নগরকান্দার নয় ইউপি নির্বাচনে চলছে জোর প্রচার প্রচারনা, সুষ্ঠ ভোট নিয়ে সংশয় - সময় সংবাদ | Popular Bangla News Portal

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

মঙ্গলবার, নভেম্বর ০২, ২০২১

নগরকান্দার নয় ইউপি নির্বাচনে চলছে জোর প্রচার প্রচারনা, সুষ্ঠ ভোট নিয়ে সংশয়

 


নিজস্ব প্রতিনিধি, ফরিদপুর :
আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ২য় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে বইছে নির্বাচনী উৎতাপ। সকাল থেকে মধ্যে রাত অবধি চলছে জোর প্রচার প্রচারনা। তবে নির্বাচনী প্রচারে থাকা অনেক প্রার্থীই সুষ্ঠ ভোট নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। এদিকে প্রার্থীদের সাথে সুষ্ঠ ভোট হওয়া নিয়ে মতবিনিময় করেছেন প্রশাসন।  


কাচাইল ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মোঃ মোস্তাক খানঁ জানান, এবারের নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন। তিনি বলেন সকাল থেকে মধ্যে রাত পর্যন্ত মাঠে রয়েছি। ভোটারদের সাথে দেখা সাক্ষাত করে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনছি। আশা করছি ভোটে বিজয়ী হলে এই সকল কাজ করে আমার ইউনিয়নকে একটি মডেল ইউনিয়নে পরিনত করতে পারবো। 


ফুলসুতি ইউনিয়নের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী আরিফ হোসেন বলেন, আমি দুইবার এই  ইউনিয়নে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি পরপর। এই দুইবারে অনেক কাজ করেছি। এর মধ্যে এই ইউনিয়নের মানুষকে টিপ কলে পানির ব্যবস্থাসহ মডেল একটি ইউনিয়নে পরিনত করেছি। আশা করছি এবার নির্বাচিত হতে পারলে কৃষির উপর জোর দেব। যাতে কৃষকরা তাদের কৃষি ফসলে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত করতে পারে। তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদি বলেও জানান এসময়। 


কোদালিয়া শহীদ নগরের স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতিকের মোঃ রফিকুজ্জামান অনু বলেন, আমরা একটি সুষ্ঠ ভোট চাই। আমি বর্তমান এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছি। নৌকার যিনি প্রার্থী রয়েছেন তার আচার আচরন মনে হচ্ছে তিনি ভোটের আগেই হয়ে গেছেন। এই কারনে ভয় হচ্ছে। আমরা আশা করবো প্রশাসনের কাছে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের। 


রামনগর ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতিকের কাইমদ্দিন মন্ডল বলেন, ইতিমধ্যে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন আমার পোষ্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেছে। এখন আমার কর্মিদেরকে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। তারা আমার জনপ্রিয়তাই ভয় পেয়ে এমনটি করছে। আমরা প্রশাসনের কাছে একটি সুষ্ঠ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি।  


তালমা ইউনিয়নের আওয়ামীলীেেগর বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল হোসেন বলেন, নৌকা প্রতিকের প্রার্থীর লোকজন এভাবে আধিপত্য চালালে আমরা নির্বাচন করবো কিভাবে? তারা (নৌকা) চাচ্ছে আমরা তাদের হামলার ভয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াই। কিন্তু ওদের আশা পূরণ হবে না। আমাকে ও আমার সমর্থকদের উপর যতই হামলা, মারধর করা হোক আমি জীবিত থাকতে নির্বাচন থেকে সরবো না। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমার বাবা দীর্ঘদিন এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। আমার মা বর্তমান চেয়ারম্যান হিসাবে রয়েছেন। আমার পরিবার আওয়ামী পরিবার। আমি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় প্রতিপক্ষের লোকজন আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। তারা আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর ও একাধিকবার হামলা করতেছে। আমার লোকজনকে পিটিয়ে আহত করেছে। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। 


তবে এঘটনায় নৌকা প্রতিকের প্রার্থী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তারাই আমাদের উপর হামলা করছে। 


এদিকে ২৭ অক্টোবর বুধবার প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার পর থেকে প্রার্থীদের পোষ্টার, ব্যানার ও ফেষ্টুনে ছেঁয়ে গেছে গ্রামগঞ্জ ও হাট-বাজার। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছাড়াও রয়েছে নয়টি ইউনিয়নের ৮টিতে রয়েছে এক বা একাধিক আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রার্থীদের প্রচারনার জন্য চলছে মাইকিং। চায়ের দোকানে চলছে ভোটারদের আড্ডা। চারিদিকে বইছে নির্বাচনী হাওয়া। প্রার্থীদের পদ চারনা এখন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। এরমধ্যে কোথাও কোথাও ঘটেছে হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা। মামলা, অভিযোগ ও জিডি হয়েছে বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে। 


এমন উৎতপ্ত পরিবেশে সোমবার বিকেলে নগরকান্দায় প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার তারা এসময় নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর ও নিরপেক্ষ হবে বলে সবাইকে আশ^স্ত করেছেন। তারা বলেন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা করা দরকার, তার সব ব্যবস্থাই গ্রহন করা হবে নগরকান্দায়।


উপজেলার নয়টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৪৫ জন প্রার্থী। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮১ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এবারের নির্বাচনে নয় ইউনিয়নে ১লাখ ৪৫ হাজার ২শত ৩২ জন ভোটার রয়েছে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছেন।


Post Top Ad

Responsive Ads Here