ভোলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্ভোধন - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Friday, June 11, 2021

ভোলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্ভোধন



এ,কে এম গিয়াসউদ্দিন,ভোলা:

ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ব্যাংকেরহাট এলাকায় উদ্বোধন করা হয়েছে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।


 আজ১০ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভোলাসহ একযোগে দেশের ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।


ভোলায় নির্মিত মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই মসজিদের মাধ্যমে আমাদের ইসলাম, আমাদের সংস্কৃতি, ধর্মীয় শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দাওয়াতি কার্যক্রম—সেগুলো যেন সঠিকভাবে প্রচার প্রসার, মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, এগুলো থেকে মানুষ যেন দূরে থাকে। ধর্মের মূল কথা সেটা যেন মানুষ সঠিকভাবে শিখতে পারে জানতে পারে। ধর্মের চর্চা করার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে মানুষ যেন জানতে পারে। 


জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় মুসলামানদের হারানো ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন আরো বলেন জ্ঞান-বিজ্ঞানে সবকিছুতেই তো মুসলমানরা আগে এগিয়ে ছিল। সবসময় মুসলমানরাই সামনে ছিল। সভ্যতার দিক থেকে মুসলমানরা সবসময় আগে ছিল।পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে শুরু করে মুসলমানরা সবসময় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। চিকিৎসা শাস্ত্রে, জোত্যির্বিদ্যা সবকিছুতেই মুসলমানরা এগিয়ে ছিল। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে। আজকে কেন মুসলমানরা পিছিয়ে থাকবে। সেটিই আমার প্রশ্ন।


লেবাসধারী মুসলমানদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে উদ্বৃত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন—আমরা লেবাস সর্বস্ব ইসলামে বিশ্বাসী নই। আমরা বিশ্বাসী ইনসাফের ইসলামে।

সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ধর্মের নামে মানুষ খুন করা, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা—মানুষকে খুন করলে নাকি বেহেশতে চলে যাবে। আমার প্রশ্ন যারা এ পর্যন্ত খুনখারাবি করেছে তারা কে কে বেহেশতে গেছে সেটা কি কেউ বলতে পারবে? কেউ বলতে পারবে না। কিন্তু সবচেয়ে সর্বনাশ করে গেছে পবিত্র ইসলাম ধর্মের—যে ধর্ম শান্তির ধর্ম, যে ধর্ম মানুষকে অধিকার দিয়ে গেছে।


শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি সারাবিশ্বে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ধর্ম হচ্ছে ইসলাম ধর্ম। কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো এই মুষ্ঠিমেয় লোক জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে, মানুষ হত্যা করে, বোমা মেরে, খুন-খারাবি করে আমাদের এই পবিত্র ধর্মের নামে বদনাম সৃষ্টি করছে। এটা আমাদের ধর্মের পবিত্রতা শুধু নষ্ট করছে না, ইমেজটাও নষ্ট হচ্ছে সারা বিশ্বে।

আলেম-ওলামা, শিক্ষক-অভিভাবকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের সঙ্গে যারা জড়িত ওলামা, অভিভাবক, শিক্ষক সবাইকে অনুরোধ জানাবো—এই পথ সর্বনাশা পথ, এটি থেকে সবাই যেন দূরে থাকে সে জন্য সবাইকে প্রচেষ্টা চালাতে হবে।


 উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক তৌফিক-লাহী-চৌধুরী, পুলিশ সুপার সরকার মোঃ কায়সার, সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, শিক্ষক, সাংবাদিক, ইমাম, মোয়াজ্জিনসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।


আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে নারী ও পুরুষদের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরী, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে।


মডেল মসজিদে দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে, ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা দূর করে ইসলামের সঠিক বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে।


বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চলতি বছরের শেষ নাগাদ আরও ১০০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।

দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৫০টির মতো মসজিদ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এটা বিশ্বের বৃহত্তম মসজিদ প্রকল্প হতে যাচ্ছে। সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ও ডিসেম্বরে তৃতীয় পর্যায়ে আরও ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করা হবে।

‘ইসলামে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের কোনো ঠাঁই নেই’ জানিয়ে ইসলামী মূল্যবোধ ও মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের প্রচারণার পাশাপাশি জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের মূল বাণী প্রচার করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।


No comments: