ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় জলাবদ্ধতা নিরসনে কোদাল দিয়ে ড্রেন খননের করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে বর্ষার বর্ষণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এই জলদুর্ভোগ নিরসনে ইউএনও’র তৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণে স্থানীয় আস্থার আলো দেখছে।
অপরিকল্পিত পুকুুর খননের কারণে গত বছর এই এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিল। বিষয়টি ইউএনও’র নজরে আনলে তার উদ্যোগে এবার বর্ষার আগেই কয়েকটি বিল অতিক্রম করে প্রায় ৭ কিলোমিটার নালা খনন করা হয়েছে। যার ফলে ওই এলাকা গুলোতে এবার আগেরমত আর জলাবদ্ধতা হয়নি বলে জানান উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল। ইউএনও’র উদ্দ্যোগে নালা কেটে দেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে স্থানীয় পানিবন্দি মানুষ ও কৃষক। মাহেন্দ্রা এলাকায় প্রায় এক দশক ধরে পানি প্রবাহের খাল দখল করে একটি প্রভাবশালী মহল মাছ চাষ করছিল। যার কারনে বন্ধ হয়েছিল খালের পানির স্বাভাবিক প্রবাহ। জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছিলেন আশপাশের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। কিন্ত এপ্রিলের শুরুতে খালটি দখল মুক্ত করে দেন ইউএনও।
ভালুকগাছি ইউপি চেয়ারম্যান তাকবির হাসান বলেন, গত কয়েক বছরে এলাকার কিছু লোকজন পানি প্রবাহের খাল ভরাট করে দেয়। যার কারণে বিভিন্ন বিলের পানি বেড়ে নিন্মাঞ্চল ডুবে যায়। বিষয়টি স্থানীদের নিয়ে একাধিকবার বসেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা মুক্ত করে দেন। পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডে কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি মাটি ভরাট করে পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল। ইউএনও বিষয়টি জানতে পেরে তৎক্ষনাত লোকজন নিয়ে ড্রেন খননে এগিয়ে আসেন। পরে সদর ইউনিয়নের পীরগাছা এলাকায় অপর একটি নতুন ড্রেন খনন করা হয়।
প্রতিবছর জলাবদ্ধতার কারণে নিচু এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকেন। অনেক চাষিদের ফসলহানি ঘটে। তবে এ বছর ইউএনও’র উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ১০ কিলোমিটার নালা খনন সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে শিলমাড়িয়া ৭ কিলোমিটার, ভালুকগাছি এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার, পুঠিয়া ইউনিয়নের পীরগাছা এলাকায় ২৫০ মিটার ড্রেন খনন করা হয়। পৌরসভার ২ ও ৮ নং ওয়ার্ডের প্রায় ১০০ মিটার। এতে করে প্রায় পাঁচ হাজার চাষিরা উপকৃত হয়েছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূইয়া।
এই এলাকায় জলাবদ্ধতা একদিনে হয়নি। কিছু লোকজন নিজের সুবিধার কথা চিন্তা করে হাজারো মানুষকে দুর্ভোগে ফেলছেন। আমরা ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে সব এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা হয়তো করা যাবে না। তবে শুকনো মৌসুম শুরু হলে স্থায়ী ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সাথে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকদের সার্বিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই মোহাস্মদ আনাছ।