মেহের আমজাদ,মেহেরপুর//
বোমা ভেবে বালু ভর্তি প্লাস্টিক পাইপ ঘিরে রাখার পর অবশেষে তৃতীয় দিনে নিষ্ক্রিয় করা হলো সেই বোমাটি।
মেহেরপুর জন স্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সামনে পড়ে থাকা সার্কিটযুক্ত বোমাটি দুইদিন ধরে পুলিশ ঘিরে রাখার পর গতকাল শনিবার সকালে নিস্ক্রিয় করা হয়েছে।এর আগে ঢাকা থেকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের দু’টি দল মেহেরপুর আসে।পরিদর্শক মোদাচ্ছের কাউছারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বোমা বিশেষজ্ঞ দল ও পরিদর্শক ইসরাফিল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের অপর একটি তদন্ত দল ঘটনাস্থলে আসে। সকাল ৮টার দিকে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক ইসরাফিল ভূঁইয়ার নেতৃত্বে ৬ সদস্যের তদন্ত দল কাজ শুরু করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর পরিদর্শক মোদাচ্ছের কাউছারের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বোমা বিশেষজ্ঞ দল গতকাল শনিবার সকাল ১০ টা ২১ মিনিটের সময় বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটান।
মেহেরপুর পুলিশ জানিয়েছে মেহেরপুরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্ততরের সামনে সার্কিটযুক্ত বোমা সাদৃশ্য বস্তুটি আসলে বোমা নয়, এটি বালু ভর্তি প্লাস্টিক পাইপ। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য ওই স্থানে বোমা সাদৃশ বালু ভর্তি প্লাস্টিক পাইপ ফেলে রেখেছিল কেউ। বিষয়টি নজরে এলে গত বৃহস্পতিবার (০৫ ডিসেম্বর) থেকে এটিকে ঘিরে রাখে পুলিশ। বোমা নিষ্ক্রিয় করার পর গতকাল শনিবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন মেহেরপুরের পুলিশ সুপার এস.এম মুরাদ আলী।
পুলিশ সুপার এস.এম মুরাদ আলী বলেন, গতকাল শনিবার সকালে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছে এটি বোমা নয়, বালুর ভর্তি প্লাস্টিক পাইপ। আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কেউ ব্যাগের ভেতর বোমা সাদৃশ বস্তুটি ফেলে রেখেছিল।তিনি বলেন, লাল স্কচটেপ দিয়ে মুড়িয়ে বোমা সাদৃশ্য বস্তুটি তৈরি করা হয়। তাতে মোবাইল ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক যন্ত্র দিয়ে এমনভাবে রাখা হয়েছে যে কেউ দেখলে ইলেকট্রনিকস ডিভাইসযুক্ত বোমা বলে সন্দেহ করবে। ওখানকার ঘটনাটি ছিল এমনই। আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এমন কাজ করেছে কেউ। পুলিশ সুপার এস.এম মুরাদ আলী আরও বলেন, মূলত বোমা সাদৃশ্য বস্তুর সঙ্গে ‘আল কায়েদা’ নাম দিয়ে লেখা একটি চিরকুট থাকার কারণে বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়। সেজন্য বোমা বিশেষজ্ঞ দলকে ডাকা হয়। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিট ঘটনাস্থলে আসতে দেরি করায় এটি নিষ্ক্রিয় করতে সময় লেগেছে। অবশেষে তারা আমাদের জানিয়েছে এটি বোমা নয়, বালুর প্যাকেট। আর এখানে ‘আল কায়েদার’ কোনো অস্তিত্ব নেই। এরপরও বিশষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখব আমরা। এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করবে পুলিশ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, কাউন্টার টেরোরিজম এর সদস্যরা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে একটি বোমা দিয়ে সেটি বিস্ফোরণ ঘটান তবে সেখানে ফেলে রাখা বোমা সাদৃশ্য বস্তুর শব্দ এটি ছিল না। শব্দটি ছিল বোমা বিস্ফোরণ ঘটাবার জন্য আরেকটি রাখা বোমা যেটি কাউন্টার টেরোরিজম সদস্যরা আগেরটির সাথে সঙ্গে সংযুক্ত করে বিস্ফোরণ ঘটান। বোমাটি বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বালু ঝরে পড়তে দেখা গেছে। আসলে ওটা বোমা ছিলনা। উল্লেখ্য,গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেহেরপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্ততরের কর্মচারীরা গেটের পাশে প্রাচীরের সঙ্গে একটি ব্যাগে বোমা সাদৃশ্য বস্তু দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে এসে ব্যাগের ভেতরে একটি সার্কিটযুক্ত বোমা সাদৃশ বস্তু দেখতে পায়। তারপর থেকে জায়গাটি ঘিরে রাখে পুলিশ। একই স্থান থেকে আনছারল ইসলাম (আল কায়েদা) নামের একটি সংগঠনের হাতে লেখা চিরকুটও উদ্ধার করে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment