সময় সংবাদ ডেস্কঃ
দিনশেষে সারা দিনের গল্পটা বন্ধুকেই বলা হয়। প্রথম প্রেম কিংবা মন ভাঙার গল্প, এ সবই নিজের বন্ধুর সঙ্গেই শেয়ার করে থাকি। বন্ধুত্ব এমনই এক সম্পর্ক- যা এক জনকে আরেকজনের সঙ্গে মনের বন্ধনে আবদ্ধ করে। সমমনা লোকেরাই সফলভাবে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে পারেন। এটা আমাদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে গড়ে উঠতে পারে। সাধারণত একই বয়স, চিন্তাধারা এবং একই মেজাজের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস পালিত হয়। তবে ভারত, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অগস্ট মাসের প্রথম রবিবার বন্ধু দিবস হিসেবে চিহ্নিত।
বন্ধু বা বন্ধুত্ব দিবস ঘোষণার উত্পত্তি বা কারণটা ঠিক কী, তা সঠিকভাবে বলা মুশকিল। তবে তত্কালীণ রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা অর্থাত্ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা, বিশৃঙ্খলা ও হিংস্রতা মানুষের মধ্যে অনেকটাই বন্ধুর অভাব তৈরি করেছিলো বলে অনেকের অভিমত। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধু দিবস পালন করার ধারণা এসেছিল বলেই মনে করেন অনেকে।
ইতিহাস বলছে, ১৯৩০ সালে হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল বন্ধুত্ব দিবসের আয়োজন করেন। ২ আগস্ট এই দিনটি পালনের আয়োজন করেন, যাতে সবাই একসঙ্গে মিলে বন্ধুত্বের উৎসব পালন করে। তবে খুব তাড়াতাড়ি সবাই বুঝতে পারেন যে এটি ‘গ্রিটিংস কার্ড’ বিক্রির কৌশল।
অনেকের মতে, ১৯৩৫ সালে আমেরিকান সরকার এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। দিনটি ছিল আগস্টের প্রথম শনিবার। তার প্রতিবাদে পরদিন ওই ব্যক্তির এক বন্ধু আত্মহত্যা করেন। এরপর থেকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে বন্ধুদের অবদানের প্রতি সম্মান জানাতে আমেরিকান কংগ্রেসে ১৯৩৫ সালে আগস্টের প্রথম রোববারকে বন্ধু দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই থেকেই বন্ধুত্ব দিবস খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস-এ রুপ লাভ করে।
১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধুত্ব দিবস পালনের চিন্তা ডঃ র্যামন আর্টেমিও ব্রাকোর মাথায় আসে। প্যারাগুয়ে শহরের পুয়ের্তো পিনাস্কোয়ে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে নৈশভোজে বসেছিলেন তিনি। তখনই বন্ধুদের মেরি গ্রুপ ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডকে পথ ছেড়ে দেয়। এই সংস্থাটি জাতি, বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ নির্বিশেষে নিঃস্বার্থ ও মানবদরদী বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে।
২০১১ সালের ২৭ এপ্রিল জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ৩০ জুলাইকে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। এরপর এই দিনটিতে বন্ধুরা একে অপরকে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, কার্ড, উপহার দিয়ে পালন করে থাকেন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে, পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটান।
গাইতে পারেন এই গান-
পুরো পৃথিবী একদিকে আর আমি অন্যদিক
সবাই বলে করছো ভুল আর
তোরা বলিস ঠিক
তোরা ছিলি তোরা আছিস
জানি তোরাই থাকবি
বন্ধু বোঝে আমাকে
বন্ধু আছে আর কি লাগে?