিক্ষত।


বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরকে হানাদার মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধারা নয় মাস জেলার বিভিন্নস্থানে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে ১৯টি সম্মুখ যুদ্ধসহ ২৯টি দুঃসাহসিক অভিযান চালায়। এতে শহীদ হন ১১৪ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মুক্তিকামী বাঙালি। পাকবাহিনীকে প্রতিরোধ করতে সর্বপ্রথম মুক্তিযোদ্ধারা জেলা শহরের মাদাম ব্রিজটি উড়িয়ে দেয়। আজও এর স্মৃতি হিসেবে ব্রিজের লোহার পিলারগুলো দাঁড়িয়ে আছে।


যুদ্ধের দিনগুলোতে পাকবাহিনী ও তার দোসররা লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন স্থানে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে। হানাদার বাহিনী শহরের বাগবাড়ীতে ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিকামী হাজার হাজার নর-নারীকে ধরে এনে টর্চার সেলে নির্যাতন চালাতো। এছাড়া যুবতীদের পাশবিক নির্যাতন শেষে হত্যা করে বাগবাড়ীর গণকবর ও মাদাম ব্রিজ এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গর্তে পুঁতে ফেলত। আবার অনেককেই খরস্রোতা রহমতখালী নদীতে ফেলে দিতো। নারকীয় এসব হত্যাযজ্ঞের নিরব সাক্ষী হয়ে আছে শহরের বাগবাড়ীর গণকবর, মাদাম ব্রিজ, পিয়ারাপুর ব্রিজ ও মজুপুরের কয়েকটি হিন্দু এবং মুসলমান বাড়ি।


মাহবুবুর রহমান, হুমায়ুন কবির তোফায়েল, বশির আহমেদ চৌধুরী ও শামসুল ইসলাম চৌধুরীসহ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৭১ সালের ২১মে ভোরে লক্ষ্মীপুর শহরের উত্তর ও দক্ষিণ মজুপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় পাকবাহিনী। বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে বহু মানুষকে গুলি ও বেওনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে তারা। এতে প্রায় ৪০ জন নিরস্ত্র মুক্তিকামী বাঙালি শহীদ হন।


একাত্তরের ১ ডিসেম্বর থেকে, প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল হায়দার চৌধুরী এবং সুবেদার আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে সাঁড়াশি আক্রমণ চালান মুক্তিযোদ্ধারা। অবশেষে ৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা। এদিন পাকিস্তানিরা আত্মসমর্পণ করলেও লক্ষ্মীপুরের রাজাকার কমান্ডার আবদুল হাইয়ের নেতৃত্বে রাতে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। তখন মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ মারা যান। আহত হন আরও তিনজন।


জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সূত্র জানায়, দিবসটি উপলক্ষে প্রতিবছর শহীদদের কবর জিয়ারত ও মোনাজাত, র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এবারও করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে গণসমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।


Post Top Ad

Responsive Ads Here