মতামত//সময় সংবাদ ডটকমঃ
বর্ণে শব্দে বাক্যে- 'মা'
১ম,
মাত্র একটি বর্ণ আর একটি স্বরে তৈরি শব্দটির নাম- 'মা'। শব্দটি খুব ছোট হলেও এর গভীরতা অপরিমেয়। 'মা' ডাকটা শুনলেই আমাদের দৃষ্টিপটে ভেসে ওঠে মায়া, মমতা, আদর, স্নেহ ও ভালোবাসায় ঘেরা এক প্রতিমার চিত্র; যার সংস্পর্শে এলে আমাদের সকল দুঃখ কষ্ট সব শূন্যে মিলিয়ে যায়। একজন সন্তানের জীবনে মা-বাবার অবদান কতটা তা কোনো কলমই বর্ণনা করে শেষ করতে পারবে না। কারণ সাগরের গভীরতা ছোঁয়া যায় তবে বাবা মায়ের ভালোবাসার গভীরতা ছোঁয়া যায় না।
"সব থেকে ভালোবেসেও যাকে একবারও মুখ ফুটে ভালোবাসি বলা হয় না,
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে যার আঁচলের ছায়া ছাড়া শান্তি পাওয়া যায় না,
শত অবহেলা পেলেও যে হাত দুটি মোনাজাতে আমাদের নাম নিতে কখনও ভুলে না,
হাজার ভুল করলেও যার কাছে ক্ষমা চেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয় না তিনিই মমতাময়ী মা।"
২য়,
প্রতিবার একটি বিশেষ দিন হিসেবে 'মা' দিবস আসে। কিন্তু গত বছরের ন্যায় এবারও কান্নার রোদন নিয়ে এসেছে,
মায়েদের বুকে শুধু সন্তানহারানোর আহাজারি,
কতশত মায়ের চোখ ভিজিয়ে যাচ্ছে মহামারি।
কীভাবে উদযাপিত হবে সন্তানহারা মায়ের মা হওয়ার দিবসটি? কেমন আছে সে মায়েরা যাদের বুকে এখন শুধুই স্মৃতি পোড়া গন্ধ?
বিনীত সুরে আবেদন জানাই বিধাতার তরে, মায়েদের এ কান্নার চির অবসরনামা লিখে দাও হে দয়াময়। পৃথিবীর অসুখটা সারিয়ে আবার প্রকৃতির স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে দাও।
৩য়,
নবজাতকের আগমনে আমরা আনন্দ উৎসবে মেতে উঠি। কিন্তু আমরা অনেকেই ভুলে যাই এটি শুধু নবজাতকের জন্মতিথির আগমনী উৎসব নয় এটি একজন মায়ের মা হওয়ার দিবস। জন্মের পর একটি শিশু কেবলই একটা প্রাণশক্তিপূর্ণ মাংসপিণ্ড রূপে থাকে। একজন মা সেই শিশুটিকে কথা বলতে শেখায় এবং সমাজের আদব কায়দা শিখিয়ে মানুষের আকৃতিতে নিয়ে আসেন। মা হলো সেই পরশপাথর যার সঠিক স্পর্শে তার সন্তান প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। জীবনের প্রথম শিক্ষক এবং কারিগর হিসেবে আল্লাহ্ প্রতিটি শিশুকে মা দিয়ে থাকেন। কিন্তু যারা আল্লাহ্ প্রদত্ত এই নেয়ামত থেকে বঞ্চিত হন একমাত্র তারাই বুঝেন মা না থাকার যন্ত্রণা। তবে আমি সেদিক থেকে অতটা অভাগী নই। জন্মের পর থেকেই দয়াময়ের অশেষ রহমতে আমি আমার জীবনে সেই মহামূল্যবান নেয়ামতটি পেয়েছি।
৪র্থ,
আমার মা ভীষণ আদরে আমায় মানুষ করেছেন; কখনও আমার কষ্ট হয় তেমন কিছু ধারেকাছে ঘেষতে দেয়নি কোনদিন। বাসার কাজে মাকে সাহায্য করতে গেলে তাতেও তার ভীষণ আপত্তি; কারণ একটাই আমায় কাজ করতে দেখতে তার একদমই ভালো লাগে না। কথাটি যখন শুনি তখন গভীরভাবে উপলব্ধি করি নাড়ির টান কি জিনিস! মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখি তার চোয়ালের ভাজে ভাজে লুকিয়ে থাকা ঘামগুলোর দিকে। তখন মুখে আমি বিশেষ কিছু বলতে পারি না তবে মনে মনে ভাবি এত অবুঝ হয়ে কি করে থাকি?
কেন শত পাগলামিতে ব্যস্ত করি তাকে,
পরক্ষণেই ভাবতে থাকি মা সে আমার তাকে ছাড়া আর জ্বালাবো কাকে? মন খারাপ হলেই মার কোলে লুটিয়ে পড়ি, তেলের বোতল হাতে এগিয়ে যাই তার কাছে। একটা/দুইটা করে চুলের ভাজে ভাজে মন খারাপগুলো মিলিয়ে যায় অনায়াসে।
৫ম,
স্মৃতির পাতায় আজও কিছু স্মৃতিকথা অমলিন। ছোটবেলায় রাস্তা দিয়ে যখন আইসক্রিমের গাড়ি ঘণ্টা বাজিয়ে ছুট লাগাতো মায়ের কাছে আবদার করতাম ২টাকার। হ্যাঁ তখন ২ টাকায় বেশ মজার আইসক্রিম পাওয়া যেত। মা তখন লাগিয়ে দিত কাজে, বলতো কাজ সেরে আয় ওসব খাবার বাজে। মায়ের এসব কথায় হাল ছাড়া যাবে না, আইসক্রিম তো খেতেই হবে। তখন মায়ের পদসেবা থেকে শুরু করে একদম বাধ্য মেয়ে হয়ে সব কথা শুনতাম টাকা না পাওয়া অবধি।
এখন বড় হয়েছি শূন্য তলিয়ে গেছে শৈশব, আজ আর মায়ের কাছে কিছু আবদার করি না। ছোটখাটো ইচ্ছেগুলো এখন ডালপালা মেলে অনেক উঁচুয়। কখনও কখনও অনিচ্ছাকৃত কষ্ট দিয়ে ফেলি মাকে। রেগে যাই কিছুতেই সামলাতে পারি না নিজেকে; তবে কিছু সময় পেরিয়ে যাবার পর আবার ঐ মানুষটার দিকে তাকিয়েই শান্ত হয়ে যাই। তবে কাছে গিয়ে সরি বলতে পারি না, কারণ অতটা আধুনিক হতে পারিনি আজও। কিন্ত মায়ের চারপাশে ঘুরঘুর করতে থাকি যদি মা ডেকে বলে - 'কি করছিস ঐ জিনিসটা এনে দে তো।'
৬ষ্ঠ,
যদি আমায় বলা হতো একটি সময়ের কথা বল যা চিরন্তন এবং সবচেয়ে মূল্যবান তবে আমি বলতাম- "একজন মায়ের সাথে তার সন্তানের কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত অমূল্য ও শাশ্বত।" মা ডাকের মতো এত মিষ্টি শব্দ অবিধানে আর একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সন্তানের অসময়ে সবার আগে যার কলিজা কেঁপে ওঠে তিনিই মা। বাবা মায়ের ঋণ কোনদিনই কোনো সন্তান শোধ করতে পারবে না। সন্তানের প্রতি তাদের আবেগ অনন্তকালীন। সকল দেশের সকল মায়ের সম্মান প্রতিটি ধর্মগ্রন্থ দিয়েছে। ইসলাম ধর্মে মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের জান্নাত নির্ধারণ করা হয়েছে। মায়ের মর্যাদা সর্বকালে সবার ঊর্ধ্বে। চাওয়া পাওয়ার এই পৃথিবীতে একমাত্র মায়ের ভালোবাসায় কোনো কলুষতা নেই। জীবন থেকে অনেকগুলো বছর চলে গেছে কখনও মাকে ভালোবাসার জন্য নির্দিষ্ট একটি দিনকে বেছে নিইনি আজও নেব না। ভালোবাসায় ভালো থাকুক মাতৃকুল; নিরাপদে থাকুক তাদের সন্তানেরা।
কলমেঃ মনিরা সুলতানা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঃ চরভদ্রাসন সরকারি কলেজ, চরভদ্রাসন, ফরিদপুর।
"মা" হলো অমূল্য রত্ন
মা শব্দটি অতি ক্ষুদ্র হলেও এর তাৎপর্য যে কতটা তা বিশ্লেষণ করাটা বড়ই দুষ্কর। এর মহত্ত্ব যে কতটা মহান সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন অতুলনীয়, অনন্য।
‘মা’ শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে কত যে মায়া,মমতা,স্নেহ, নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। বাবা-মায়ের ভালোবাসা যে অমূল্য, তাদের ভালোবাসার কাছে অামরা সন্তানেরা চিরঋণী।
একটি পরিবারে মায়ের গুরুত্ব যে কতটা, সেটা তখনই অনুধাবন করা যায় ; যখন কেউ মাতৃহারা হয়। “‘মা হলো সংসারের সর্বংসহা’”।
সন্তানের জন্য কখনোই ""মা "" হার মানেন না দারিদ্র্যতার কাছে, অসুস্থতার কাছে,সমাজের কাছে এমনকি নিজের কাছেও। জীর্ণ বস্ত্র, শীর্ণ গাত্র নিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করেও থাকেন, শুধু তার সন্তানের জন্য, সংগ্রাম করে জীবনের সাথে।
কখনো কি মা মুরগি দেখেছেন,, ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও কীভাবে তার বাচ্চাদেরকে অাগলে রাখেন। মায়ের ভালোবাসা বড়ই অদ্ভুত।
"মা" হলো অমূল্য রত্ন। যার ভালোবাসার সাথে কারো তুলনা হয় না। মহান অাল্লাহ অসম্ভব রকমের ধৈর্য্য দিয়েছেন মায়েদের। ‘‘মা মানেই বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।।’’
অামার কাছে “মা” দিবসের বিশেষ কোন বিশেষত্ব নেই। অামার কাছে নির্দিষ্ট দিবসে শুধু নয় প্রতিটি দিবসই মা দিবস হিসেবে পালন করা উচিত। এবং অামি সেটাই যথার্থ মনে করি।।
মা দিবস বা মাতৃ দিবস হল একটি সম্মান জনক অনুষ্ঠান যা মায়ের সন্মানে এবং মাতৃত্ব, মাতৃক ঋণপত্র, এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবের জন্য উদযাপন করা হয়। প্রত্যেকটি দিবসেই মা’কে সম্মান করা, ভালোবাসা উচিত।।
অামি অামার জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ অাজ শেয়ার করছি,,
সময়টা ছিলো ২০১৯, ৮ অাগস্ট , অামি তখন ঢাকা থাকি এডমিশন কোচিং এর জন্য ।
অামি অামার মা‘কে ভীষণ ভালোবাসি কিন্তু কখনো বলা হয়নি। মা অামাকে মাঝে মাঝে ভীষণ রাগ করেন, বকেন অামারও মাঝে মাঝে খুব খারাপ লাগে সেটা ভেবে। কিন্ত মা অামাকে কতটা যে ভালোবাসেন অামি বুঝতে পারলাম সেদিন............!!
ঈদ-উল-অাযহার এক সপ্তাহ অাগে , তখন আমি ঢাকা, সাভার ফুপির বাসায় থাকি। সেদিন রাতে হঠাৎ করে প্রচন্ড জ্বর, সারারাত ঘুমাতে পারিনি মাথা ব্যাথার যন্ত্রণায়। পরদিন ফুপি ডাক্তার দেখিয়ে কিছু ঔষধ খেলে কিছু টা কমে। ৯ অাগস্ট সেদিনের রাতে, কোনরকম ভাবে ঘুমাতে গেলাম। পরদিন সকালে সব গুছিয়ে রওনা করলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে।
প্রচন্ড ভীড় ঈদ সামনে তাই, বাস পাওয়াটা খুব মুশকিল। অবশেষে গাবতলি হয়ে গুলিস্তান পৌছালাম। অামার সাথে কয়েকজন ফ্রেন্ড ছিলো ওরাও গ্রামে যাবে, অসুস্থ ছিলাম তাই একা যেতে সাহস হচ্ছিলো না, তাই ওদের সাথে যাওয়া। বেলা যত বাড়ছিলো অামার জ্বর ও তত বাড়ছিলো।
শরীর ভীষণ খারাপ লাগছিলো।
অবশেষে বাড়ি পৌঁছালাম দুপুরের পর। বাড়ি পৌঁছে তো মা অামাকে দেখে সে কি রাগ, অার বকাবকি,জ্বর হয়েছে তা কে কেন জানাইনি।অামাকে দেখে হতবাক,, বললো সে কত কি,, সে কি রাগ "চেহারার এই হাল কেন ?! কে বলেছে এমন পড়াশোনা করতে?! কেন বলিনি তাকে,,, অার কেনই বা তার সাথে এলাম না বাড়িতে অনেকবার বলা সত্বেও। তাহলে তো জ্বর হতোনা। হাজার হাজার প্রশ্ন করছিলোঅামায়। অামারও খুব খারাপ লাগছিলো বললে মা খুব টেনশন করতেন। এমনিতে মায়ের শরীর ও ভালো ছিলোনা।
তার এক সপ্তাহ অাগে
““অামার ছোট ভাই তখন মগবাজার থাকতো। একদিন ভাইয়ের হঠাৎ করে জ্বর হয় সন্ধ্যার পর জানতে পারি ভাই হসপিটালে এডমিট, তখন রাত ৮-৯টা । তখন দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ছিলো ভয়াবহ। অনেকে ডেঙ্গুতে অাক্রান্ত হচ্ছিলো।
এই সংবাদ জানতে পেরে ভীষণ খারাপ লাগছিলো, কান্না পাচ্ছিলো। মা সেই সংবাদ শোনার পর থেকে কান্না অার থামাচ্ছেন । সারারাত ঘুমাননি মা সেই ভয়াবহ রাত কাটলো। ফরিদপুর থেকে মগবাজার এক রাতের মধ্যে অাসাও সম্ভব নয় মাঝে পদ্মা নদী। তারপর মা ফজরের অাজানের পর কোনকিছু না ভেবেই রওনা করলেন ঠিকানা নিয়ে। তবে ভাবতেই খুব অবাক লাগছিলো, যে কোনদিন ঢাকা যাইনি একা, কোন কিছু চিনে না, ভয় পেতো, জানেনা ঢাকা শহরের কিছুই। সে কীভাবে হসপিটালে চলে গেলো। প্রায় ৫-৬দিন হসপিটালে কাটালাম অামি অার মা, একদিন ও ঘুমাতে পারেননি শান্তিতে। যদিও মা ছিলেন অসুস্থ প্রেশার হাই নানা ধরনের সমস্যা।
ভাই সুস্থ হলেন। ভাইকে নিয়ে মা ফরিদপুর চলে গেলেন, অামাকেও অনেকবার বললেন তাদের সাথে বাড়ি যাওয়ার জন্য কিন্তু যাইনি কোচিং এর জন্য।””
সেজন্যে অামার জ্বর হলে জানাইনি চিন্তা করবেন তাই।। তারপর সামান্য কিছু খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম বিছানায়। রাতে ভীষণ জ্বর হলো, প্রায় গ্যানই ছিলোনা। মা তো কান্নাকাটি শুরু করে দিলেন অার বাড়ির সবাই সেটা শুনে চলে অাসলো। ঔষধ খাওয়ার পর একটু কমলো।সেদিন রাত কাটলো পরদিন সকালে কাছের একটা হসপিটালে এডমিট করলো অামাকে। ডাক্তার কিছু টেস্ট করাতে দিলো রিপোর্টে এলে টাইফয়েড হয়েছে। ১৫দিন একটা এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন নিতে হবে। ১ম দিন ইনজেকশন পুশ করার কিছুক্ষণ পর, হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম। মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছিলো।মা অামাকে ধরার অাগেই সেন্সলেস হয়ে গেলাম।তারপর কিছু মনে নেই।। তখন সেই হসপিটালের যেসকল চিকিৎসা দিচ্ছিলো তাতে কিছু ই হচ্ছিলো না অামার শরীর অারও খারাপ হচ্ছিলো।সেন্স ফিরছিলোনা, মাঝে মাঝে শুধু অস্পৃশ্য অস্পষ্ট কান্নার শব্দ কানে অাসছিলো। স্যালাইন দেওয়া হলো কিন্তু কোন উন্নতি হচ্ছিলো না অামার। বাবা -মা দুজনেই কাঁদছেন। বাড়ির সবাই চলে অাসছেন কাকি, অাপু ও কাঁদ ছিলো। অাংকেল এসে বললেন ফরিদপুর ডায়বেটিস হসপিটালে এডমিট করতে,এখানে কোন পরিবর্তন হচ্ছে না । অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে গেলেন ফরিদপুর। বাড়ির সামনে গাড়ি ভেড়ালেন গ্রামের সবাই অামাকে দেখতে অাসলেন।সবাই নানা কথা বলছিলেন।অার মা বাবা কাদছিলেন সেদিন ছিলো ইদের অাগের দিন হসপিটালে কোন ডাক্তার ছিলেন না, শুধু নার্স স্টাফ ছাড়া। নার্সরা বললেন মেডিকেলে নিতে।
মা অারো জোরে কান্না করছিলেন,, অার বলছিলেন “অাল্লাহ অামি কি এমন পাপ করেছি যার শাস্তি তুমি অামার মেয়েকে দিচ্ছো।অামি বাচবোনা অামার মেয়ের কিছু হলে।” সারা রাস্তা শুধু একই কথা বলছিলেন। তখন অামার ডায়বেটিস হসপিটাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এ নিয়ে গেলেন। সব সিনিয়র ডাক্তাররা ছুটিতে। সেখানে অামার চিকিৎসা করা হলো, ডাক্তার অাসলেন স্যালাইন দেওয়া হলো। অাধ ঘন্টা পর সেন্স ফিরলো। সেই ভয়ংকর রাতে সারারাত মা ঘুমালেন না। সারারাত জেগে ছিলেন কখন স্যালাইন শেষ হবে। অামি মায়ের বুকের ওপর শুয়ে অাছি বেডে শুয়ে থাকতে পারছিলাম না। ভোররাতে একটু ঘুমালাম। কিন্তু মা ঘুমালেন না অামার কখন কি লাগে তার জন্য। ইদের দিন হসপিটালে শুয়ে। কাটালাম সেই বিভীষিকাময় দিনগুলো। মায়ের যত্ন এবং সেবায় সুস্থ হয়ে গেলাম।
এত কষ্ট কোনদিন অনুভব করিনি, তার চেয়ে বেশি কষ্ট লাগছিলো মা'র জন্য।। প্রায় ১মাস মা'র ওপর দিয়ে একটা ঝড় গেলো। না ছিলো খাওয়া, না ছিলো ঘুম। এত কান্না এত কষ্ট পেতে কোনদিন মা কে দেখিনি।।
সেদিন বুঝতে পারলাম কতটা ভালোবাসেন মা অামাদের। তার ভালোবাসার সাথে কারো তুলনা হয় না। হয়তো অনেক সময় অামরা বুঝতে পারিনা তাদের ভালোবাসা। কতটা ত্যাগ, তিতিক্ষা ধৈর্য নিয়ে সন্তানের জন্য কি না করতে পারেন। অাজকের এই দিনে শুধু একটা কথায় বলতে ইচ্ছে করছে, ভালোবাসি ভীষণ ভালোবাসি তোমায় মা।। অামার জীবনের যত পাওয়া, সবটাই মায়ের অবদান।।
ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল মায়েরা। মা'কে ভালোবাসুন। দিনশেষে একটু হলেও মা ' কে সময় দিন। নিজেকে ভালোবাসুন, মাকে ভালোবাসুন এবং দেশকে ভালোবাসুন।
পৃথিবীর সকল মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা জ্ঞাপন করছি।
সুখে দুঃখে, যে অামাদের মায়ায়, স্নেহে, ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখেন তিনি অামাদের মা।
আজ ৯ মে। বিশ্ব মা দিবস। ‘মধুর আমার মায়ের হাসি চাঁদের মত লাগে’। মায়ের মুখে চাঁদের মত হাসি দেখতে ভাল লাগে পৃথিবীর সকল সন্তানের। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসার জন্য কোনো আলাদা দিন, ক্ষণের প্রয়োজন না হলেও বিশ্বব্যাপী আজকের দিনটি পালিত হচ্ছে বিশ্ব মা দিবস হিসেবে।
মাহিয়া সুলতানা অারজু(মুক্তা)
শিক্ষার্থী, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ