করোনার চেয়েও মারাত্মক এই রোগে আক্রান্ত বিশ্বের ১৩ কোটি মানুষ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, আগস্ট ১১, ২০২০

করোনার চেয়েও মারাত্মক এই রোগে আক্রান্ত বিশ্বের ১৩ কোটি মানুষ


সময় সংবাদ ডেস্ক//
বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দিনকে দিন বাড়ছেই। মহামারি এই রোগে মৃত্যুর মিছিলও বাড়ছে। বিজ্ঞানীরা এখনো এর সফল কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। 

তবে জানেন কি? কোভিড-১৯ এর চেয়েও মারাত্মক এক রোগে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ১৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত। চর্মজাতীয় এই রোগটির নাম সোরিয়াসিস। সোরিয়াসিস নামের সঙ্গে পরিচয় কম থাকলেও সংখ্যার বিচারে এই অসুখ কোভিড-১৯ ভাইরাসের থেকে অনেক এগিয়ে।

বিশ্বের ১২৫ মিলিয়ন মানুষ এই ত্বকের সমস্যা নিয়ে জেরবার। মোট জনসংখ্যার দুই থেকে তিন শতাংশ ত্বকের ক্রনিক সমস্যা সোরিয়াসিসে আক্রান্ত, বলে জানান ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক ডার্মাটোলজির প্রেসিডেন্ট ত্বক বিশেষজ্ঞ সন্দীপন ধর। তিনি বলেন, বিশ্বের বিশাল সংখ্যক মানুষ সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হলেও রোগটা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা অত্যন্ত কম।

আমেরিকার ন্যাশনাল সোরিয়াসিস ফাউন্ডেশন ১৯৯৭ সালে ওদেশের মানুষকে ত্বকের এই ক্রনিক রোগ সম্পর্কে সচেতন করতে সোরিয়াসিস নিয়ে প্রচার চালানো শুরু করে অগস্ট মাস জুড়ে। এরপর বিশ্ব জুড়ে এ রোগের সচেতনতা বাড়াতে অগস্ট মাসকে ‘আন্তর্জাতিক সোরিয়াসিস মাস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এই ব্যাধিটি ঠিক কেমন? জানতে গেলে ত্বকের গঠন সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। আমাদের ত্বকের প্রধানত দু’টি স্তর, এপিডার্মিস বা বহিঃত্বক আর ডার্মিস বা অন্তঃত্বক। এপিডার্মিস অংশের একদম উপরের অংশে কেরাটিন নামের মৃত কোষ থাকে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর আমাদের অগোচরে কেরাটিন খসে যায়। এর তলায় থাকা সজীব কোষগুলো উপরে উঠে আসে, সময় হলে আবার তারা খসে যায়। আজীবন চক্রাকারে এই পদ্ধতি চলতে থাকে। সন্দীপনবাবু জানান, ত্বক-বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে এপিডার্মিস টার্নওভার। নিরন্তর চলা এই প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা হলেই সোরিয়াসিস হয়।

স্বাভাবিক অবস্থায় এপিডার্মিস টার্নওভারের সময় লাগে ২৮ দিন। অর্থাৎ ২৮ দিন পর পর বহিঃত্বকের আয়ু শেষ হয়ে যায়। তবে যখন তিন থেকে চার দিনের মাথায় এপিডার্মিস টার্নওভার হয়, তখনই সমস্যার সূত্রপাত ঘটে। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে খোসা উঠতে শুরু করে। তবে নিঃশব্দে ছাল ওঠা নয়, ভয়ঙ্কর চুলকানি, র‍্যাশ, ব্যথা, চুলকে সেকেন্ডারি ইনফেকশন হয়ে ঘা হয়ে যাওয়া এসবের ঝুঁকি খুবই বেশি।

সোরিয়াসিস বংশগত হলেও মোটেও ছোঁয়াচে নয়, বললেন ডার্মাটোপ্যাথলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শুভ্রা ধর। সোরিয়াসিসের উপসর্গ হিসেবে শুরুতে বুকে পিঠে হাতে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লালচে র‍্যাশ দেখা দেয়। এরপর ধাপে ধাপে নানা সমস্যার সূত্রপাত হয়।  ত্বকের ওই অংশগুলো পুরু হয়ে আঁশ ওঠার মতো ত্বকের খোসা উঠতে শুরু করে। শুরুতে চিকিৎসা না করলে শরীর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। 

অনেক সময় নখেও সোরিয়াসিস হয়। শুরুতে চিকিৎসা না করালে নখে গর্ত হয়ে যায়, নখ উঠে আসে। মাথায় বাড়াবাড়ি রকমের সোরিয়াসিস হলে মাথার সব চুল ঝরে গিয়ে টাক পরার ঝুঁকি থাকে। নিজে ইচ্ছে মতো ওষুধ খেলে নানা বিপদের সম্ভাবনা থাকে। বাড়লে শরীরের নানা অস্থিসন্ধি আক্রান্ত হয়। ত্বকের অসুবিধা ছাড়াও অস্থিসন্ধি বা গাঁটে ব্যথা, হাত-পায়ের আঙুলে ব্যথা হয়। যাদের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, হার্টের অসুখ আছে এবং কোমরের মাপ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি তাদের সোরিয়াসিসের ঝুঁকি অনেক বেশি।



Post Top Ad

Responsive Ads Here