পানির নিচে দেড় হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

শিরোনাম

Monday, July 27, 2020

পানির নিচে দেড় হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সময় সংবাদ ডেস্ক//
চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে নবনির্মিত ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়

চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে নবনির্মিত ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়

জুন থেকে শুরু হওয়া বন্যায় এরইমধ্যে তলিয়ে গেছে দেশের প্রায় ৩১টি জেলা। এসব এলাকায় অনেক স্কুল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্কুল আবার বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। 

বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো। সারাদেশে দেড় হাজারেরও অধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ডুবে গেছে। এছাড়াও অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজও ডুবে গেছে। এসব প্রতিষ্ঠান এতোদিন করোনার কারণে বন্ধ ছিল, এখন বন্যার কারণে পুরোপুরি অকেজো হয়ে গেল।

ডুবে যাওয়া বিদ্যালয়ের ভেতরে পানি যাওয়ায় আসবাবপত্র, বই-খাতাসহ বিদ্যালয় পরিচালনার প্রয়োজনীয় অনেক কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে ৩৫ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। 

শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) একটি সূত্র বলছে, দেড় হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যার কারণে প্রত্যক্ষ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এছাড়াও অনেক বিদ্যালয় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যে বিদ্যালয়গুলো এখনো ডুবে যায়নি সেগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছে স্থানীয়রা। দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোই বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

শিক্ষা অধিদফতরের তথ্যমতে, টাঙ্গাইলে ৪৫টি, মানিকগঞ্জে ৩১টি, লালমনিরহাটে ৮৬টি, কুড়িগ্রামে ৭৯, গাইবান্ধায় ৬২টি, ফরিদপুরে ৪৭টি, নেত্রকোনায় ৭৯, ফেনীতে ৪৯টি, মাদারীপুরে ৭২টি, রাজবাড়ীতে ৪৮টি, শরীয়তপুরে ৪১টি, ঢাকায় ৫৫টি, নওগাঁয় ৬৬টি, সিলেটে ৭২টি, সুনামগঞ্জে ৪১টি ফেনীতে ৫৮টি, কক্সবাজারে ৬৭টি, নীলফামারীতে ৫৮, রংপুরে ৫২, বগুড়ায় ৫৫, জামালপুরে ১২৩, সিরাজগঞ্জে ৪৯টি, পাবনায় ৩২টি ও কিশোরগঞ্জে ৪৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয়েছে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এমনিতেও বিদ্যালয়গুলো নিরাশ্রয় হয়ে পড়েছিল। এরপর বানের পানিতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বন্যা কবলিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে ডিপিইয়ের মাঠ কর্মকর্তারা কাজ করছেন। তারা এখন ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব তৈরি করছেন। এজন্য ডিপিইতে একটি সেল গঠন করা হয়েছে।

এসব বিষয়ে ডিপিইর মহাপরিচালক ফসিউল্লাহ ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, বন্যায় চর এলাকা ও উত্তরবঙ্গের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে। কিছু বিদ্যালয় ভেঙে পড়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে দেড় হাজার প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে সেসব বিদ্যালয়ের তালিকা ও ক্ষতির বিবরণ এখনো পাওয়া যায়নি। 

ডিপিই’র একটি সূত্র বলছে, সারাদেশে যে পরিমাণ সরকারি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা সংস্কার করতে প্রায় ৩০ কোটির মতো টাকা লাগবে। গত বছরও বন্যার কারণে ২০ কোটির মতো টাকা ব্যয় হয়েছিল।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় ও কলেজের ক্ষতি নিরূপণ করতে কাজ করছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। এর মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, প্রতি বছরই বন্যায় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সারাদেশ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল-কলেজের তালিকা পেলে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।


No comments: