বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, জুলাই ০৩, ২০২০

বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অনশন

সময় সংবাদ ডেস্কত//
দু’জনের বাড়ি একই ইউনিয়নে। বাড়িতে যাওয়া-আসার সুবাধেই প্রেমিকার সাথে পরিচয় হয় প্রেমিকের। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিক কথা দিয়েছিলেন প্রেমিকাকে বিয়ে করে ঘরে তুলবেন। প্রেমিকের আশ্বাস পেয়ে প্রেমিকা তার সাথে শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেষ কথা রাখেননি প্রেমিক।

উল্টো এখন শারীরিক সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে প্রেমিকা ও তার বাবাকে হুমকি দিচ্ছেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপড়ে লেগেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেন। টানা ১৯ ঘণ্টা অনশন করে প্রেমিকের বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রেমিকা। অনশনকালে প্রেমিকের পরিবার তাকে নির্যাতন করেছে বলেও অভিযোগ ওঠেছে। 

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মুর্শিবাদকুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গত বুধবার বিকেল ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পর্যন্ত প্রেমিকের বাড়িতে টানা ১৯ ঘণ্টা অনশন করে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রেমিকা নাজমিন বেগম (১৮)। 

পরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশ তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রেমিকা নাজমিন বেগম প্রেমিক কালন মিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের মুর্শিবাদকুরা গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে কালন মিয়া প্রায়ই পাশের খুটাউরা গ্রামের তাজ উদ্দিনের বাড়িতে যাওয়া-আসা করতেন। সেই সুবাধেই তাজ উদ্দিনের মেয়ে নাজমিন বেগমের সঙ্গে প্রায় ৬-৭ মাস পূর্বে তার পরিচয় হয়। এরপর থেকে কালন মিয়া নাজমিনের বাবার মুঠোফোনে কল দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ৩১ মার্চ নাজমিনের বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না। এই সুযোগে রাতে কালন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জোরপূর্বক নাজমিনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এরপর থেকে মেয়েটি বিয়ের জন্য কালনকে চাপ দিলে সে নানা টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায়ে সে নাজমিনকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয়। 

পরে নাজমিন বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানালে তারা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজনদের জানান। এরপর তারা বিষয়টি নিষ্পত্তির আশ্বাস দেন। 

গত ১৫ মে দুই পরিবারের অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার লোকজন সালিস বৈঠকে বসেন। বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয়, প্রেমিক কালন তাকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ঘরে তুলে নেবেন। এরপর দু’দিন সময় চেয়ে নেন কালন মিয়া ও তার পরিবার। পরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ইন্ধনে কালন মিয়া ও তার পরিবার নানা টালবাহানা শুরু করে উল্টো নাজমিন ও তার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এই অবস্থায় ন্যায় বিচার চেয়ে গত ৮ জুন নাজমিন বেগম তালিমপুর ইউনিয়ন গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ জুন তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান দুইপক্ষের লোকজনকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালনের পরিবার না মানায় শেষ পর্যন্ত তা আর সমাধান হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে নাজমিন গতবুধবার বিকেলে ৩টায় প্রেমিক কালন মিয়ার বাড়িতে অবস্থান নেয়। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে হাসপাতালে গেলে নাজমিন বেগম বলেন, ‘কালনের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে আমার প্রেমের সর্ম্পক রয়েছে। সে আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। আমি বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় সে নানা টালবাহানা শুরু করেছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও পরে বিয়েতে রাজি হয়নি। শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টিও এখন অস্বীকার করছে। তাই আামি বাধ্য হয়ে তার (প্রেমিক) বাড়িতে অবস্থার করেছি। এখন তার আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে মারধর করছেন। তার বাড়ি থেকে বের করে দিতে চাইছেন। মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন। এখন যদি সে (প্রেমিক) আমাকে বিয়ে না করে তবে আমি তার বাড়িতেই আত্মহত্যা করবো।’ 

বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক বলেন, ঘটনাটি তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 



Post Top Ad

Responsive Ads Here