ফরিদপুরে ২শ ৫১ কোটি টাকার কুমার নদ পুন:খনন শুরু ! - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৪, ২০১৮

ফরিদপুরে ২শ ৫১ কোটি টাকার কুমার নদ পুন:খনন শুরু !

সময় সংবাদ ডেস্কঃ
১৯৬০ সালের পর এই প্রথম ফরিদপুরের কুমার নদের পুন:খনন কাজ শুরু হয়েছে। স্বাধীনতার পর ফরিদপুর অঞ্চলে গৃহীত বৃহৎ উন্নয়ন প্রকল্প গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। খননের কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসাহ উদ্দীপনা।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর শহরের টেপাখোলার মদরখালী পদ্মা নদী হতে উৎপত্তি হয়ে ফরিদপুর জেলার সদর, নগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী এবং ভাঙ্গা উপজেলার মধ্যে দিয়ে ৭১ কিলো.মিটার পরিভ্রমন করে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলা দিয়ে মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট নৌ-বন্দর হয়ে মাদারীপুরের বিল রুট এ পতিত হয়। কুমার নদের ১৩১ কিলো.মিটার দীর্ঘ পথ রয়েছে।
সোমবার দুপুরের সরেজমিনে ফরিদপুর সদরের চুনাঘাটা ও আম্বিকাপুর এলাকার নদে খনন কাজ দেখতে গেলে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৫টি এক্সকোভেটার যন্ত্র দিয়ে নদের তল দেশ থেকে মাটি তোলার কাজ করছে।
অম্বিকাপুর এলাকার গৃহিনী সুমি, মাজেদুর রহমান সঙ্গে নদ খননের বিষয়ে কথা হলে তারা জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে এই নদে শুস্ক মৌসুমে কোনো পানি থাকে না। বাচ্চারা বিকালে নদে খেলা-ধুলা করে। তারা জানান, এখন যেহেতু সরকার কুমার খনন শুরু করেছে তাহলে পানি পাবো। তাদের দাবী নদ খনেন কাজটি যেনু সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মো. সুলতান মাহমুদ জানান “ প্রকল্পের আওতায় নদী খনন ও রেগুলেটর নির্মানের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে কমপক্ষে ৬ ফুট গভীরতায় পানি প্রবাহ রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটি বাস্তাবায়িত হলে কৃষি ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত পানির সমস্যার সমাধান হবে ।”
তিনি বলেন, “ কুমান নদের ২শত ৫১ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৩১ কিলো.মিটার কুমার নদে খনন প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়েছে গত ২১ এপ্রিল। ফরিদপুর অঞ্চলের ৬টি উপজেলা উপর দিয়ে সর্পিল আকারে বয়ে যাওয়া এই কুমার বিস্তৃণ এই জনপদের জীবন-জীবিকায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখে আসছে।”
ফরিদপুরের অ্যাড. গাজী শাহিদুজ্জামান লিটন জানান, দীর্ঘ দিনধরে কুমান নদের পরিচর্যা না হওয়ায় নদটি তার ঐহিত্য ও গৌরব হারিয়ে ছিলো। নদের বেশির অংশেরই শুকিয়ে গিয়ে শীত মৌসুমে পরিণত হয়েছিলো ফসলী ক্ষেতে। সম্প্রতি ফরিদপুর সদর আসনের এমপি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন নদের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার যে কাজ শুরু করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।
বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর তত্বাবধানে পানি উন্নয়ন বোর্ড এই প্রকল্পটি বাস্তাবায়নের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে আগামী ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর প্রতিষ্ঠান (ডকেয়া ডান ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্স লিমিটেড) এর মাধ্যমে খনন কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ফরিদপুরের সদর, নগরকান্দা, সালথা, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা এবং পাশ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ২৩ হাজার ৫শ হেক্টর কৃষি জমির সেচের আওতায় আসবে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া নদ খননের বিষয়ে বলেন, ফরিদপুরবাসী দীর্ঘ দিনের দাবি ছিলো কুমার নদ খনন। স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর চেষ্টা অবশেষে এ জেলার মানুষ তাদের কাঙ্খিত আশা বাস্তবায়ন হতে যাচেছ। তিনি জানান, দেশের অন্য জেলা গুলোর মতো ফরিদপুরের পানি লেভেল নিচে নেমে গেছে, এই কারনে সঠিক সময়ে এই নদ খনন কাজ শুরু হয়েছে। এই খনন কাজ শেষ হলে জেলার জীবন-মানের অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটবে।
ফরিদপুর সদর আসনের এমপি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ান খন্দকার মোশাররফ হোসেন এই প্রসঙ্গে বলেন, “দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় সারা দেশে দেখা দিয়েছে পানির সংকট, এই কারনেই সরকার প্রাকৃতিক ভাসাম্য রক্ষার উপর জোর দিয়ে নদ-নদী খননের পরিকল্পনা নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে ফরিদপুর অঞ্চলের কুমার নদের খননের কাজ শুরু করেছ্”ি ।
তিনি বলেন, এই নদ সম্পন্ন খনন কাজ শেষ হলে ফরিদপুরের ৫টি উপজেলার মানুষ তাদের দৈনন্দিন কাজ কতে পারবে। পাশা-পাশি কৃষি ক্ষেতে উৎপাদন বাড়াতে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তিনি ।”
মন্ত্রী আরো বলেন, “ নদের তীরবর্তী বসবাসকারি নারীরা তাদের ঘর-গৃহস্থালী কাজসহ গোসল করতে পারে সেজন্য ৬১টি পাকা ঘাট নির্মাণ করা হবে, এছাড়াও ফরিদপুর শহরতলীর হারুকান্দিতে একটি বড় পরিসরে শ্মশান ঘাট করা হবে।”

Post Top Ad

Responsive Ads Here