"বাস টার্মিনালে জমে উঠেছে আম বাজার | সময় সংবাদ"
ফয়সাল আহমেদ, রাজশাহী
এবারও রাজশাহীর বাস টার্মিনালে বসেছে মৌসুমী আমের বাজার। তবে উত্তরবঙ্গজুড়ে এবার আমের ফলন কম। প্রথমদিকে হাতে গোনা দুই-চারটি দোকান বসলেও শেষদিকে জমে উঠেছে বাস টার্মিনালের আমের বাজার।
ব্যবসায়ীরা জানান, এবার বেচাকেনা ভালো। গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। আমের ধরণভেদে আম্রপালি ৩০০০-৩২০০ টাকা, ফজলি ২২০০-২৬০০ টাকা, সুরমা ফজলি ১২০০-১৫০০ টাকা, ল্যাংড়া ৪৫০০- ৪৮০০ টাকা, বারি-চার ৩৮০০-৪০০০ টাকা, হাড়িভাঙ্গা ৩৫০০-৩৮০০ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন আটি জাতের আম মিলছে ১২০০-১৫০০ টাকায়।
শনিবার (২ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী বাস টার্মিনাল আম বাজারে দেখা গেছে, আম বেচাকেনায় ব্যস্ত ক্রেতা ও বিক্রেতারা। ফুটপাতের ধারে সারিবদ্ধ অস্থায়ী দোকান। আম ব্যবসায়ীর আশপাশেও সাজানো রয়েছে ক্যারেট। এ বাজারের অধিকাংশ আমের ক্রেতা ঢাকা-চট্টগ্রামের যাত্রী। তাই রাজশাহী ছাড়ার সময় প্রিয়জনদের জন্য নিয়ে যান আম। বাস, ট্রেন এবং কুরিয়ার সবকিছুরই রয়েছে সহজলভ্যতা। তাই এখানে বেচাকেনাও মন্দ হয় না।
৩৬ বছর ধরে বাস টার্মিনাল এলাকায় আমের ব্যবসা করছেন বাদশা। তিনি বলেন, প্রতিদিন এ বাজারে প্রায় ৫০-৮০ মণ আম বিক্রি হচ্ছে। তবে গত দুই বছরে আম ব্যবসায় লোকসান গুনতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। ফলে বর্তমানে দোকান রয়েছে মাত্র ১৫-২০টা। এবার করোনা ও লকডাউন কোনোটাই নেই, ব্যবসা ভালো। কিন্তু ঘাটতি রয়েছে আমের। চাহিদা থাকার পরও আম সরবরাহ করতে পারছি না।
আরেক ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান জন বলেন, গত বছর ৪ লাখ টাকায় বাগান নিয়েছিলাম দুটি। তাতে লোকসান প্রায় ২ লাখ টাকা। যেখানে ৫০০-৭০০ মণ আম বিক্রির কথা, সেখানে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০০ মণের মতো। এবার দাম ভালো পাওয়ায় বেচাকেনা ভালো।
পাবনা ঈশ্বরদীর বাসিন্দা মারুফা জাহান। রাজশাহী এসেছেন সেজো বোনের বাসায়। আজ রাতেই বাসে ঢাকায় যাবেন বড় বোনের কাছে। তাই সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন মিষ্টি রসালো আম্রপালি ও সুরমা ফজলি। তিনি বলেন, ১০ কেজি আম্রপালি ও ১০ কেজি ফজলি নিয়ে কিনেছি। এবার আমের দাম খুব বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা।
এক কুরিয়ার সার্ভিসের এজেন্ট রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল মোড় এবং ঢাকা বাস টার্মিনাল থেকে চারুকলার গেট পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত আম ব্যবসায়ী দোকান দেন। এবারে তা নেই। প্রতিদিন ভোরে ট্রাক থেকে টনকে টন আম নামে। এবার আম সংকট তবে ভালো দাম। তাই শেষ সময়ে রাজশাহীর বাস টার্মিনালে আমের ব্যবসা জমে উঠেছে।