স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিককে খুন করল স্ত্রী - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯

স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিককে খুন করল স্ত্রী


সময় সংবাদ ডেস্ক//
পাবনার সাঁথিয়ায় তিন বছর আগে খুন হওয়া যুবক শহিদুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আসামি হায়াত আলীকে বুধবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। 

হায়াত আলী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর উপজেলার করশালিকা পুরানপাড়া গ্রামের গেদু শেখের ছেলে। 



মামলার অন্য আসামিরা হলেন একই গ্রামের রহমান মোল্লার ছেলে প্রবাসী ঠাণ্ডিু মোল্লা ও তার স্ত্রী মোছা. ছালমা খাতুন। 

হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শহিদুল ইসলাম ময়মনসিংহ জেলার ধুবাউড়া থানার বাকপাড়া বাজারের চারুয়াপাড়া গ্রামের আ. বারেকের ছেলে। 

প্রবাসী ঠান্ডু মোল্লার স্ত্রী ছালমা খাতুনের সঙ্গে শহিদুল ইসলামের পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। ছালমা খাতুন স্বামী বিদেশে থাকার সময় পরকীয়ায় লিপ্ত হন। আর স্বামী দেশের আসার পর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে প্রেমিককে খুন করেন। তাদের সহযোগিতা করেন ঠান্ডুর দূরসম্পর্কের মামা একই গ্রামের হায়াত আলী।  বৃহস্পতিবার বিকেলে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় পিবিআই পাবনা। 

পিবিআই পাবনার’র অ্যাডিশনাল এসপি সুমন কান্তি চৌধুরী জানান, প্রবাসী ঠান্ডু মোল্লা স্ত্রী ছালমা খাতুন কয়েক বছর আগে ময়মনসিংহে বাবার বাড়ি থাকার সময় শহিদুল ইসলামের সঙ্গে তার পরকীয়া গড়ে ওঠে। বিষয়টি তার ওমান প্রবাসী স্বামী জানার পর ক্ষুব্ধ হন। এরপর দেশে ফিরে এসে তিনি স্ত্রীর কাছে সব জেনে শহিদুলকেই হত্যার পরিকল্পনা করে। তখন ছালমা সংসার টেকাতে তার স্বামীকে সহযোগিতা করে।  



২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর শহিদুল ইসলামকে ময়মনসিংহ থেকে ছালমা কৌশলে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় নিয়ে আসেন। সন্ধ্যায় ছালমা চতুর বাজারের এক জায়গায় তার সঙ্গে গল্প করতে থাকেন। তখন পরিকল্পনা অনুযায়ী শহিদুলকে  হায়াত আলী ও ঠান্ডু মোল্লা কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে পালিয়ে যান। ১৭ অক্টোবর শহিদুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।  

এ ঘটনার পর নিহতের ভাই পাহাড়ী রাজু সাঁথিয়া থানায় করেন। পুলিশ মামলার সমাধান করতে পারেনি। পরে সাঁথিয়া থানা হতে মামলাটির তদন্তভার সিআইডি গ্রহণ করে। সিআইডি মামলার তিনজন আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে আসামি হায়াত আলী ও ঠান্ডু মোল্লাকে পলাতক দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। বাদী পক্ষ এতে সন্তুষ্ট হতে না পেরে বিজ্ঞ আদালতে নারাজি দেন। বিজ্ঞ আদালত মামলার পুনঃতদন্তভার পিবিআই’র উপর অর্পণ করেন।

পিবিআই পাবনা জেলা প্রধান মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা পেয়ে এসআই মো. সবুজ আলীর ওপর তদন্তভার অর্পণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সবুজ আলী কিছুদিনের মধ্যেই তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন। 

এরপর পিবিআই পাবনা জেলা প্রধান অ্যাডিশনাল এসপি সুমন কান্তি চৌধুরীর নেতৃত্বে পিবিআই বিশেষ টিম গঠন করা হয়। তারা মামলার মূল আসামিকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। শেষ পর্যন্ত তারা বুধবার রাতে ১ নম্বর আসামি হায়াত আলীকে গ্রেফতার ও পুরো রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হন। 



পিবিআই জানায়, হায়াত আলী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মামলার ঘটনার পর হতেই আসামি ঠান্ডু মোল্লা বিদেশে পালিয়ে যান। তিনি বর্তমানে ওমানে পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।  

গ্রেফতার হায়াত আলীকে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। তিনি বিজ্ঞ আদালতে মামলার ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে হত্যা করার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে পিবিআই কর্মকর্তারা জানান।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সবুজ আলী জানান ,গ্রেফতার হওয়া মূল আসামি ঘটনার পর থেকেই কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিলেন। অনেক কৌশল অবলম্বন করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় হায়াতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের দ্রুত গ্রেফতার করা যাবে। 

সিআইডি পাবনা জেলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মামলার বাদী ঠান্ডু মোল্লা মামলার ভিকটিম শহিদুল ইসলামকে চার লাখ টাকা দিয়েছিলেন। তাকে টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। 


Post Top Ad

Responsive Ads Here