নিরাপত্তার চাদরে ভোলা :পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত আসামী ৫ হাজার। - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, অক্টোবর ২২, ২০১৯

নিরাপত্তার চাদরে ভোলা :পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাত আসামী ৫ হাজার।

ভোলা সংবাদাতাঃ
ভোলার বোরহান উদ্দিনে হযরত মোহাম্মদ (সা:) কে নিয়ে ফেইসবুকে উদ্দেশ্যমুলক "ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোষ্ট দেয়া কেন্দ্র করে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও পুলিশসহ দেড়শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৫হাজার জনকে আসামী করে মামলা হওয়ার খবর পাওয়া গিয়াছে।এ ঘটনায় রোববার রাতে বোরহানউদ্দিন থানার এসআই আজিজুল হক বাদী হয়ে ৪ থেকে ৫ হাজার অজ্ঞাত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। যার মামলা নং ১৮ তাং ২০/১০/২০১৯। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোরহানউদ্দিন থানার ওসি ম.এনামুল হক।

উল্লেখ্য  রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বোরহানউদ্দিন পৌর শহরের সদর ঈদগাহ জামে মসজিদ মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে তাওহিদি জনতা।

বোরহানউদ্দিনে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে ৪ জন নিহত ও পুলিশসহ দেড়শতাধিক আহত হওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোলার ইসলামি তাওহিদি জনতা।

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ঘটনায় জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ভোলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্তএ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোলা সদর ও বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ডসহ ৪ স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করে প্রশাসন।

এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে সোমবার সকাল ১১ টায় ৬ দফা দাবি নিয়ে ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে সমাবেশের ডাক দেন ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ। তার পর রোববার রাত ১১ টা থেকে ভোলার আন্তঃজেলা সড়কে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সকল যান চলাচল বন্ধ করে দেন প্রশাসন। বাস বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভোলা জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাবেশের অতুমতি না পেয়ে সোমবার সকালে এক পর্যায়  বাধার মুখে পরে সমাবেশ উর্ধ্ব করে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

‘ইসলাম নিয়ে ব্যঙ্গ ও কটূক্তিকারীর’ বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আইন পাসসহ ছয় দফা দাবি আদায়ে ভোলায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদ’। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয় সম্মেলনে।

এতে লিখিত বক্তব্যে ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশকে দায়ী করে ভোলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার কাউসার ও বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মু এনামুল হককে প্রত্যাহার দাবি তুলেন। তদন্ত সাপেক্ষে গুলি করার হুকুমদাতা ও গুলীবর্ষণ কারীদেরকে আইনের আওতায় আনা, মহানবী (সঃ) ও মহান আল্লাহ তায়ালা এবং ইসলাম নিয়ে ব্যাঙ্গ ও কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির আইন করা, বিপ্লব চন্দ্র শুভকে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেয়া, বোরহানউদ্দিনের সংঘর্ষে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের পরিবারকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপুরণ দেয়া, সরকারী খরচে আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যাবস্থা করা এবং ঘটনায় গ্রেপ্ততার কৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া ও হয়রানী মূলক মামলা দিয়ে কাউকে আটক না করার দাবী তুলেন।

এছাড়াও আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

সম্মেলনে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সব উপজেলায় বিক্ষোভ, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মানববন্ধন ও শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মোনাজাত করা হবে বলে কর্মসূচীতে ঘোষণা করা হয়।

এসময় ওই পরিষদের আহ্বায়ক বশির উদ্দিন, সদস্য সচিব তাজউদ্দিনসহ পরিষদের নেতারা বক্তব্য রাখেন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন যুগ্ন আহবায় মাওলানা মোঃ তৈয়বুর রহমান, সদস্য সচীব মাওলানা মোঃ তাজউদ্দিন, যুগ্ন সচীব মোঃ মিজানুর রহমান সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এসময় ভোলা প্রেসক্লাব চত্বরে হাজার হাজার মুসলিম জনতা জড়ো হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে বিভিন্ন শ্লোগান নিয়ে ভোলা পৌর শহরের প্রদান প্রদান সড়কে বিক্ষোভ করেন তারা। সেখানে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

ভোলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার বলেন, যেকোনো অপ্রিতিকর ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জেলায় চার প্লাটুন বিজিবি, দুই প্লাটুন র‌্যাব ও বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ফেইসবুকে এ কটূক্তির ঘটনায় হিন্দু বিপ্লব চন্দ্র শুভ, মো: শাকিব, লিমন সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় তাদেরকে ভোলা আদালতে করা হয়েছে। যার মামলা নং ১৭।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে মহানবীকে (সা.) কটূক্তির অভিযোগে বরিবার সকাল ১১ টায় ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ঈদগাহ মসজিদ চত্বরে তৌহিদি জনতার ব্যানারে রোববার সকালে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ডাকা হয়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে সকাল ১০টার মধ্যেই সংক্ষিপ্ত মোনাজাতের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করা হলে পরে আসা লোকজন মোনাজাত পরিচালনাকারী দুই ইমামের ওপর চড়াও হয়। এতে বাধা দিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তাওহিদি জনতা। এ সময় পুলিশ গুলি ছুড়লে চারজন নিহত হন। সংঘর্ষে পুলিশসহ দেড়শতাধিক মানুষ আহত হন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here