৪০ বছর বয়সী নারীর সঙ্গে চার মাসের শিশুর বিয়ে! - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ১৬, ২০২০

৪০ বছর বয়সী নারীর সঙ্গে চার মাসের শিশুর বিয়ে!

ডেস্ক খবর:
বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। দুটি মনের মিলনেই তৈরি হয় এই বন্ধন। যেখানে প্রকাশ পায় একজন অন্যজনের প্রতি আবেগ, ভালোবাসা, অনুভূতি, অভিমান আরো অনেক কিছুই।

তবে আমাদের সমাজে নিত্যনতুন ঘটনা ঘটে চলেছে। যা অনেক ক্ষেত্রেই অবিশ্বাস্য মনে হয়। তারপরও ঘটছে এসব অদ্ভুত ঘটনা। রহিম-রূপবান এর গল্প শুনেছেন নিশ্চয়! হ্যাঁ, রূপবান ১৯৬৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত লোককাহিনী নির্ভর বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। এটি খুবই জনপ্রিয় একটি সিনেমা ছিল। তবে এই সিনেমার গল্পটিই সত্যি করে দেখালেন বাংলাদেশে বসবাসরত একটি পরিবার।

ডেইলি বাংলাদেশের এক প্রতিবেদনে থাকছে বাস্তবের রহিম-রূপবানের ঘটে যাওয়া সেই গল্পের বর্ণনা। কেন ৪০ বছর বয়সী নারীর সঙ্গে চার মাসের শিশুর বিয়ে হয়েছে, সেই ঘটনাটিই জানাবো আজকের লেখাটিতে। দেরি না করে চলুন জেনে নেয়া যাক, অদ্ভুত কারণে ঘটে যাওয়া বিস্ময়কর সেই ঘটনাটি-  

ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার উল্লা গ্রামের হতদরিদ্র একটি পরিবারের কর্তা মুকছেদ আলী। অনেক স্বপ্ন ও আশা নিয়ে বিয়ে করেন। সুখেই কাটছিল তার বিবাহিত জীবন। তারপর সংসারে সুখ বাড়াতে ঘর উজ্জ্বল করে আসে তার প্রথম কন্যা সন্তান। তবে ইচ্ছা রয়ে যায় একটি পুত্র সন্তানের। সেই দোয়াও কবুল হয় তার। কিন্তু সুখের রাজ্যে অঢেল দুঃখ নেমে আসে তার পুত্র সন্তানের মৃত্যুতে।

তারপর নিরাস হোন নি তিনি। পুত্র সন্তানের জন্য প্রার্থনা করেই যান তিনি। পর পর পাঁচবার তার এই প্রার্থনা কবুলও হয়। তবে তার এই সুখ বেশিদিন সয়নি। কষ্টের ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম পুত্র সন্তানের মৃত্যুর পরও, একে একে তার পাঁচ-পাঁচটি পুত্র সন্তানেরও মৃত্যু ঘটে। কেউ অসুখে, কেউ বা সাপের কামড়ে প্রাণ হারায়।
তারপর আরো একটি পুত্র সন্তানের আশায় চলে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা। তার স্ত্রী দিনের পর দিন কান্না করতে থাকেন একটি পুত্র সন্তানের জন্য। পর পর পাঁচ সন্তান হারা অসহায় মায়ের কান্না আবারো কবুল হয়। অবশেষে, পাঁচ সন্তানের মৃত্যুর পর আবারো আরেকটি পুত্র সন্তান মুখ দেখেন তিনি। যার নাম রাখা হয় আল আমিন। 

অপরদিকে ঘটে আরেকটি অদ্ভুত ঘটনা। একদিন তার প্রতিবেশী ৪০ বছরের মনোয়ারা একটি স্বপ্ন দেখেন। সেখানে তিনি দেখতে পান যে, মুকছেদ আলী যদি তার ওই শিশু সন্তানটিকে বিয়ে দেন, তবেই তার শিশু সন্তান আল আমিন বেঁচে থাকবে। অবশেষে এই স্বপ্নের কথা তিনি এই স্বপ্নের কথা চার মাস বয়সী আল আমিনের মা-কে জানান।

সন্তান প্রেমে অন্ধ মা-বাবা এই স্বপ্ন বিশ্বাস করেন। সন্তানকে বাঁচাতে তারা তাদের প্রতিবেশী ৪০ বছরের মনোয়ারাকে অনুরোধ করেন। বিশ বছর আগেই মনোয়ারার স্বামী মারা যান। সর্বহারা মনোয়ারা অবশেষে সেই শিশু সন্তানটিকে বাঁচাতে রাজি হয়ে যান। তাছাড়াও মনোয়ারা গ্রামের সবার বিপদেই এগিয়ে আসেন।

মনোয়ারা বলেন, ‘আমি স্বপ্নে দেখছি যে আল আমিনরে বিয়া দিলে সে বাইচা থাকবো। বাচ্চাটারে বাঁচাইতেই আমি বিয়াতে রাজি হইছি। এহন আমার চল্লিশ বছর, আর ওর চাইর মাস। ওয় বড় হইলে তহন আর আমার সংসার করার মত বয়স থাকবো না। তাই ওয় বড় অইলে আমি ওরে বিয়া দিয়া নতুন বউ ঘরে আনুম। তহন যদি ওয় আমারে লগে রাখতে চায়, তাইলে আমি থাহুম।’

সবশেষে বলতে হয়, কুসংস্কার এখনো আমাদের সমাজকে ঘিরে আছে। মানুষের বিশ্বাস এখনো কিছু কিছু জায়গায় আদি যুগের মতই রয়ে গেছে। তবে এই ঘটনায় মনোয়ারার উদারতা সত্যি প্রশংসনীয়।

Post Top Ad

Responsive Ads Here