ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঘন কুয়াশা আর শৈতপ্রবাহে হিমশিম খাচ্ছে ঝিনাইদহের মানুষ। কনকনে শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন ও প্রাণীকুল। বিশেষ করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে কর্মজীবী ছিন্নমুল মানুষ। হাসপাতালগুলো ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শনিবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুরের পর থেমে থেমে কুয়াশা ফাড়ি দিয়ে সূয্যি মামা দেখা দিলেও রোদ্রে কোন তাপ অনুভূত হয়নি। ফলে চরম বিপাকে পড়ে শিশু ও বৃদ্ধরা। খড়কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার সাধারন মানুষকে। এদিকে প্রচন্ড শীতের সাথে ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশির ভাগ সময়ে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর গ্রামের আশাদুল ইসলাম জানান, খুব শীত, সকালের দিকে বাইরে বের হতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে যে সব দরিদ্র ছিন্নমুল মানুষ বেশি বেকায়দায় পড়েছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উদয়পুর গ্রামের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে গিয়ে দেখা গেল ঠান্ডায় জড়সড় অবস্থা তাদের। সে বাসার গৃহকর্মী লিমা খাতুন বললেন, গত দশ বছরের মধ্যে এমন ঠান্ডা আর পড়েনি। ভয়ঙ্কর ঠান্ডায় দিশেহারা অবস্থা। লেপের নিচ থেকে বের হতে ইচ্ছা করে না। তিন চারটা কাপড় পরি, মোজা পরে কম্বলের নিচে থাকি, তারপরও ভয়ংকর ঠান্ডা লাগছে। তাই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
ওই গ্রামের বৃদ্ধ কাশেম মন্ডল বলেন, সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে গেল তবুও রোদের দেখা পেলাম না। শীত সহ্য করতে পারছি না। সরকারি কম্বল আমাকে একটা দিয়েছে কিন্তু তাতে শরীর গরম হচ্ছে না। তাই আগুন জালীয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছি।
কৃষক রহমত মিয়া বলেন, শীতের কারনে আমরা ঘরে বসে থাকলে সমস্যা হবে। মাঠে ফসল না বুনলে আমরা খাব কি। প্রতিবছর এভাবেই শীতের সঙ্গে লড়াই করে তাদের ফসল ফলাতে হয় বলছিলেন এই কৃষক।
রিকশাচালক হারিস মিয়া বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। রিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করি। কিন্তু কুয়াশা যেমন তার চেয়ে ঠান্ডাই বেশি। কাজে বের হলেও খাব কি প্রশ্ন এই দিনমজুর রিক্সা চালকের।
এদিকে গত কয়েকদিনে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা।
ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, দরিদ্র মানুষের শীতের কষ্ট নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছি। সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় দানশীলরাও শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরন করছেন।