ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী:
প্রতি বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন হলেও, পরিবর্তন হচ্ছে পরিবেশ ও জলাবায়ুর। কিন্ত গ্রাম বাংলার মানুষ গ্রামে-গঞ্জে, নদী ও অরণ্যের সঙ্গে নিবিড় বন্ধন ও জীবন সংগ্রামের চিত্র প্রমান করে শওকত আলীর প্রদোষে প্রাকৃতজন উপন্যাসে। প্রকৃতিতে গড়ে উঠেছে বাংলার বিচিত্র জনপদ, নদ-নদী, গ্রাম-শহর। প্রাচীন সভ্যতা গড়ে উঠলেও মানুষের সৃষ্টি সভ্যতার কারণে বিনষ্ট হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ।
অপরিকল্পিত ইটভাটা কল-কারকাখানা ও বাসন্থানের জন্য কৃষিজমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। একইভাবে শিল্পায়ন, নগরায়ণ ও ক্রমবর্ধমান আবাসন প্রকল্প গড়ে ওঠার কারণে কৃষিজমি আশঙ্কাজনক হারে কমছে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, দেশে মাথাপিছু আবাদি জমির পরিমাণ ০.৪৪ হেক্টর। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ নানা কারণে প্রতিবছর দেশের প্রায় ৮০ হাজার হেক্টর কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২১৯ হেক্টর আবাদি জমি এবং প্রতিবছরই ১ শতাংশ হারে কৃষিজমির পরিমান কম হেচ্ছে। অপরদিকে কলকারখানার নানা রকমের বিষাক্ত বর্জ্য খালের পানিতে মিশে কৃষিজমিতে গিয়ে পড়ছে। এতে জমি উর্বরতা হারাচ্ছে। আবাসস্থল হারাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী। অধিক ফসল ও মুনাফর আশায় জমিতে রাসায়ানিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। এসকল ক্যামিকেল ব্যবহারের ফলে পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। আবাদি জমি রক্ষায় দেশের ৩০টি কৃষি প্রতিবেশ এলাকাকে সংরক্ষণ পরিকল্পনায় নেওয়া প্রয়োজন।
বাস্তুতন্ত্র রক্ষা ও পুনরুদ্ধারের মূল বিষয় হলো প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণ। প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে শুধু গাছ লাগালে পরিবেশ বিপর্যয় মোকাবিলা করা যাবে না। সরকারি, বেসরকারি ও স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত প্রয়াসে বিভিন্ন বাস্তুসংস্থানের জীববৈচিত্র রক্ষায় আইইউসিএনের টাঙ্গগুয়ার হাওর, কক্সবাজার, নিঝুম দ্বীপসহ জলাভ‚মি ও বনভ‚মি রক্ষায় সহব্যবস্থাপনা প্রকল্প বেশ কার্যকর ভ‚মিকা রেখেছে। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণে স্থানীয় জনগণের মাধ্যমে সংরক্ষিত এলাকা বা ‘কমিউনিটি কনজার্ভড এরিয়া’ গড়ে তোলা সম্ভব।
১৯৭২ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এ দিনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর দিনটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের বিষয়বস্তু ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’। তবে এবারের পরিবেশ দিবসের আরেকটি গুরুত্ব আছে, তা হচ্ছে, এই দবিস থেকে জাতিসংঘের বাস্তু পুনরুদ্ধার দশকও (২০২১-২০৩০) শুরু হতে যাচ্ছে। উন্নয়ন কর্মকাÐসহ আমাদের জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিবেশের যে ক্ষতি করেছি, তা পুনরুদ্ধারের জন্য বিশ্বের সব কটি রাষ্ট্র আগামী এক দশক ধরে চেষ্টা করবে। ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে আসছে। দিবসটির এবারের বিষয়বস্তু ‘বাস্তুতন্ত্র পুনরুদ্ধার’ বনভ‚মি ধ্বংস বন্ধ হোক জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাবে বাংলাদেশে বার্ষিক বন উজাড় হওয়ার হার বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ, ২ দশমিক ৬ শতাংশ। আর বন বিভাগের হিসাবে সারা দেশে দখল হয়ে গেছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৩ একর বনভ‚মি। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৮ হাজার একর সংরক্ষিত বনভ‚মি। দেশে ৪১টি বনভ‚মিকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হলেও এগুলোকেও নিরাপদ বলা যাবে না।
এশিয়ার সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্যপূর্ণ এলাকা ইন্দো-বার্মা হটস্পটের অন্তর্ভুক্ত। এ বনকে মহাবিপন্ন বেঙ্গল টাইগার পুনরুদ্ধারের উপযোগী হিসেবে গণ্য করা হয়। বিশ্বের ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৪৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ১৯ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১১ প্রজাতির বিরল পাখির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সাঙ্গুর কাছাকাছি এলাকায় ২০০ অধিক প্রজাতির পাখি আছে বলে অনুমান করা হয়। এ বন শুধু যে জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তা নয়। এখানে বসবাস করা জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা ও আর্থসামাজিক অবস্থাও এই বনের ওপরে নির্ভশীল।
দেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম উপাদান পাহাড়ের টিলা কেটে বিভিন্ন স্থানে বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। যেমন ২০০৩ থেকে ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১২৩টি পাহাড় কাটা হয়েছে। শুধু কক্সবাজারের চুনতি বনভ‚মি এলাকায় ১৫ থেকে ২০টি পাহাড় থেকে ২ কোটি ঘনফুট মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। পাহাড় কাটার কারণে পাহাড়ধস বাড়ছে। চট্টগ্রামে ২০০৭ সালে পাহাড়ধসের ঘটনায় ১২৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। অন্যদিকে পরিবেশ অধিদপ্তর ও পরিবেশবাদী সংগঠনের হিসাবে সিলেট নগরসহ বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ও টিলার সংখ্যা ছিল ৪১২। ৬১টি টিলা কেটে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। ৩৫১টির মধ্যে অর্ধেকের বেশি টিলা ঝুঁকিপ‚র্ণ অবস্থানে আছে।
ফলে ভ‚তাত্তি¡ক গঠন নষ্ট হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পাহাড়। বাণিজ্যিক ও ‘উন্নয়ন কর্মকাÐের আড়ালে পাহাড়ের প্রাকৃতিক বনভ‚মি ও জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর মাঝেমধ্যে এসব কর্মকাÐের জন্য জরিমানা করলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হচ্ছে না, বরং জরিমানা দিয়ে পাহাড় কাটা যেন বৈধ হয়ে গেছে! পাহাড়ি অঞ্চলের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় স্থানীয় ও আদিবাসী জনসাধারণের নিজস্ব উদ্ভাবিত ব্যবস্থা ভিলেজ কমন ফরেস্ট (ভিসিএফ) স¤প্রসারণ করা যেতে পারে। এ প্রক্রিয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী স¤প্রদায় নিজেদের বসতির পাশে লোকজ কায়দায় স্ব-উদ্যোগে প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণ করে এবং এ বন থেকেই নিজেদের জীবিকার চাহিদা মেটায়।
দেশের মোট আয়তনের ৭০ শতাশই জলাভ‚মি। তবে বেশির ভাগ নদী ও জলাভ‚মি সুরক্ষিত নয়। ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মুখে জলাভ‚মির বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য। বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, বন বিভাগ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের যৌথ জরিপ বলছে, জলাভ‚মিগুলোতে দেশে গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ২০ হাজার পরিযায়ী পাখি কম এসেছে। আইইউসিএনের গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু সংরক্ষিত জলাভ‚মিগুলোতে পরিযায়ী পাখির বিচরণ বাড়ছে। তাই সব কটি নদী ও জলাভ‚মি সংরক্ষণ করা গেলে সংশ্লিষ্ট বাস্তুসংস্থানের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা যাবে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক জলাশয় চলনবিল একসময় মৎস্যভান্ডার হিসেবে বিখ্যাত ছিল। তবে অপরিকল্পিত নানা ‘উন্নয়ন’ কর্মকাÐে এখন চলনবিলের অস্তিত্বই সংকটে। প্রায় এক হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিলটি এখন মাত্র প্রায় দুই শ বর্গকিলোমিটারে এসে দাঁড়িয়েছে। বিলের সঙ্গে সংযুক্ত অসংখ্য নদী, খাল, জলাশয় পানিশ‚ন্য হয়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এতে চলনবিলকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকা এবং পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হচ্ছে। অনেক দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়েছে। বঙ্গোপসাগরের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্রের নীল জলরাশির মাঝে রয়েছে বিচিত্র সব সামুদ্রিক সম্পদ। স্থলভাগের প্রায় সমপরিমাণ (৮১ শতাংশ) সম্পদ রয়েছে সমুদ্রের তলদেশে। বঙ্গোপসাগরে প্রায় ৫০০ প্রজাতির মাছ রয়েছে। আছে ২০ প্রজাতির কাঁকড়া, ৩৬ প্রজাতির চিংড়ি, ৩০০ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক।
কিন্তু সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাভাবিক পানিচক্রে বাধা। আন্তদেশীয় পানিপ্রবাহের বৈষম্যের কারণে ভাটির নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে বাঁধ নির্মাণ, দখল বন্ধ করে পানি মজুত ও প্রবাহে বাধা তৈরি করা হচ্ছে। ফলে সাগরের লবণাক্ত পানি নদীতে চলে আসছে। পানিচক্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার কারণে জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। নতুন বিপদ পলিথিন এবং প্লাষ্টিকের পণ্য সমুদ্রের পরিবেশকে দূষণ রুদ্ধ করে ফেলছে।
বনভ‚মিগুলোর জীববৈচিত্র্য যেখানে বিপন্ন, সেখানে সবুজ নগর আশা করা কঠিন। আমাদের শহরগুলোতে ক্রমশ কমছে সবুজের পরিমাণ। ধুলিধূসর দালানকোঠা নগরের অবলম্বন হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর হিসবে চিহৃত করা হয়েছে। এশহরে কংক্রিটের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সে (বিআইপি) মতে, গত ২০ বছরে সবুজে আচ্ছাদিত এলাকার পরিমাণ কমেছে ৩৭ শতাংশ। বর্তমান ঢাকায় সবুজের পরিমাণের আয়তন ৯.২ শতাংশ।
২০ থেকে ২৫ বছরে শহরগুলোর পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থারও আশানুরূপ উন্নয়ন হয়নি। দেশের নাগরিক সুযোগ-সুবিধায় সবচেয়ে গুরুত্ব পাওয়া শহর ঢাকায় মাত্র ২০ শতাংশ পয়োনিষ্কাশন পাইপলাইন রয়েছে। দেশের পয়োবর্জ্যের ২ শতাংশ পরিশোধন করা হয় আর বাকি বর্জ্য উন্মুক্ত জলাশয়ে মিশছে। যার ফলে দূষণে জর্জরিত হয়ে পড়েছে নদী-নালা এবং সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থান। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর এলাকার পাশের খাল, বিল, নদী অবৈধ দখল এবং আবর্জনা ও রাসায়নিক বর্জ্য ইত্যাদি কারণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। তথ্য মতে, ঢাকায় ৬৫টি খাল রয়েছে। তবে ৪৩টি খাল অবৈধ দখলে এবং ২৪টি খালে হাটু পানি।
জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুসংস্থানের বর্তমান নেতিবাচক প্রবণতা রুখতে এবং করোনার মতো মহামারির অভিঘাত থেকে টেকসই পুনরুদ্ধারে নতুন সুনির্দিষ্ট পথনকশা নির্ধারণ দরকার। প্রথমত, এতে সমাজের সব অংশীজনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সরকারের সব বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থাকে নিয়ে সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে। তৃতীয়ত, যেহেতু বেশ কিছু কার্যকারণ আন্তর্জাতিক, এ প্রক্রিয়ায় বিশ্বের সব রাষ্ট্র, বৈশ্বিক ও বহুজাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহকে যুক্ত করতে হবে।
পথনকশা বাস্তবায়নে বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্যের বর্তমান সঠিক অবস্থা জানা থাকলে সুনির্দিষ্ট কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা যায়। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই অভীষ্ট অর্জনে দেশের মোট স্থলভ‚মির ৩০ শতাংশ এবং জলভ‚মির ৩০ শতাংশের (৩০:৩০:৩০) সংরক্ষণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত লোকজ জ্ঞানের সঙ্গে বিজ্ঞানভিত্তিক জ্ঞানের সমন্বয় করে পরিকল্পনা সাজানো দরকার।
পৃথিবীব্যাপী প্রতিবেশ রক্ষায় লোকায়ত জ্ঞান, স্থানীয় সংরক্ষণ পদ্ধতি, জনগোষ্ঠীভিত্তিক সংরক্ষণ উদ্যোগগুলো বড় ভ‚মিকা রাখছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। তৃতীয়ত, স্থানীয় ও আঞ্চলিক সুরক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলতে হবে। চতুর্থত, প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা এবং সবুজ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ওপর জোর দেওয়ার বিকল্প নেই। সবচেয়ে বড় কথা, স্বাধীন, প্রাণ-প্রকৃতিকেন্দ্রিক ও জবাবদিহিম‚লক মনিটরিং ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং তবেই একটি ভারসাম্যপ‚র্ণ, সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্য আকাঙ্ক্ষিত আরণ্যক’ পরিবেশ তৈরি সম্ভব।
সময়/তান