বিচার প্রার্থী সাবেক সেনা সদস্যকে এজলাস কক্ষে পেটালেন আ"লীগ নেতা" ইউপি চেয়ারম্যান। - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯

বিচার প্রার্থী সাবেক সেনা সদস্যকে এজলাস কক্ষে পেটালেন আ"লীগ নেতা" ইউপি চেয়ারম্যান।



নিরেন দাস(জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে সালিস চলাকালে বিচার প্রার্থী সাবেক সেনা সদস্য সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্সকরপোরাল সহ কয়েকজন কে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে জয়পুরহাট জেলা আওয়ামীলীগ এর কোষাধ্যক্ষ ও রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহসান কবির এ্যাপ্লবের বিরুদ্ধে।

গত বুধবার আনুমানিক সময় বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে রুকিন্দীপুর ইউনিয়ন পরিষদ আদালতের এজলাস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। তারপর উভয়পক্ষের বিচার প্রার্থীরা আহত হয়ে আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।


এ ঘটনায় মামলা বা মিডিয়ায় কিছু না বলার জন্য হুমকির মধ্যে রয়েছে বিচারপ্রার্থী সাবেক সেনা সদস্য রফিকুলের পরিবার তারা প্রতিবেদকদের মাধ্যমে নিরাপত্তাও চেয়েছেন। 

ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আওয়ালগাড়ী মীরপাড়া গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, তার ভাই আনোয়ার ও আনিসুরের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী চাচাতো ভাই দুদু মিঁয়া ও ফিরোজ হোসেনের পরিবারের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল। তাদের বিরোধ সালিসের মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করা হয়। এরপর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উভয়পক্ষকে ৪ ডিসেম্বর ডাকা হয়। ইউপি

চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আহসান কবির এ্যাপ্লবের উপস্থিতিতে সালিস চলাকালে উভয়পক্ষের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের হাতাহাতির সময় একজন বিচারপ্রার্থী হাতে আঘাত পান। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত না করে সালিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে চেয়ারম্যান সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল সহ তার পরিবারের ৫ জন কে মেরে আহত করেন। আহত অবস্থায় রফিকুল, আনোয়ার ও আনিসুর তারা আক্কেলপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে আসেন এবং ফিরোজ ও তার পরিবারের লোকজন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।


এ ঘটনায় সাবেক সেনা সদস্য রফিকুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বলেন, আমরা চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চেয়েছি। কিন্তু তিনি তা না করে সালিসের ঘরের দরজা বন্ধ করে চেয়ারম্যান সহ মেম্বাররা লাঠি দিয়ে আমাকে ও আমার ভাইদের বেধড়ক মারধর করে এবং আমরা হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানেও আমাদের তার লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়।
রফিকুলের স্ত্রী রুমা পারভীন, মেয়ে রুকসানা পারভীন, আনোয়ারের স্ত্রী ডেইজী আক্তার সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বলেন, চেয়ারম্যানের লোকজন বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে যে থানা বা মিডিয়ায় কোনো কিছু জানালে পুরো পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলবে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ রকম অন্যায়কারী চেয়ারম্যানের বিচার করে তার অপসারণ চাই বলেও দাবী করেন তারা।


আহত ফিরোজ হোসেন ও দুদু মিঁয়া বলেন, জমি-জমার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে সালিস চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। আমরা জমির বিরোধ মিটিয়ে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।
এলাকাবাসী মনতাজ, আবু কালাম, বেনজীর আহমেদ সহ আরও অনেকেই বলেন, চেয়ারম্যান যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে এর সুষ্ঠু বিচার হতে হবে।

বিচারপ্রার্থীদের মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিক বলেন, চেয়ারম্যান দরবারে থাকলে আমাদের বলার কিছু থাকে না। সেই দিন বিশৃঙ্খলা ঘটায় এমনটা হয়েছে।


অভিযুক্ত জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও রুকিন্দীপুর ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির এ্যাপ্লবের সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, বিচারের দিন দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি শান্ত করার জন্য উভয়পক্ষকেই ‘দু-চারটা বাড়ি’ মারা হয়েছে। ঘরের দরজা বন্ধ করে মারার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ কথা যে বলেছে তারা মসজিদের টাকাও মেরে খাইছে, আমি মিথ্যা কথা বলি না তাদের অভিযুক্ত পুরোটাই মিথ্যা।

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকরা আক্কেলপুর থানার (ওসি) মোঃ আবু ওবায়েদ সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি মাত্র।কিন্তু কেউ অভিযোগ দেয়নি অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরে আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মোঃ জাকিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গ্রাম আদালতের বিচারে মারধরের কোনো আইনি বিধান নেই।

Post Top Ad

Responsive Ads Here