নগরকান্দায় বিএনপি নেতার আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করে প্রচারণা, আদালতে মামলা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, মার্চ ৩০, ২০২১

নগরকান্দায় বিএনপি নেতার আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করে প্রচারণা, আদালতে মামলা


মো. ফিরোজ খান

নিজস্ব প্রতিবেদক :      
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা মো. ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করে এলাকায় পোস্টার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড টানানোর ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। ভুয়া পদ ব্যবহার করে রাতারাতি আওয়ামী লীগ নেতা সেজে প্রতারণা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বরাবর। সেখানে ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি নেতা ফিরোজ খানের আওয়ামী লীগের পদ ব্যবহার করায় ফরিদপুরের ৪ নম্বর আমলী আদালতে একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. বাবুল আক্তার।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ফিরোজ খান এলাকায় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি কয়েকবার বিএনপির সমর্থন নিয়ে তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। হঠাৎ করেই তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বিলাের্ড ও ফেস্টুন টানিয়েছেন।  

তাদের অভিযোগ, বিগত ২০১৩ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের যে কমিটি গঠন করা হয় সে কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নির্বাচিত হন। তারা হলেন, মো. জামাল হোসেন মিয়া, মো. রওশন আলী ও মো. লিয়াকত আলী। এরপর সম্মেলন না হওয়ায় সেই কমিটি বহাল রয়েছে।

অন্যদিকে, গত ২০১৫ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যে কমিটি অনুমোদন দেন, সেই কমিটির ৪ নম্বর উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন ফিরোজ খান। দল থেকে পদত্যাগ না করে অন্যদলের ভুয়া পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করায় ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা (যদিও তিনি বার বার বিভিন্নভাবে বলেছেন তিনি ওই পদ থেকে ইস্তফা নিয়েছেন)। তারপরও কথা উঠেছে কিভাবে এমন একজন ব্যক্তি হঠাৎ করেই আওয়ামীলীগের মতো একটি সংগঠনের উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে পোষ্টার তৈরি করেন।  

এদিকে, আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করায় ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে ফরিদপুরের ৪ নম্বর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে গত ২৭ মার্চ একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ফিরোজ খানকে একমাত্র আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল আক্তার।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা জানান, আমাদের কাছে যে ডকুমেন্ট রয়েছে তাতে ফিরোজ খান স্থানীয় বিএনপির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। তার বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের চিঠি পাওয়ার পরই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

অপরদিকে ১৯৭১ সালে ফরিদপুরের থানা পর্যায়ের শান্তি কমিটির যে কমিটির তালিকা রয়েছে সেখানে ফিরোজ খানের পিতা মকবুল খানের নাম নগরকান্দা থানার লিষ্টে রয়েছে সদস্য হিসেবে। এই বিষয় নিয়ে নগরকান্দা মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ। এরকম একটি পরিবারের ব্যক্তি কিভাবে হঠাৎ আওয়ামীলীগের পদ পদবী ব্যবহার অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে উপজেলা জুরে।

এ বিষয়টি জানতে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ বেলায়েত হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, গত ২০১৬ সালে সংসদ উপনেতা মহোদয়ের বাড়িতে একটি মিটিং হয়। সেখানে সর্বসম্মতভাবে ফিরোজ খানকে নেওয়ার কথা হয়। পরে আমরা বিষয়টি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রে পাঠালে কেন্দ্র তা অনুমোদন দেয়নি। তিনি বলেন অনুমোদন যেহেতু হয়নি সে কারনে তার এই পদ ব্যবহার করা কোন ভাবেই আইন সিদ্ধ হয়নি। এদিকে ফিরোজ খানের পিতার শান্তি কমিটিতে নাম থাকা নিয়ে তিনি বলেন, তার পিতার যে ভূমিকা ১৯৭১ সালের তার জন্য আমরা নিন্দা জানাই।  
   
এ বিষয়টি জানতে ফিরোজ খানের সাথে তার মোবাইল জানতে ফোন দিলে তিনি সকল বিষয় অস্বীকার করে জানান, আমি বিএনপি দল থেকে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছি এবং ওই বছর আওয়ামীলীগের যে কমিটি ছিলো সেই কমিটির পূর্ন গঠনের সময় আমাকে দলে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন প্রতিপক্ষ হয়তো বা এগুলো ছড়াচ্ছে। তার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় থানা পর্যায়ের শান্তি কমিটির নাম নিয়ে বলেন ওই কমিটির যে তালিকা সেটা ভুয়া হবে। ওত আগের জিনিষ এখন থাকবে কি করে? প্রতিপক্ষ হয়তো নিজে বানিয়ে এগুলো ছড়াচ্ছে বলে তিনি জানান।  

Post Top Ad

Responsive Ads Here