ফরিদপুর প্রতিনিধি :
দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামলীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভী ও শ্রমিকলীগের অর্থ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন গ্রেফতার এর পরে শহরে মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা।
বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে জড়ো হয়ে দুর্নীতিবাজদের গ্রেফতার করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জেলা পুলিশকে ধন্যবাদ জানায় তারা। এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামাল উদ্দিন কানু, ফারুক হোসেন, আলী আজগর মানিক, ফয়সাল হোসেন, শামীম তালুকদার প্রমুখ। পরে সকলে মিস্টি খেয়ে আনন্দ উল্লাস করেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ থেকে তারা তাদের সহযোগি, আশ্রয় ও প্রশয়দাতা রয়েছেন তাদেরও দ্রæত গ্রেফতারের জোর দাবি জানান।
এর আগে আজ বেলা ১২ টার দিকে শহরের চরকমলাপুর এলাকার বাসা থেকে শহর আওয়ামলীলীগের সভাপতি খন্দকার নাজমুল ইসলাম লেভীকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানা পুলিশের একটি দল। এর কিছুক্ষন পরে গ্রেফতার হয় জেলা শ্রমিক লীগের অর্থ সম্পাদক বিল্লাল হোসেনকে।
আওয়ামীলীগের একটি সূত্র জানায়, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচার সহ নেতাকর্মির সাথে খারাপ আচরন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও আর্থিক বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তারা করে আসছিলেন অনেকদিন ধরে। একই অভিযোগ রয়েছে বিল্লালের বিরুদ্ধে।
সিআইডি সূত্রে জানাযায়, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি গত ২৬ জুন দুই হাজার কোটি টাকা অবৈধ অর্থ ও সম্পদ আয় ও পাচারের অভিযোগ এনে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি করেন। মামলাটির বাদি সিআইডির পরিদর্শক এস এম মিরাজ আল মাহমুদ।
এই মানি লন্ডারিং মামলায় ফরিদপুরের বহুল আলোচিত দুই ভাই শহর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলের বিরুদ্ধে দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ অবৈধ উপায়ে উপার্জন ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন সংশোধনী ২০১৫ এর ৪(২) ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
গত ৭ জুন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে হামলা মালায় গ্রেফতার হন রুবেল ও বরকত। পরে তাদের মানি লন্ডারিং মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে প্রথমে দুই দিন পরে আরও তিন দিনের রিমান্ড শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম ১৬৪ ধারায় দুই ভায়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন। পরে তাদের কেরানিগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রেরণ করে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানান, সিআইডি’র মানি লন্ডারিং মামলায় প্রধান আসামী রুবেল-বরকতের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাজমুল ইসলাম লেভী ও বিল্লালের সম্পৃক্ততার প্রেক্ষিতে শুক্রবার দুপুরে (সাড়ে ১২টা) ফরিদপুর শহরের চরকমলাপুর নিজবাড়ী থেকে লেভী ও হাড়–কান্দি থেকে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের নির্দেশে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এসময় পুলিশ সুপার বলেন, ঢাকা সিআইডির চাহিদা মোতাবেক লেভী ও বিল্লালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যেই লেভীকে ঢাকার সিআইডি টিম এসে নিয়ে যাবে।
এদিকে তাদের দুজনের আটকের খবর জেলায় ছড়িয়ে পড়লে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিতরণ করেন আওয়ামীলীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মিরা।
No comments:
Post a Comment