করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বের অনেকে তাদের প্রিয়জনকে চিরতরে হারাচ্ছেন। আক্রান্ত ব্যক্তিরা মৃত্যুর আগে প্রিয়জনদের কোনো সঙ্গই পাচ্ছে না। অন্যান্যদের মতোই হাসপাতালে ভর্তি থাকা করোনা আক্রান্ত বাবা ডন অ্যাডায়ারকে দেখতে যেতে পারেননি ছেলে অ্যাবি অ্যাডায়ার রেইনহার্ড ও তার দুই বোন। তবে বাবার মৃত্যুর আগে ৩০ ঘণ্টা মোবাইলের মাধ্যমে সঙ্গ দিতে পেরে সন্তানরা স্বস্তি খোঁজে পেয়েছেন।-খবর সিএনএন’র।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বাসিন্দা ডন অ্যাডায়ার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সরকারি নির্দেশনা ও ভাইরাসটি বিস্তার রোধে নিজেদের বসবাস করা এলাকা থেকে বাবাকে হাসপাতালে দেখতে যেতে পারেননি ছেলে-মেয়েরা।
বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেলে মৃত্যুর আগে সঙ্গ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয় সন্তানরা। সঙ্গ দেয়ার অংশ হিসেবে নার্সের মাধ্যমে মৃত্যুপথযাত্রী বাবা ডন অ্যাডায়ারের পাশে একটি ফোন রাখা হয়। এতে ডন তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পান। আর বাবার সঙ্গে কথা বলতে ৩০ ঘন্টা বসে থাকেন সন্তানরা।
করোনায় মৃত ডনের ছেলে অ্যাডায়ার রেইনহার্ড বলেন, বাবার হাত ধরা দূরের কথা, তাকে দেখার কোনো উপায় ছিল না। তবে বাবাকে যা বলতে চেয়েছিলাম তা বলতে পেরেছি। ফোনের মাধ্যমে কথা বলে আশীর্বাদ নিয়েছি। বাবার মৃত্যুর আগে তাকে সঙ্গ দিতে পারা জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় মনে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ডেনমার্ক, টেক্সাস ও উত্তর ক্যারোলাইনায় তিন ভাই-বোন বসবাস করি। সেসব স্থান থেকে নিউইয়র্কের হাসপাতালে থাকা বাবার সঙ্গে ফোনের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলাম। তার সঙ্গে পুরনো সব স্মৃতি শেয়ার করেছিলাম। বাবার জন্য গানও গেয়েছিলাম। আমরা বাবাকে কতটা ভালোবাসি সেটি শেষ মুহূর্তে প্রকাশ করতে পেরেছিলাম। বাবাও তার ভালোবাসা প্রকাশ করতে পেরেছিলেন।
রেইনহার্ড আরো বলেন, ৭৬ বছরের বাবা ফোনে ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। নিঃশ্বাসের শব্দ শুনে তার কষ্ট বুঝতে পারছিলাম। তবে তার প্রতিটি নিঃশ্বাস বেঁচে থাকার কথা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল।
সময়/আন্ত