রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর জেলা প্রশাসনের বেধে দেওয়া সময় অনুযায়ী, গত ১৫ মে থেকে গুটি আম বাজারযাত শুরু হয়েছে। রাজশাহীতে এবার আমের লক্ষ্য মাত্রানির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টরজমিতে। এখান থেকে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৪৮৩ মেট্রিকটন। তবে নির্ধারণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আমচাষি ও বিশেষজ্ঞরা।
আগামী ২০ মে থেকে বাজারে আসাবে গোপাল ভোগ আম। এই আমের ফলন কম হলেও মানুষের চাহিদাও অনেকাংশে বেশি। গোপাল ভোগ আম সারাদের আপ্রিয় মানুষের একটি বাড়তি আকর্ষণ তৈরী করে। আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা আশা করছেন শুরুতেই রাজশাহীর বাজার বা বাগান থেকে গোপালভোগ জাতের আম বিক্রি হবে অন্তত ১ থেকে ১৫০০ টাকা মণ। দেশের করোনা ভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি না হলে গোপাল ভোগ আমের বাজার দর ধিরে ধিরে বাড়তে থাকবে। অপরদিকে আগামী ২৫ মে বাজারে আসবে লক্ষণভোগ এবং ২৮ মে আসবে খিরসাপাত বা হিমসাগর জাতের আম।
রাজশাহী আমের জন্য বিখ্যাত হলেও জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলার আম সবচেয়ে সুসাদু এবং মিষ্টি আম। চারঘাট উপজেলায় ৩৮৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। যার প্রতি হেক্টরে ১২ মেট্রিকটন হিসাবে মোট ৪২৩৫০ মেট্রিকটন ফলন পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার। বাঘা উপজেলা কৃষিবিদ সফিউল্লাহ সুলতান প্রতিবেদককে জানান, এই উপজেলায় ৮৩৭০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১ লক্ষ ২২ হাজার ১২ মেট্রিকটন ফলনের আশা করছেন। তিনি বলেন বড় ধরনের কোন ঝড় না হলে আমের উৎপাদন লক্ষ মাত্রা ঠিক থাকবে বলে পত্রিকার প্রতিবেদককে জানান।
রাজশাহী ফলগবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিককর্মকর্তা ড. আব্দুল আলীম জানান, হেক্টর প্রতি গড়ে ১৫ দশমিক ৫৮ মেট্রিকটন হারে আম উৎপাদন হবে বলে এবারও আশা করা হচ্ছে। সেই হিসেবে এবার আমের উৎপাদন গতবারের চেয়ে অনেক বেশি হবে বলেই সকলেই আশাবাদি।
জেলা কৃষি উপ-পরিচালক ড. আব্দুল আওয়াল বলেন, রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় বিভিন্ন আমের চাষ হয়েছে। এবার জলবায়ুর প্রভাবে আমের ক্ষতি হয়নি। আগামীকাল থেকে ভাল জাতের আম বাজারে আসছে। সর্বপরি পরিপক্ক আম নামের পূর্বে বড় ধরনের কোন ঝড় না আসলে কৃষক ও আম ব্যবসায়ীরা ভাল লাভবান হবেন।
করেনা ভাইরাসের জন্য বাগান মালিক বা ব্যবসায়ীদের আমের লোকসান হবে না। আম বাজারজাত করার জন্য বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করা হয়েছে। সময়মতো চাপায়নবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আশা ট্রেন রাজশাহী হয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওয়ানা হবে। এছাড়া এবারের মৌসুমে বড় ধরনের প্রকৃতিক কোন দূর্যোগ বা কালবৈশাখী ঝড় হয়নি। ইতোমধ্যে পরিপক্ক ক্যামিকেল মুক্ত জাতের আম বাজার জাত শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা ভাল লাভবান হবেন বলে জানান, জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল।