গার্মেন্ট মালিকরা সৎ থাকলে কোনো সংকট হবে না - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, মে ১২, ২০২০

গার্মেন্ট মালিকরা সৎ থাকলে কোনো সংকট হবে না


গার্মেন্ট কারখানার মালিকরা সৎ থাকলে এই শিল্পে কোনো ধরনের সংকট হবে না বলে মনে করেন দেশের অন্যতম রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এবি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা অনন্ত জলিল।


তিনি বলেছেন, অনেক গার্মেন্ট মালিক ও তাদের বউ, বাচ্চাদের বিদেশি পাসপোর্ট আছে। সেখানে তাদের গাড়ি-বাড়িও আছে। তাদের বাচ্চারাও বিদেশে পড়েন। বিদেশেই থাকেন। আমার এসব নেই। নিজের কারখানায় কোনো দিন শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি- দাবি করে গার্মেন্ট মালিকদের উদ্দেশ্যে বাংলা ছবির এই নায়ক বলেন, ‘আপনি সৎ থাকলে বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারবেন।’

দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পে সাফল্য দেখিয়ে দশবারের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা সিআইপি মর্যাদা পাওয়া শিল্পোদ্যোক্তা অনন্ত জলিল গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক-এজিআইর চেয়ারম্যান অনন্ত জলিলের কাছে প্রশ্ন ছিল- আপনি নিজেকে গার্মেন্ট শ্রমিকবান্ধব দাবি করছেন, অন্য মালিকরা কেন এটা করতে পারছেন না? জবাবে অনন্ত জলিল বলেন, ‘আমি ছোট থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে বড় হয়েছি। এক দিনে বিশাল ফ্যাক্টরি গড়ে তুলতে পারিনি। তিলে তিলে নিজের শ্রম, ঘাম ও মেধা দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আত্মার সম্পর্ক স্থাপন করে এই পর্যন্ত এসেছি। আজ পর্যন্ত আমার কারখানায় কোনো দিন শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। আমার কোনো দুর্বলতা থাকলে, সৎ সাহস নিয়ে কথা বলতে পারতাম না।’

দেশের শীর্ষ এই পোশাক পণ্য রপ্তানিকারক বলেন, কথা বলার সৎ সাহস লাগবে গার্মেন্ট মালিকদের। করোনাভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে বাংলাদেশের গার্মেন্ট মালিকদের এখন খুবই দুরবস্থা চলছে। একদিকে ২০১৩ সালের পর থেকে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বেড়েছে, অন্যদিকে গ্যাস, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য সেবার ফি বহুগুণে বেড়েছে। সব কিছুর খরচ বেড়েই চলছে। পোশাক ও বস্ত্র খাত মিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী এই খাত এখন করোনাভাইরাসের প্রভাবে হাবুডুবু খাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে আলোচিত এই চিত্রাভিনেতা বলেন, করোনাভাইরাসের করুণ পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আশার আলো দেখিয়েছেন। আমি জানি না এই প্রণোদনা না পেলে এই শিল্পের কী পরিস্থিতি হতো। তবে এটুকু বলতে পারি- শ্রমিকরা সব রাস্তায় নেমে আসত। তখন পরিস্থিতি কত ভয়াবহ হতো, তা কেউ বলতে পারবে না। এমন সংকটে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় অবস্থান আমাদের নতুন সাহস সঞ্চার করেছে। দিয়েছে শ্রমিকদের নিয়ে এই শিল্প এগিয়ে নেওয়ার প্রেরণা। মালিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে চির ঋণী।

পোশাকশিল্প নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে এবি গ্রুপের চেয়ারম্যান আক্ষেপ করে বলেন, শতভাগ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেই কারখানা পরিচালনা করছি। তিনি উল্লেখ করেন, একদল মানুষ পোশাক শিল্প মালিকদের বিরুদ্ধেই শুধু বাজে মন্তব্য করছেন। তারা ফেসবুক-ইউটিউব ও বিভিন্ন মাধ্যমে সক্রিয় থাকলেও, এই অসহায় কর্মচারীদের একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন না। আসলে কিছু কথা বলতে না পারলে মনে হয়, বুক ফেটে মারা যাব। যখন ফেসবুকে আমাদের নিয়ে উল্টাপাল্টা মন্তব্য পড়ি তখন মনে হয়- এরা কী বোঝে পোশাক শিল্প সম্পর্কে, কতটুকু জানে বা বোঝে? তারা অর্থনীতিতে কী অবদান রাখে? তিনি বলেন, আমার কোম্পানি চালাতে প্রতি মাসে প্রায় ১৭ কোটি টাকা খরচ হয়। ১৩ কোটি টাকা বেতন দিতে হয়। ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা গ্যাস বিল দিতে হয়। বিদ্যুৎ বিলও আসে প্রায় কোটি টাকা। কেউ বিশ্বাস করেন, আর নাই করেন- আমি আমার শ্রমিকদের প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। কারণ- এই শ্রমিকদের হাতেই এত বড় কারখানা চলছে। নিজের উদ্যোক্তা জীবনের গল্প বলতে গিয়ে অনন্ত জলিল আরও জানান, কেবলমাত্র ২০০ পোশাক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করা তাদের এই পারিবারিক শিল্প প্রতিষ্ঠানে এখন প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এখানেই শেষ নয়। তিনি বলেন, আমার স্বপ্ন আগামী ২০২১ সালে ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান করব। অনেকে ভাবেন গার্মেন্ট কারখানা চালানো সহজ। তাদের বলছি- একটি কোম্পানি চালানো এত সহজ নয়।


সময়/দেশ/জাতীয়

Post Top Ad

Responsive Ads Here