মেহের আমজাদ,মেহেরপুর -
মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও নিয়োগ বানিজ্য বন্ধের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বর্শিবাড়ীয়া গ্রামবাসীর পক্ষে মসিউর রহমান ও শারমীন নাহার।
গত সোমবার (০৬-০১-২০২০) বিকালে সদর উপজেলার বর্শিবাড়ীয়া গ্রামে সংবাদ সম্মেলনে মসিউর রহমান বলেন, বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফার যোগসাজসে বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও নিয়োগ বানিজ্য চলছে। মসিউর রহমান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি মোঃ মসিউর রহমান সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিগত ২৮-০১-২০০৫ ইং তারিখে অত্র বিদ্যালয়ে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত হইয়া অদ্যাবধি পর্যন্ত যথাযথভাবে উক্ত পদে দায়িত্ব পালন করিয়া আসিতেছি। এ ছাড়া একই তারিখে আমার স্ত্রী শারমীন নাহার সহকারী শিক্ষিকা (বাংলা) বিষয়ে নিয়োগ প্রাপ্ত হন এবং অদ্যাবধি পর্যন্ত শিক্ষকতা করিয়া আসিতেছেন। কিন্ত অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর আমাদেরকে কোন ধরনের নোটিশ বা চাকুরী হইতে অব্যাহতি পত্র না দিয়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বাংলা বিষয়ে অপর দুইজন যথাক্রমে দিলারা পারভিন (সহকারী প্রধান শিক্ষক) ও মোঃ ইয়াসিন হাসান (বাংলা শিক্ষক) হিসাবে এমপিও ভুক্তির জন্য অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানিজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষক সম্পুর্ণ অন্যায়ভাবে ও আর্থিক লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে তাদেরকে এমপিও ভুক্তির জন্য বিগত ০৯-০৭-২০১৯ ইং তারিখে সুপারিশ পাঠানো হয় যা সম্পুর্ণ আইন ও ন্যায় বিচার পরিপন্থি। মশিউর রহমান লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কলাম আজাদ ও ম্যানিজিং কমিটির বর্তমান সভাপতির অন্যায় সহযোগিতায় বর্তমান প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী মোছঃ নারগিস খাতুনকে সহকারী শিক্ষক (সমাজ বিজ্ঞান),সহকারী শিক্ষক শ্রেণী ৬ষ্ঠ (সমাজ বিজ্ঞান) ও লাইব্রেরিয়ানকে এমপিও ভুক্তির জন্য একই সাথে তিনটি বিষয়ের জন্য সুপারিশ করা হয় এবং সহকারী শিক্ষক গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান মেঃ আব্দুস সবুর (ডালিম)কে ২৮-০৬-২০০৩ইং তারিখে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্ত উনি ২০১১ সালের পর বিদ্যালয়ে এসেছেন। আবার ধর্মীয় শিক্ষক মোঃ শরিফুলের নিয়োগ দিয়েছেন ২৮-০৬-২০০৩ইং তারিখে নিয়োগ দিয়েছেন। কিন্ত উনি দরবেশপুর দাখিল মাদ্রাসায়২০১৩ সাল পর্যন্ত চাকুরী করিয়া এম.পি.ও তুলে এসেছেন। সহকারী শিক্ষক মোঃ লিয়াকত হোসেনকে শরীর চর্চা শিক্ষক হিসাবে ২৮-০৬-২০০৩ইং তারিখে নিয়োগ দিয়েছেন। উনি অদ্যাবধি পর্যন্ত কোনদিন বিদ্যালয়ে আসেননি। অপরদিকে সহকারী শিক্ষক মোঃ শরিফুল ইসলাম রাজনগর দাখিল মাদ্রাসা মেহেরপুর সদর অদ্যাবধি পর্যন্ত এমপিও তুলছেন আবার বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কালাম আজাদ ২৫-০১-২০০৫ইং তারিখে মোঃ শরিফুল ইসলামকে কম্পিউটার শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপত্র দেখাচ্ছেন। যা সম্পুর্ণভাবে অবৈধ ও জালিয়াতি। আর সব থেকে বড় আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উনার স্ত্রীকে ওই বিদ্যালয়ের ৩টি জায়গায় নিয়োগ প্রদান করেন। যেগুলো হচ্ছে মোছাঃ নার্গিস খাতুন ১৫-০১-২০০৫ ইং তারিখে সহকারী শিক্ষক ( সামাজিক বিজ্ঞান), মোছাঃ নার্গিস আক্তার সহকারী শিক্ষক ৬ষ্ঠ শ্রেণী শাখা সামাজিক বিজ্ঞান ১৫-০১-২০০৫ ইং। সহকারী লাইব্রেরিয়ান মোছাঃ নার্গিস পারভীন ১৩-০৬-২০১১ইং।
আরও একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হচ্ছে বিগত ২৩-০১০-২০১৯ ইং তারিখে বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত হয় এবং সর্বশেষ এমপিও তালিকা ০২-০৭-২০১৯ ইং তরিখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেন। কিন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে,একজন শিক্ষা কর্মকর্তা সঠিকভাবে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই না করে কিভাবে জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেন। সব শেষে সংবাদ সম্মেলনে মসিউর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমার পরিবর্তে সহকারী প্রধান শিক্ষক দিলারা পারভীন ও আমার স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা শারমীন নাহারের পরিবর্তে মোঃ ইয়াসিন হাসানের এমপিও ভুক্তির সুপারিশ ,প্রধান শিক্ষকের স্ত্রীর নাম এমপিও ভুক্তির সুপারিশে পরপর তিনবার উল্লেখ করার বিষয়টি তদন্ত পূর্বক সুরাহা না করা পর্যন্ত বিদ্যালয়ের এমপিও ভুক্ত করণ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার বিষয়ে আপনাদের সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্ট ও ইলেট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।