স্ত্রীর শরীরে ১২ বার গরম খুন্তির ছ্যাকা, চুল কেটে দিলো স্বামী-শাশুড়ি-ননদ - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২০

স্ত্রীর শরীরে ১২ বার গরম খুন্তির ছ্যাকা, চুল কেটে দিলো স্বামী-শাশুড়ি-ননদ


বড়গুনা প্রতিনিধি:

বরগুনার তালতলীতে যৌতুকের দুই লাখ টাকার জন্য স্ত্রী মার্জিয়ার শরীরে ১২ বার গরম খুন্তির ছ্যাকা ও মাথার চুল কেটে দিয়েছে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ। বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় মার্জিয়াকে।

অভিযুক্ত মানিক খান বরগুনা সদরের ধুপতি গ্রামের আনোয়ার খানের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৯ সালে তালতলী উপজেলার বড় আমখোলা গ্রামের আব্দুল খালেক খানের মেয়ে মার্জিয়াকে বিয়ে করেন মানিক। বিয়ের পর শ্বশুরের কাছ থেকে বাড়ি করার জন্য দুই লাখ টাকাও নেন। দুটি মেয়ে আছে মানিক-মার্জিয়া দম্পতির। তিন বছর আগে ঢাকায় আসেন মানিক খান। সেই থেকেই স্ত্রী মার্জিয়া ও দুই মেয়ের কোনো খোঁজনি তিনি। মার্জিয়াও মেয়েদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। বৃহস্পতিবার মানিক হঠাৎ শ্বশুরবাড়িতে হাজির হন। এরপর সেখান থেকে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। ওই রাতে মানিক ব্যবসার কথা বলে মার্জিয়াকে তার বাবার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা এনে দিতে বলেন। মার্জিয়া টাকা দিতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বেধরক মারধর শুরু করেন তিনি। এক পর্যায়ে স্বামী মানিক, ননদ জাকিয়া ও শাশুড়ি আলেয়া মিলে মার্জিয়ার শরীরের ১২টি স্থানে গরম খুন্তির ছ্যাকা দেয় এবং চুল কেটে দেয়। তার চিৎকারে প্রতিবেশী ও স্বজনরা ছুটে আসেন। শুক্রবার সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় মার্জিয়াকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতাল গিয়ে দেখা গেছে, গরম খুন্তির ছ্যাকায় মার্জিয়ার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘা হয়ে ফুলে গেছে। ব্যাথায় নড়াচড়া করতে পারছেন না তিনি। আঘাতের জায়গাগুলোতে কালচে দাগ হয়ে আছে।

প্রতিবেশী সূর্য বানু বলেন, রাতে মানিক খানের বাড়ি থেকে চিৎকার শুনে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি মার্জিয়াকে স্বামী, শাশুড়ি ও ননদ মিলে মারধর করছে। তারা মার্জিয়ার শরীরে গরম খুন্তির ছ্যাকা দিয়েছে। আমি যাওয়ার পর তারা মার্জিয়াকে ছেড়ে দেয়।

মার্জিয়ার বাবা আবদুল খালেক খান বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করছে মানিক। তিন বছর আমার মেয়ের কোনো খোঁজ নেয়নি সে। বৃহস্পতিবার হঠাৎ উদয় হয়ে আমার মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে নির্মম নির্যাতন করে। প্রতিবেশীরা ছুটে না এলে ওরা আমার মেয়েকে মেরেই ফেলতো। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

অভিযুক্ত মানিক খান বলেন, সামান্য ঝগড়াঝাটি হয়েছে। মারধর করিনি, গরম খুন্তির ছ্যাকাও দেইনি।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র বলেন, মার্জিয়ার শরীরের ১২টি স্থানে গরম ছ্যাকা লাগার মতো চিহ্ন রয়েছে। তার মাথায় পেছনের চুল কাটা।

তালতলী থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সময়/শান

Post Top Ad

Responsive Ads Here