সময় সংবাদ ডেস্ক//
ভারী বর্ষণে গত দুই সপ্তাহ ধরে বন্যার কবলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ৩৬ লাখেরও বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট এই বন্যায় এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ তে পৌঁছেছে।
বুধবার সংবাদ সংস্থা এনডিটিভি জানিয়েছে, ব্রহ্মপুত্রসহ একাধিক নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৮টি জেলার বিস্তীর্ণ অংশ পানির তলায়। এছাড়া এসব অঞ্চলের পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩৬ লাখ মানুষ।
বুধবার রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার জেরে মৃতের তালিকায় আরো ১২ জন যুক্ত হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯২ জনে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষকে বন্যা কবলিত এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিকে গুজরাটের, উপকূলীয় মহারাষ্ট্র, মুম্বাই ও আশেপাশের অঞ্চলে ভারী বৃষ্টির জন্য লাল সতর্কতা জারি করেছে।
কর্মকর্তারা আরো জানিয়েছেন, ১২৬টি রিলিফ ক্যাম্পে ২২ হাজার ৩০০ বন্যা কবলিত মানুষ সব কিছু খুইয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান কাজিরঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিতে ডুবে অন্তত ৫১টি প্রাণি মারা গেছে। ১০২টি প্রাণীকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। বনের কিছু বাঘ ও গণ্ডার আশেপাশের গ্রামগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
জানা গেছে, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্থানে পানিতে ডুবে গেছে বহু রাস্তা, ঘর-বাড়ি। বন্যাদুর্গতদের আশ্রয় দিতে কর্তৃপক্ষ ৪৮০ টি ত্রাণশিবির স্থাপন করেছে। এগুলোতে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে আসামে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বিধায়ক মৃণাল সইকিয়াকে ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি কাদাপানি সরিয়ে নারী ও শিশুদের উদ্ধার করছেন। পানি থেকে তাদেরকে তুলে নৌকায় বসিয়ে সুরক্ষিত স্থানে পৌঁছে দিচ্ছেন।
টুইটারে ভিডিও দিয়ে মৃণাল লেখেন, আমার বিধানসভা এলাকা বন্যার তোড়ে ভেসে গেছে। আমরা বন্যায় আটকা পড়া মানুষদের উদ্ধারের কাজ করছি।
উল্লেখ্য, গতবছরও প্রায় একই সময়ে বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। গৃহহীন হয়েছিল লাখো মানুষ। ভারতে ওই বন্যায় শতাধিক মানুষের মৃত্যুর খবর জানা গিয়েছিল।