দখলের কারণে সংকুচিত ঝিনাইদহের চিত্রা নদী - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ০৪, ২০২০

দখলের কারণে সংকুচিত ঝিনাইদহের চিত্রা নদী

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ  
চিত্রা নদীর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ অংশে পুকুর আছে ৮টি। এক গ্রামের ৮ দখলদার দীর্ঘদিন পুকুরগুলো কেটে সেখানে মাছের চাষ করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের তালিকায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। অবশ্য এই নদীর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ছাড়াও সদরের অংশসহ ৪৩ কিলোমিটারে আরো বেশ কিছু দখলদার রয়েছেন। নদীর মধ্যে যাদের পুকুর, বাগান এমনকি বাড়িঘরও রয়েছে তারা তালিকায় আসেননি।

অবশ্য চিত্রা বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা বলছেন, এটা হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়। এই নদীর জায়গা দখল করে বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে নদীর মধ্যে। বড় বড় গাছ জন্মেছে চিত্রার বুকে। যেগুলো অপসারণের দাবিতে তারা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সেগুলো তালিকায় নেই এটা জানতে পেরে তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন।

ঝিনাইদহ জেলার দক্ষিণ পাশ অর্থাৎ কালীগঞ্জ উপজেলা ও সদরের আংশিক দিয়ে বয়ে গেছে চিত্রা নদী। এই নদীটি চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনার নি¤œস্থল থেকে উৎপত্তি হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ঝিনাইদহ হয়ে প্রবেশ করেছে। নদীটি আরো দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ হয়ে মাগুরার শালিখা হয়ে নবগঙ্গায় মিশেছে। ১৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটির ঝিনাইদহ সদর অংশ রয়েছে ১৩ কিলোমিটার আর কালীগঞ্জ উপজেলা প্রায় ৩০ কিলোমিটার। এক সময় এই নদীতে লঞ্চ-স্টিমার সবই চলতো। ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনে নদী ব্যবহার হতো। নদীর ঘাটকে ঘিরে গড়ে ওঠে কালীগঞ্জ শহরটি। বর্তমানে নদীটি দখল হয়ে সংকুচিত হয়ে গেছে।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের মেইন বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে চিত্রা নদীর ব্রিজের কাছে নির্মাণ শুরু হয়েছিল একটি বিশাল পাকা ভবন। তা আপাতত বন্ধ আছে। এরই কিছুটা পশ্চিমে শিবনগর গ্রামের নিচে জনৈক মুক্তার হোসেন নদীর জায়গায় তৈরি করেন মুরগির ফার্ম। শহরের মধ্যে নদীর ওপরের সেতুটির (পুরাতন সেতু) দুইপাশে মার্কেট গড়ে উঠেছে।

শুধু দখল নয়, নদীতে ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। ক্লিনিকের বর্জ্য, শহরের ময়লা ফেলে পানি দূষণ করা হচ্ছে। কুকুর-বিড়াল মারা যাওয়ার পরও বস্তায় ভরে নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।

নদীর জায়গায় মুরগির ফার্ম নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত মুক্তার হোসেনের দাবি, এটা তারই জায়গা। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে ঘরটি নির্মাণ করেছেন। নিশ্চিন্তপুর এলাকার নিচে নদীর মাঝে পুকুর রয়েছে কালীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা তারিকুর রহমানের। তিনি অবশ্য জানান, নদীর ওপর তাদের জমি রয়েছে। সেখানে পাড় ঘেঁষে পুকুর তৈরি করেছেন। নদীর মধ্যে পুকুরের কিছু অংশ যেতে পারে।

চিত্রা বাঁচাও আন্দোলনের আহ্বায়ক কালীগঞ্জ শহরের বাসিন্দা শিবুপদ বিশ্বাস জানান, দখলের পর দখল হয়েছে চিত্রা নদী। সেখানে মাত্র ৮টি পুকুর তালিকায় এসেছে। এতে মূল দখলদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

এই তালিকার বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাজিয়া আক্তার চৌধুরী জানান, তিনি অল্পদিন এই জেলাতে যোগদান করেছেন। যে কারণে তালিকা নিয়ে বিস্তারিত কিছুই তার জানা নেই। তালিকা একটা হয়েছে এটাই শুধু জানেন। আর ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার ভূমি অফিসের তথ্য নিয়ে এই তালিকা করেছেন।

Post Top Ad

Responsive Ads Here