মহুয়া জান্নাত মনি,রাঙামাটি প্রতিনিধি:
ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ আর উলুধ্বনিতে শুক্রবার (০৪ অক্টোবর) ষষ্ঠীতে শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। পরের তিন দিন আনন্দের বর্ণিল ছটা ছড়িয়ে যায় সর্বত্র৷ মঙ্গলবার সেখানে বাজলো বিষাদের করুণ সুর। বছর ঘুরে আবার আসার প্রতিশ্রæতি দিয়ে লাখো ভক্তকে ভারাকান্ত করে ঘোড়ায় চড়ে বিদায় নিলেন দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা। এরই মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাঙালি হিন্দু স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
বিজয়া দশমী শেষে মঙ্গলবার কাপ্তাই হ্রদে বিসর্জন দেয়া হয়েছে দেবী দুর্গাকে। সন্ধ্যায় রাজধানীর কাপ্তাই হ্রদের তীরে ‘দুর্গা মা কি, জয়। মহামায়া কি, জয়।’ একের পর এক এমন জয়ধ্বনি, ঢাক-ঢোল, কাঁসর ও ঘণ্টা বাজিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
ভক্তকুলকে কাঁদিয়ে মর্ত্য থেকে প্রস্থান করলেন জগতের দুর্গতিনাশিনী দেবীদুর্গা। নানা আচার অনুষ্ঠানে পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে সার্বজনীন অংশে রাঙামাটিতে শেষ হল সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় শুভ বিজয়া উপলক্ষে বিসর্জনের আগে রাঙ্গামাটি সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন মন্দির থেকে প্রতিমাকে বের করে ট্রাক শোভাযাত্রা সহকারে শহরের প্রধান সড়ক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা প্রদক্ষিণ করে। এসময় সনাতন ধমালম্বী বিপুল সংখ্যক শিশু ও নারী পুরুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেন।
এরপর শঙ্খ, ঢাক, ঢোল বাজিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভক্তরা দেবীর প্রতিমা বিসর্জন দেন। ওই সময় ভক্তদের চোখের জল গড়ায় কাপ্তাই হ্রদে।
এবার শহরসহ রাঙামাটি জেলায় মোট ৪১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়। রাঙামাটিতে ০৪ অক্টোবর ষষ্ঠীপুজা দিয়ে শুরু এ ধর্মীয় মহাযজ্ঞ আজ মঙ্গলবার বিকালে কাপ্তাই হ্রদে মহিসাসুরমর্দিনী দুর্গতিনাশিনী মা দেবীদুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে।
ভক্তক‚লের বিশ্বাস মতে, এবার দেবী মর্ত্যলোকে এসেছেন ঘোড়ায়, ফিরে গেছেন দোলায় চড়ে। ০৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু দেবী আগমনের ডামাডোল। মঙ্গলবার বিকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে কাপ্তাই হ্রদে মা দেবীদুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী, প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে শান্তির জল মঙ্গলঘটে নিয়ে তা হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এ শান্তির জল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমার সম্মুখে রেখে পূজা করা হবে।
প্রসঙ্গত, এবারে রাঙামাটিতে জেলায় ৪১টি ও পৌর রাঙামাটির পৌর এলাকায় ১৪টি পুজামন্ডপে শারদীয় দুর্গাউৎসব উদযাপন হচ্ছে এবং মঙ্গলবার দশমী পালনের মধ্য দিয়ে সনাতনী সমাজের এই বৃহত্তম শারদীয় দুর্গোৎসবের সমাপ্তি হয়েছে।