ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মোঃ ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে সরকারী রাস্তার প্রায় কোটি টাকার গাছ কেটে নেয়া ও সরকারী বালু মহলের লিজকৃত বালু উত্তোলনে বাধা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গাছকাটার বিষয়টি ও বালু মহলের লিজকৃত বালু উত্তোলনে বাধা দেয়া নিয়ে এলাকার জনগনের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তার এসব কাজকর্মের কারনে এলাকায় যেকোন মূর্হতে বড় ধরনের ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারনা করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, ঘোষপুর ইউনিয়নের সাতৈর-ভীমপুর সড়কের রতনদিয়া বাজার থেকে দক্ষিন খামারপাড়া পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের ৮/১০টি মূল্যবান শিশু ও রেইনট্রি গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। গাছ কাটার তদারকি করছেন ৩নং ওয়ার্ডের চৌকিদার মোঃ সাদেক আলী ফকির। এসব রাস্তার গাছ গুলোর বেশীর ভাগই কেটে নেয়া হয়েছে। বাকি গাছ গুলো এখনো কাটা হচ্ছে। বুধবার বিকেলে সরোজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাতৈর-ভীমপুর এলজিইডি সড়কের বেশকিছু গাছ কাটা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য জামাল জানান, ফারুক চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার বাহিনী গাছ গুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন কয়েকমাসে চেয়ারম্যান প্রায় কোটি টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেছে। রতনদিয়া বাজারের পাশ থেকে একটি রেইনট্রি ও দুইটি শিশু গাছ এবং দক্ষিন খামারপাড়া থেকে একটি রেইনট্রি ও চারটি শিশু গাছ ইতোমধ্যেই কেটে নেয়া হয়েছে। বাকি গাছ গুলো কাটা হচ্ছে সময় বুঝে।
স্থানীয় রতনদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস সামাদ জানান, মূল্যবান গাছ গুলো চেয়ারম্যানের নির্দেশে চৌকিদার শ্রমিক দিয়ে কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিন খামারপাড়া গ্রামের আবুল মিয়া জানান, রাস্তার পাশের অনেক গাছ আমি নিজে লাগিয়েছি। আমার কাছে না শুনে চেয়ারম্যান গাছগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে চেয়ারম্যান ফারুক চন্ডীবর্দি এলাকার মধুমতি নদীতে বালু মহলের ইজারাকারীদের বালু উত্তোলন একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। তার নিজে বালু মহলের ইজারা না পাওযায় তিনি এমনটি করছেন বলে জানিয়েছেন ইজারাকারীরা।
এ বিষয়ে জামাল মেম্বার বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আট লাখ টাকা দিয়ে বালু মহলের ইজারা নিয়েছি। ইজারা পাওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান আমাদের নদী থেকে বালু মহলের বালু কাটতে দিচ্ছে না। এখন প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গা জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন চেয়ারম্যানের কারনে বড় ধরনের লোকশানে পড়তে যাচ্ছি আমরা।
এ বিষয়ে জামাল মেম্বার বলেন, আমরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আট লাখ টাকা দিয়ে বালু মহলের ইজারা নিয়েছি। ইজারা পাওয়ার পর থেকে চেয়ারম্যান আমাদের নদী থেকে বালু মহলের বালু কাটতে দিচ্ছে না। এখন প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গা জানিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি বলেন চেয়ারম্যানের কারনে বড় ধরনের লোকশানে পড়তে যাচ্ছি আমরা।
সড়কের পাশ থেকে সরকারি গাছ কেটে নেয়ার বিষয়ে ঘোষপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক হোসেন বলেন, কেউ বলতে পারবে না আমি রাস্তা থেকে গাছ কেটেছি। আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাসাঁনো হচ্ছে। বালু মহলে বাধা প্রদানের ব্যাপারে তিনি বলেন, এরকম কোন প্রশ্নই আসে না আমি বাধা প্রধান করেছি। স্থানীয় তহশিলদার ইউনিয়ন পরিষদের দুইজন চৌকিদার নিয়ে বাধা প্রধান করেছে। তিনি বলেন বালু মহল সাত লাখ টাকায় আমার পাওয়ার কথা ছিলো, কি কারনে পেলাম না বুঝলাম না। তিনি আরো বলেন বালু মহলের ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বালু কাটার ব্যাপারে একটি নিষেধ আছে।
সরকারি গাছ কেটে নেয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, গাছ কাটার বিষয়টি আমি জানার পর চেয়ারম্যানকে ইউনিয়র পরিষদ এলাকা থেকে উপজেলায় গাছ নিয়ে আসার কথা বলেছি। পরবর্তীতে তদন্ত করে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বালু মহলের ব্যাপারে তিনি বলেন এ ব্যাপারে যথাযথ অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
No comments:
Post a Comment