পড়া-লেখা অনিশ্চয়তায় প্রায় ১৬শ শিক্ষার্থী: পানিবন্ধী ২০ হাজার মানুষ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, অক্টোবর ০১, ২০১৯

পড়া-লেখা অনিশ্চয়তায় প্রায় ১৬শ শিক্ষার্থী: পানিবন্ধী ২০ হাজার মানুষ

সময় সংবাদ ডেস্ক//
চলতি মৌসুমে আড়াই মাস আগে আষাঢ় অতিক্রম করেছে। সোমবার আশ্বিন মাসের অর্ধেক অতিবাহিত হয়েছে। এ মৌসুমে বিলম্বে নদীর পানি বৃদ্ধি হচ্ছে। আর এমন বিলম্ব বন্যার কারণে রাজশাহীর পদ্মা নদীর আশেপাশ জুড়ে চলছে ভাঙনের প্রতিযোগিতা। হু হু শব্দের গর্জনে নদীগর্ভে বিলিন হচ্ছে ভূমিতে থাকা বসত বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। জীবন জীবিকার স্বার্থে এসব এলাকার বাসিন্দারা অন্যত্র চলে যাচ্ছে। সেই সাথে অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে এসব এলাকার শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। যার ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১১টি বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম অনির্দিস্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই ১১ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৬শ’। আর গত এক সপ্তাহে এ ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার ৮০০ পরিবার পানি বন্ধী অবস্থায় রয়েছে। বন্যার ফলে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে চকরাজাপুর ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ঘর-বাড়িসহ কয়েক হাজার আবাদি-অনাবাদি জমি ও গাছপালা। ভিটে-মাটি হারিয়ে পথে বসেছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে চকরাজাপুর ইউনিয়নের ১৫টি চরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

জানা গেছে, বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর মধ্যে থাকা ১৫টি চর রয়েছে। এ চরের ১৮শ’ পরিবার গত এক সপ্তাহ থেকে পানিবন্ধী রয়েছে। ক্রমাগত পদ্মায় পানি বৃদ্ধির কারণে গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চরের মানুষ। ভাঙন ও বন্যার কবলে পড়েছেন চরের পলাশি ফতেপুর, চকরাজাপুর, জোতাশি, লক্ষিনগর, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া এলাকা। তারা খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন। আর পানিবন্দীর কারণেই স্কুলে যাতায়াতের কোন ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 
সূত্র মতে, এই ইউনিয়নের পদ্মা চরে ৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ২টি উচ্চবিদ্যালয় রয়েছে। যেগুলোরই পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, চকরাজাপুর, পলাশি ফতেপুর, ফতেপুর পলাশি, লক্ষীনগর, পূর্ব চকরাজাপুর, পশ্চিম চরকালিদাসখালী ও পূর্ব চকরাজাপুর। আর উচ্চবিদ্যালয় দুটি রয়েছে চকরাজাপুর ও পলাশি ফতেপুর এলাকায়। 

চককালিদাসখালী সরকারি বিদ্যালয়ের চতুথ শ্রেনির শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম, তৃতীয় শ্রেণির পারভেজ ও সোহাগ আলী জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরে ঘরের মধ্যে মাচা করে বসবাস করছি। ঘরের মধ্যেই হাঁটু পানি, স্কুলে যাব কীভাবে। তাই স্যারেরা স্কুল ছুটি দিয়েছে। 
চরকালিদাসখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাহাদুর হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হলেও শিক্ষকদের হাঁটু পানি ভেঙ্গে নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। পোকা মাকড়ের কামড়ানোর ভয়টি ক্রমেই বাড়ছে। 

বাঘা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম সানোয়ার হোসেন জানান, পাঠদান কার্যক্রম ছুটির বিষয়টি কার্যতালিকায় গত রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে দেখানো হয়েছে। অফিস নিয়মিত চলবে এবং শিক্ষকদের বিদ্যালয়ে সময়মতো আসা যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর বিষয়টি ইতিমধ্যেই প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিকঅধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

পদ্মার চরের মধ্যে চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিযুল আযম বলেন, নদী ভাঙনের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেড় শতাধিক গৃহহারা পরিবারকে কিছু করে ত্রাণ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে না পারায় কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পাঠদান কার্যক্রম ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, নদী ভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিস্থিতি বুঝে শিক্ষা কর্মকর্তা সিন্ধান্ত নিবে। অনেক দূর্দশার মধ্যে চরের মানুষ বসবাস করছে। তাদের জন্য কিছু ত্রান দেয়া হয়েছে। যা তাদের জন্য যতেষ্ট নয়। এ কারণে এসব মানুষের বিপদে সমাজের বৃত্তবানদের দাঁড়ানো প্রয়োজন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here