নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবেলায় সম্মুখ সারির যোদ্ধা চিকিৎসকদের জন্য আলাদা হাসপাতালের দাবি জানিয়েছে চিকিৎসকদের সংগঠন ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি রাইটস অ্যান্ড রেসপন্সিবিলিটি (এফডিএসআর)।
শনিবার ‘করোনা মহামারি মোকাবেলায় পরামর্শ ও কর্মক্ষেত্রে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান, দেশের ৪৬ হাজার চিকিৎসকদের সংগঠনটির উপদেষ্টা ডা. আব্দুর নূর তুষার।
ডা. শাহেদ ইমরানের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে আরও যুক্ত ছিলেন, এফডিএসআরের চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসানাৎ মিল্টন, মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুগ্ম-মহাসচিব ডা. রাহাত আনোয়ার চৌধুরী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. আব্দুর নূর তুষার বলেন, ‘পুলিশ নিজেদের হাসপাতালের বাইরে হাসপাতাল ভাড়া করেছে। বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য ডিজির কাছে চিঠি দেয়া হয়। বিভিন্ন পেশার জন্য হাসপাতাল ভাড়া করা হয়। রাষ্ট্র যখন বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ভাড়া করল, তখন ডাক্তারদের জন্য কেন একটা হাসপাতাল ভাড়া করা হলো না?’
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে কোনো চিকিৎসক মারা গেলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের পরিবারের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। মারা যাওয়ার পর প্রণোদনা না দিয়ে সে টাকায় চিকিৎসার দাবি জানিয়ে সংগঠনটির উপদেষ্টা বলেন, ‘মরে গেলে তো প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলা আছে। সেই প্রণোদনার টাকা দিয়ে ডাক্তারদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। তাহলে তো আর প্রণোদনার টাকা দিতে হয় না।‘
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ৪৬ জন চিকিৎসকের মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা এবং সারাদেশে সকল স্বাস্থ্যকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকল পেশার যারা শহিদ হয়েছে তাদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এফডিএসআরের চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসানাৎ মিল্টন।
এসময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অসংগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক মারা যাওয়ার পর সামান্যতম শোক বা কিছু করতে ডিজি অফিস ওকে আমরা দেখি না। সামান্য শোক জানানোর ভদ্রতা তারা দেখাতে পারেনি। তারা সব সময় ডাক্তারদের ভুল ধরতে মুখিয়ে থাকে। ডাক্তারদের নকল মাস্ক দেয়া হলো, সেটাকে তারা ভুল বলল। কিন্তু একজন ডাক্তার ভুল করলে সেটাকে তারা অনেক বড় করে দেখেন। যা অন্য কোনো মন্ত্রণালয় তার কর্মীদের সঙ্গে করেন না।‘
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. আব্দুর নূর তুষার বলেন, ‘মানহীন মাস্ক, পিপিই সরবরাহের জন্য অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে বেশি ডাক্তার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পিপিই পরা এবং খোলার নিয়মে ভুল করার কারণেও এমনটা ঘটেছে। অনেক রোগি কোভিড-১৯ গোপন করে ডাক্তারের কাছে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে অনেক ডাক্তার আক্রান্ত হচ্ছে। সার্জারির সময় অনেক ডাক্তার অপারেশন থিয়েটার থেকে আক্রান্ত হচ্ছে। নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা মানসম্মত পিপিইর অভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন।‘
সংগঠনটির মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমাদের কিছু বক্তব্য সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করা দরকার। তাই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। চিকিৎসকদের মনবলের উপর আঘাত করা হয়েছে। খুলনায় একজন চিকিৎসককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন করোনা মোকাবেলার পাশাপাশি চিকিৎসকদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ন হয়ে পড়েছে।‘
x