রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ায় ১৫০০ বছর ধরে বেঁচে আছে যে গাছ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বুধবার, আগস্ট ০৯, ২০২৩

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ায় ১৫০০ বছর ধরে বেঁচে আছে যে গাছ

রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ায় ১৫০০ বছর ধরে বেঁচে আছে যে গাছ
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর দোয়ায় ১৫০০ বছর ধরে বেঁচে আছে যে গাছ


সময় সংবাদ ডেস্ক:

সেই সময়ের কোনো মানুষ এখন আর বেঁচে নেই। তবে এই আকাশ, এই বাতাস, এই মাটি এখনো টিকে আছে সঙ্গে বহাল তবিয়তে দাঁড়িয়ে আছে একটি গাছ, যার নাম ‘সাহাবি গাছ’।


ছবিতে যে গাছটি দেখা যাচ্ছে তা কোনো সাধারণ গাছ নয়। এই গাছটি এখন থেকে প্রায় ১৫০০ বছর আগের ঐতিহাসিক সাহাবি গাছ! ৫৮২ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ব নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ১২ বছর। তখন তিনি তার চাচা আবু তালিবের সঙ্গে বাণিজ্য করতে মক্কা থেকে শাম দেশ বর্তমান সিরিয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করেন। যাত্রাপথে তারা সিরিয়ার অদূরে জর্ডান এসে উপস্থিত হন। এই এলাকাটি তখন ছিল শত শত মাইলব্যাপী উত্তপ্ত বালু কণাময় মরুভূমি।


চাচার সঙ্গে রাসূল (সা.) মরুভুমি পাড়ি দিতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তারা একটু বিশ্রামের সন্ধান করছিলেন কিন্তু আশপাশের কোনো গাছ বা ছায়া পাচ্ছিলেন না। তখন তারা কিছু দূরে পাতাবিহীন মৃত প্রায় একটি গাছ দেখতে পেলেন। এই গাছটির নিচে কেউ বসতে পারতো না। কিন্তু কোনো উপায় না পেয়ে ক্নান্ত নবীজি ও তার চাচা মৃত প্রায় পাতাহীন গাছটির নীচে বসেন বিশ্রাম নিতে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের রহমতে তখুনি সবুজ পাতায় ভরে যায় গাছটি।


এই ঘটনা দূর থেকে দেখেন জারজিস ওরফে বুহাইরা নামের একজন খৃষ্টান পণ্ডিত। তিনি নবীজির চাচার কাছে এসে বললেন, আমি এতদিন এখানে আছি এবং যা দেখেছি কেউ এই গাছের নিচে বসতে পারেনি এবং এই গাছের কোনো পাতা ছিল না।


খৃষ্টান পন্ডিত জিজ্ঞেস করলেন: এই ছেলেটির নাম কী?

চাচা বললেন, মোহাম্মাদ।

তিনি আবার জিজ্ঞস করলেন: তার বাবার নাম কী?

নবীজির চাচা উত্তর দিলেন আব্দুল্লাহ।

তিনি আবার জিজ্ঞসে করলেন: তার মাতার নাম কী?

চাচা এবার জবাব দিলেন আমিনা।


বালক মুহাম্মাদ (সা.)-কে দেখে, তার সঙ্গে কথা বলে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন পাদ্রীর চিনতে আর বাকী রইলো না যে এই সে বহু প্রতিক্ষীত শেষ নবী, ইতিহাসের গতি পরিবর্তকারী, আরবসহ সমগ্র পৃথিবী থেকে পৌত্তলিকতার বিনাশকারী, একত্ববাদকে শক্ত ভিতের ওপর প্রতিষ্ঠাকারী। সঙ্গে সঙ্গে খৃষ্টান পন্ডিত বললেন, আমি পড়েছি ইনি হলেন ইসলাম ধর্মের শেষ নবী হজরত মোহাম্মাদ (সা.)।


আল্লাহ তাআলার ইশারায় সাহাবি গাছটি নবীজিকে নিরাপদ আশ্রয় দান করেছিল। আজও সেই গাছটি বেঁচে আছে। এই গাছটি একমাত্র জীবিত ‘সাহাবি গাছ’ হিসেবে পরিচিত। এই গাছটির নিচে এর আগে কখনো কেউ বসতেও পারেনি! এই গাছটির অলৌকিকতা মনে করিয়ে দেয় সৃষ্টিকর্তা বলে একজন আছেন। তারই রহমতে বেঁচে আছে গাছটি। কালের পর কাল, যুগের পর যুগ শত শত বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে একটি গাছ।


পৃথিবী সৃষ্টির পর নানা রকম অলৌকিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছেন মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। সেই সৃষ্টির পুনরাবৃত্তির অংশ হচ্ছে ঐতিহাসিক সাহাবী গাছ। ইংরেজিতে এই গাছটিকে বলা হয় ‘ঃযব নষবংংবফ ঃৎবব’। ভাবা যায় চারদিকে ধু ধু মরুভূমির বুকে দাঁড়িয়ে আছে একটি গাছ ৷ সাহাবি গাছটির আশেপাশে শত বর্গ কিলোমিটার জুড়ে কোনো গাছ পালার অস্তিত্ব না থাকলেও এই গাছটি এখনো বেচেঁ আছে। পৃথিবীতে এত পুরুনো কোনো গাছ এখনো বেঁচে আছে তা বিশ্বাসযোগ্য না হলেও এটি একটি সত্য ঘটনা।


অবিশ্বাস্য এই গাছটি আছে জর্ডানের মরুভূমির প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাফাঈ এলাকায়। জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ এই স্থানটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং স্থানটিকে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করেন। বিশেষ দিনেগুলোতে প্রচুর লোক সমাগম ঘটে গাছটি দেখার জন্য।


সাহাবি গাছটিকে কেন্দ্র করে এখানে আগতরা গাছের নিচে নামাজ আদায় করে থাকেন। প্রচুর লোক সমাগম হলে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে থাকেন তারা। এছাড়াও ধু ধু মরুভূমির বুকে সাহবি গাছের তলাটি সুশিতল বিশ্রামের স্থান। যা মানুষের মনে প্রশান্তি এনে দেয়।


জানা যায়, এখান থেকে চলে যাওয়ার আগে গাছটির জন্য দোয়া করেছিলেন দয়ার নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।



Post Top Ad

Responsive Ads Here