![]() |
"টাকার বদলে ‘মানুষ’ বন্ধক, মেলে ইয়াবা | সময় সংবাদ" |
মো. রাকিবুর রহমান, কক্সবাজার থেকে ফিরে
অর্থের প্রয়োজনে জমিজমা কিংবা মূল্যবান জিনিসপত্র বন্ধক রাখে মানুষ। বিষয়টি খুবই সাধারণ। কিন্তু এসবের পরিবর্তে যখন বন্ধক রাখা হয় ‘আস্ত মানুষ’, তখন চোখ কপালে উঠবে যে কারোর। অবিশ্বাস্য হলেও ঘটেছে এমনই ঘটনা। দেশে ইয়াবা আনতে মিয়ানমারে মানুষ বন্ধক রাখছেন কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীরা। আর যতদিন ইয়াবার চালানের টাকা শোধ না হয়, ততদিন সেখানে টর্চারসেলে বন্দির ওপর চলে নির্যাতন।
জানা গেছে, ২০২০ সালের শেষের দিকে মানুষ বন্ধক রেখে ইয়াবা লেনদেনের প্রথা চালু করেন আলোচিত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নবী হোসেন। পাঁচদিন আগে অস্ত্র-ইয়াবাসহ নবী হোসেন গ্রুপের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারের পর মানুষ বন্ধক রেখে ইয়াবার কারবার ও টাকা না পেলে বন্দিদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করেন তারা।
মিয়ানমারের টর্চারসেলে নির্যাতনের শিকার হওয়াদের একজন নুরুল আমিন। তিনি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের চকিদারপাড়া এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। তাকে বন্ধক রেখে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে আসেন এপারের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। পরে টাকা শোধ না করে বন্ধ করে দেন যোগাযোগও। ফলে নুরুল আমিনের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।
নুরুল আমিনকে বন্ধক রেখে ৫০ হাজার ইয়াবা নিয়ে আসেন শহিদুল্লাহ ও মনসুর। যার মূল্য প্রায় ১১ লাখ টাকা। কিন্তু এখনো সেই টাকা দিতে না পারায় সেখানে আটকে আছেন নুরুল আমিন।
নুরুল আমিন পেশায় জেলে। স্থানীয় আলী হোসেনের ট্রলারে কাজ করতেন তিনি। গত ২৭ জুলাই জাল কেনার কথা বলে নুরুল আমিনকে টেকনাফ নিয়ে যান আলী হোসেনের ছেলে শহিদুল্লাহ ও তার সহযোগী মনছুর। সেখান থেকে মিয়ানমারের আকিয়াব শহরের কাছে যান তারা। এরপর সেখানেই নুরুল আমিনকে রেখে উধাও হন দুজন।
নুরুল আমিনের স্বজনদের দাবি, টাকা দিয়ে নুরুল আমিনকে ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছিলেন শহিদুল্লাহ ও মনছুর। কিন্তু তারা তা না করায় জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন নুরুল আমিন। তবে এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শহিদুল্লাহ ও মনছুরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।