নোয়াখালীতে পরকীয়া প্রেমের বলি পাখি,প্রেমিক গ্রেফতার | সময় সংবাদ

নোয়াখালীতে পরকীয়া প্রেমের বলি পাখি,প্রেমিক গ্রেফতার | সময় সংবাদ

আবু সাঈদ শাকিল,নোয়াখালী প্রতিনিধি: 

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে ডিভোর্সি তরুণী পাখি হত্যার আসল ঘটনা বেরিয়ে এলো অবশেষে। গলাকেটে তরুণীকে হত্যার রোমহর্ষক কাহিনী বেরিয়ে আসে। হত্যার চার দিন পর অভিযুক্ত আসামি জীবনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ফেরদাউস পাখির ২০০৮ সালে প্রথম বিয়ে হয়। সেখানে ৩ বৎসর সংসার করার পর স্বামীর সাথে তার ছাড়াছাড়ি হয়। প্রথম স্বামীর সংসারে তার একটি ৬ বছরের জান্নাত নামের কন্যা সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে পাখির পুনরায় অন্য ব্যক্তির সাথে বিয়ে হয়। ৬ মাস পর ২য় স্বামীর সঙ্গেও তার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর চলতি বছরের ২৯ মে শাহাদাত হোসেন জীবনের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। তারপর হতে দুইজনের মাঝে মাঝে কথা হতো এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের মধ্যে একবার দৈহিক সম্পর্কও হয়। এসময় দুজনই রোমাঞ্চে জড়িয়ে পড়ে। প্রেমিক জীবন বিবাহিত কিন্তু এ বিষয়ে পাখি কিছুই জানতো না । পরবর্তীতে বিবাহিত জেনে পাখি প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দিলে তাকে এড়িয়ে যেতে শুরু করে। 

এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এরপর গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) পরস্পর যোগাযোগ করে সোনাইমুড়ীর পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেতের নির্জন স্থানে দেখা করে। সেখানে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামি তার নিকটে থাকা ছুরি বের করে পাখির গলায় চুরি চালায়। এতে পাখি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য জীবন পাখির গলায় উপর্যুপরি ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে হাত ও পায়ের রগ গোলাকৃতিভাবে কেটে দেয়। গ্রেফতারকৃত আসামি এ চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান স্থানীয় পুলিশ। 

আজ রোববার (১৯ জুন) সকালে সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের একটি সবজি ক্ষেত থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, মোবাইল ও ওড়না উদ্ধার করে। এর আগে, শনিবার বিকেলে উপজেলার দেওটি ইউনিয়নের পিতাম্বরপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে পরকীয়া প্রেমিক শাহাদাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক। 

গ্রেফতারকৃত শাহাদাত হোসেন জীবন (২৪) উপজেলার পিতাম্বরপুর গ্রামের শামছুল আলম দিলসাদের ছেলে। তার বর্ণনায় উঠে আসে প্রেমিকা হত্যার রহস্য। 

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে জান্নাতুল তার বড় বোনের বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর রাত ৮টার পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও তার কোনো খোঁজ পায়নি। পরে বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি সবজি ক্ষেত থেকে পাখির গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাখির ভাই বাদী হয়ে সোনাইমুড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।