ভাতিজাকে নির্যাতন করে প্রবাসী মায়ের কাছে টাকা দাবি, সেই চাচা গ্রেফতার - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Thursday, November 07, 2019

ভাতিজাকে নির্যাতন করে প্রবাসী মায়ের কাছে টাকা দাবি, সেই চাচা গ্রেফতার

সময় সংবাদ ডেস্ক//
প্রবাসী মায়ের কাছ থেকে টাকার নেওয়ার জন্য ৬ বছর বয়সী আপন ভাতিজাকে অমানুষিক নির্যাতন করে সেই ভিডিও সৌদি আরবে তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলেন চাচা স্বপন। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার চরগাঁও গ্রামে।

ভুক্তভোগী শিশুর নাম জিসান। তার বয়স ৬ বছর বলে জানিয়েছেন তার মা সুমনা বেগম।এদিকে জিসানকে নির্যাতন করা চাচা স্বপনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জিসানের মায়ের মামলায় বুধবার ভোরে স্বপনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইসঙ্গে নির্যাতনের ভিডিওটি যিনি ধারণ করেছেন তাকেও খুঁজছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে অভিযুক্ত চাচা স্বপন মিয়া। বুধবার রাতে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহীনুর আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দিটি রেকর্ড করা হয়। পরে রাতেই স্বপনকে কারাগারে পাঠানো হয়।  

জিসানের মা বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমার স্বামী মারা গেলেও আমি শ্বশুড়বাড়িতেই থাকতাম। সুমাইয়া (৮) নামে আমার আরও একটি মেয়ে রয়েছে। গত দুই মাস আগে আমি গৃহকর্মীর ভিসায় সৌদি আরব যাই। সৌদি আরব যাওয়ার আগে আমি আমার দুই শিশু সন্তানকে দেবর ও শ্বশুর-শাশুড়ির কাছে রেখে যাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাচ্চাদের দেখাশোনা করার জন্য কিছু টাকাও দিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই আমার কাছে আমার দেবর স্বপন আরও টাকা দাবি করে। এরপর জিসানকে অমানুষিক নির্যাতন করে, তার ভিডিও করে সৌদি আরবে আমার কাছে পাঠায় স্বপন। পরে এই ভিডিও দেখে আমি গত শুক্রবার দেশে ফিরে আসি।’

জিসানকে নির্যাতনের সেই ভিডিও গণমাধ্যমকে দেন সুমনা বেগম।ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ঘরের মেঝেতে বসে হাউমাউ করে কাঁদছে গায়ে কোনো কাপড়ছাড়া ৬ বছরের শিশু জিসান। তার দিকে তেড়ে গিয়ে বাজে ভাষায় গালাগালি করতে করতে লাথি মারছেন অভিযুক্ত চাচা স্বপন।

এতে আরও দেখা যায়, চড়-থাপ্পড় এবং লাথি-ঘুষি মারার পরে স্বপন শিশুটির গোপনাঙ্গ ধরেও টান দিচ্ছেন। এরপর ওই শিশুটির দুই পা ধরে তাকে উল্টো দিকে ঝুঁলিয়ে আছাড় মারার ভয় দেখাচ্ছিলেন। তখন শিশু জিসান বার বার ‘ও মা’, ‘ও মা’ বলে চিৎকার করছিল।

সুমনা বেগম জানান, এখন তিনি তার দুই সন্তানকে শ্বশুরবাড়ি থেকে নিয়ে তার বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সৌদি আরবে যাওয়ার আগে দেবর স্বপনকে একটি রিকশা কিনে দেই এবং নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে যাই যাতে আমার সন্তানদের দেখে রাখে। বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্বপনকে একটি স্মার্টফোনও দিয়েছিলাম। কিন্তু দুই মাস পার না হতেই আমার ছেলেকে মারধর করে সেই মোবাইল দিয়েই ভিডিও করে আমার কাছে পাঠায়।’

ভিডিও দেখে সুমনা বেগম সৌদি আরবে তার মালিকের কাছে কান্নাকাটি করলে চলতি মাসের বেতনসহ ওই মালিক তাকে দ্রুত দেশে পাঠান বলেও জানান তিনি।

দেশে এসে সুমনা বেগম স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ওই ব্যাংকের ম্যানেজার নাসির উদ্দিন আহমেদ তার কাছে এত তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসার কারণ জানতে চান। এরপর তিনি ওই ম্যানেজারকে কাঁদতে কাঁদতে পুরো ঘটনাটি বলেন এবং ভিডিওটিও দেখান। এরপরই বিষয়টি সামনে আসে। 

No comments: