সময় সংবাদ ডেস্ক//
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর উপর ৯০ বছর আগে নির্মিত সেতু, যা কালুরঘাট সেতু নামে পরিচিত। বয়সের ভার আর বিপুল যানবাহনের চাপে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া এই একমুখী রেলসেতুটি আবারও সংস্কার কাজের জন্য ১০ দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রামের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাদেকুর রহমান জানান, সংস্কার কাজের জন্য আগামী ২৩ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত সেতুটিতে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। ইতোমধ্যে কালুরঘাট সেতুর মেরামতের জন্য টেন্ডার হয়েছে।
দীর্ঘসময় ধরে দক্ষিণ চট্টগ্রামের একাংশের জনগণের বহুমুখী দুর্ভোগের নাম কালুরঘাট সেতু। বোয়ালখালী-পটিয়া উপজেলাসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের প্রধান দাবি একটি রেল ও সড়কপথসহ বহুমুখী সেতু, যা গত প্রায় ৩০ বছর ধরে প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মূল প্রতিশ্রুতি হয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি থেকে গেছে প্রতিশ্রুতির জায়গায়, সেটার বাস্তব প্রতিফলন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী দেখেনি গত ৩০ বছরেও।
মেয়াদোত্তীর্ণ ও শত বছরের পুরনো এই রেল সেতুর ওপর দিয়ে ঝুঁকি ও ভোগান্তি মাথায় নিয়ে দিনে প্রায় ১ লাখ লোক চলাচল করছে। বোয়ালখালী ও পটিয়ার প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই সেতুর ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। এছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন রুটের গাড়িও এই সেতু দিয়ে বিভিন্ন সময় চলাচল করে। সেতুর পূর্ব পাড়ে বোয়ালখালী অংশে প্রায় ৫০টি কলকারখানা রয়েছে। সেতু নড়বড়ে হওয়ায় এসব কারখানা পণ্য পরিবহন করতে পারে না।
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বার্মা ফ্রন্টের সৈন্য পরিচালনা করার জন্য কর্ণফুলী নদীতে ব্রিজ নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৩০ সালে ব্রুনিক অ্যান্ড কোম্পানি ব্রিজ বিল্ডার্স নামে একটি সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান এটি নির্মাণ করে। মূলত ট্রেন চলাচলের জন্য ৭০০ গজ লম্বা সেতুটি ১৯৩০ সালের ৪ জুন উদ্বোধন করা হয়। পরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পুনরায় বার্মা ফ্রন্টের যুদ্ধে মোটরযান চলাচলের জন্য ডেক বসানো হয়। দেশ বিভাগের পর ডেক তুলে ফেলা হয়।
১৯৫৮ সালে সব রকম যানবাহন চলাচলের যোগ্য করে সেতুটির বর্তমান রূপ দেয়া হয়। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ব্রিজটির রয়েছে ২টি এব্যাটমেট, ৬টি ব্রিক পিলার, ১২টি স্টিল পিলার ও ১৯টি স্প্যান। জরাজীর্ণ সেতুটির বয়স এখন ৯০ বছর।