শিশুর সারা শরীরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার স্ত্রীর নৃশংসতা - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Saturday, June 12, 2021

শিশুর সারা শরীরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার স্ত্রীর নৃশংসতা


 


সময় সংবাদ ডেস্কঃ


গৃহকর্মী সুমি আক্তার। বয়স মাত্র ১১ বছর। কাজের পাশাপাশি লেখাপড়া শেখানোর কথা থাকলেও দুই মাস যেতে না যেতেই শিশুটির ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে শিশুটি।

গৃহকর্মীর ওপর অমানবিক নির্যাতনের এমনই অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবিএম শাহিনুজ্জামান শিশিরের স্ত্রী আশরাফী জেমির বিরুদ্ধে।


নির্যাতনের শিকার সুমির বাড়ি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সে উপজেলা সদরের দর্জিপাড়া এলাকার দবিবরুল ইসলামের মেয়ে। শিশুটি তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।


নির্যাতনের শিকার শিশু সুমি জানায়, টানা এক সপ্তাহ ধরে তাকে মারধর করেন গৃহকর্ত্রী জেমি। শরীরের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তিনি আঘাত করেননি। সারা শরীরে জখমের কালো দাগ রয়েছে। তবে ওই পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার দাবি রোগের কারণে শিশুটির হাতে পায়ে দাগ হয়ে

শিশুটির স্বজনরা জানান, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া সুমি আক্তারকে আড়াই মাস আগে গৃহকর্মী হিসেবে মানিকগঞ্জে নিয়ে যান তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহিনুজ্জামান শিশির। নেয়ার পর শিশুটির ওপর ভারী কাজ চাপিয়ে দেন শিশিদের স্ত্রী আশরাফী জেমি। ভালোভাবে কাজ করতে না পারলেই করতেন মারধর।


১৫ দিন আগে হাত-পা বেঁধে সুমিকে মারধর করেন জেমি। এমনকি খাটের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। তার চিৎকারে একপর্যায়ে স্থানীয়রা এসে উদ্ধার করে। পরে শিশুটি বাবার কাছে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। এরপর সোমবার সন্ধ্যায় সুমিকে গাড়িতে তুলে দেন শিশির। মঙ্গলবার সকালে শিশুটি তেঁতুলিয়া পৌঁছায়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। মারধরের কারণে হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে বলে দাবি শিশুটির পরিবারের।


নির্যাতনের শিকার সুমি আক্তার বলেন, আমাকে নেয়ার পর থেকে ভারী ভারী কাজ করতে দিতেন জেমি। কাজ করতে না পারলে মারধর করতেন। ১৫ দিন আগে আমার হাত-পা বেঁধে রুটি বানানোর বেলন দিয়ে মারধর করেন জেমি। প্লাস দিয়ে আমার দাঁত তুলে ফেলতে চাইলে বাথরুমে গিয়ে দরজা আটকে দেই। তখন তারা আমাকে বাথরুমেই আটকে রাখেন।


সুমির বাবা দবিরুল ইসলাম বলেন, ওই কর্মকর্তার কোনো সন্তান নেই। তারা আমার মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো লেখাপড়া শিখিয়ে বড় করানোর জন্য নিয়ে যান। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই তারা আমার মেয়ের এই হাল করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমি আমার মেয়েকে নির্যাতনের বিচার চাই। 


সিংগাইর উপজেলার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এবিএম শাহিনুজ্জামান শিশির বলেন, সুমিকে আমরা খুব ভালোভাবেই রাখতাম। কিন্তু হঠাৎ সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি তাকে ডাক্তার দেখিয়েছি। ডাক্তার বলেছে যে তার এলার্জির মতো সমস্যা রয়েছে। তাই শরীরে কালো কালো দাগ পড়েছে।


তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি আবু সায়েম মিয়া বলেন, শিশুটির ওপর নির্যাতনের বিষয়ে মামলা করতে হলে ঘটনাস্থল মানিকগঞ্জের সিংগাইরে করতে হবে। তবে এখান থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।

No comments: