মতামত//সময় সংবাদঃ
বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা ৪ কোটি। এর মধ্যে ২ কোটি হতদরিদ্র।
করোনায় বৃদ্ধি পেয়েছে আয়বৈষম্য। ধনী আরো ধনী হচ্ছে গরীব আরো গরীব হচ্ছে। সম্প্রতি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবুল বারকাত একটি জরিপে দেখিয়েছেন, ১৭ কোটি মানুষের এ দেশে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনের আগের শ্রেণি কাঠামো ছিল এ রকম-(দেশের মোট খানার মধ্যে) দরিদ্র ২০ শতাংশ, মধ্যবিত্ত ৭০ শতাংশ, ধনী ১০ শতাংশ। আর লকডাউনের পর শ্রেণি কাঠামো সম্পূর্ণ পালটে হয়েছে এ রকম- দরিদ্র ৪০ শতাংশ, মধ্যবিত্ত ৫০ শতাংশ, ধনী ১০ শতাংশ। তাহলে ২০২১ সালের ২য় দফার লকডাউনে গরীবের সংখ্যা নিশ্চয় আরো বাড়বে।
বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে একটি জেলা ফরিদপুর। পদ্মায় ভাঙন কবলিত এই জেলায় রয়েছে অনেক দরিদ্র, বেকারত্ব, শিক্ষার হারে পিছিয়ে পড়া, ধনী দরিদ্রের বৈষম্য, অর্থনীতি ও অবকাঠামো এবং অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ নানান সমস্যায় জর্জরিত ।
এই জেলার ৯ টি উপজেলার মধ্যে একটি উপজেলা হচ্ছে চরভদ্রাসন উপজেলা। ৪ টি ইউনিয়নের সমন্বয়ে গড়ে উঠা এই উপজেলা তন্মধ্যে চর ঝাউকান্দা এবং চর হরিরামপুর বেশি ঝুঁকির মুখে নদী ভাঙনে। চরভদ্রাসন উপজেলায় দুটি নদী আছে এবং নদী ভাঙন হয়।
পদ্মানদী ভরা মৌসুমে এখানকার মানুষদের পানিতে ডুবায়, নদী ভাঙন বেড়ে গেলে মানুষ এইসময় অনেক কষ্টে জীবনযাপন করে। খরা মৌসুমে পদ্মার চরের বাসিন্দাদের খরায় অনেক ফসলি জমি পুড়ে যায়। এবারো ব্যতিক্রম ঘটে নি। বাদাম চাষিদের শতশত বিঘার বাদাম পুড়ে ছাই হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে এই উপজেলায় মোট ১০২০ হেক্টর বাদাম চাষকৃত জমির মধ্যে ৪০ হেক্টরের উপরে বাদামগুলো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
বিশ্বে এখন করোনা মহামারী চলছে। এর ছোবল থেকে কেউই রক্ষা পাচ্ছে না। দারিদ্র্য পীড়িত এই দেশ দারিদ্র্য বোঝা যেমন টানতে হচ্ছে তেমনি বেকারত্ব,দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার কারীর বিরুদ্ধে অনবরত যুদ্ধ করতে হচ্ছে।
চরভদ্রাসনেও এগুলো থেকে মুক্ত নয়।অন্যদিকে করোনার এই মহামারীর মধ্যে এখানকার অনেক লোক খুবই কষ্টে জীবনযাপন করছে। করোনায় অনেকে চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে গেছে । মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো নিম্ন মধ্যবিত্তে চলে আসছে। দরিদ্র মানুষগুলো আগের থেকে আরো কষ্টে জীবনযাপন করছে।
আমাদের উপজেলায় অনেক ধনী পরিবার রয়েছে। অনেক অর্থ সম্পদ প্রতিপত্তিশীল লোকজনের আনাগোনা রয়েছে। তারা যদি আমাদের উপজেলার অসহায়, গরীব,নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ায় তাহলে তাদের অনেকটা দুঃখ লাঘব হয়ে যায়। ধনীদের যাকাতের টাকাগুলো পরিপূর্ণভাবে গরীবদের মাঝে বন্টন করে তাদের দান সদকার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় তাহলে নিশ্চয় আমাদের উপজেলার অসহায় গরীব এই সমস্ত মানুষদের জন্যে অনেক উপকার হয়। তাই আর্থিকভাবে স্বাবলম্বীদের করোনার এই মহামারীর সময়টাতে মূল ভূমিকা পালন করা জরুরী।
নাজমুল
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ফরিদপুর।
No comments:
Post a Comment